আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গোপালের চিঠি লেখা



গোপাল লেখাপড়া বিশেষ কিছু জানত না। যদি বা লেখাপাড় কিছু জানত কিন্তু হাতের লেখা ছিল খুব খারাপ। কিন্তু রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ভাঁড় হিসাবে তার খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। পাড়া পড়শীরা তাই তাকে সমীহ করে চলত- কেউ কেউ বা বিভিন্ন প্রয়োজনে গোপালের সঙ্গে এসে দেখা করত পরামর্শ নিত, গোপালের বুদ্ধি নিয়ে প্রায় সকলে চলত । একদিন এক বুড়ি এসে বলল, গোপাল ভাই, আমার একখানা চিঠি লিখে দাও না।

আমার নছেলে পুরী থেকে দশক্রোশ দূরে নাগেশ্বরপুর গেছে। কোনও খবর পাচ্ছিনে বেশ কয়েকদিন হল। টাকা পয়সাও নাই যে কাউবে পাঠাব। বুড়ির কথা শুনে গোপাল বললে, আজ তো আমি চিঠি লিখতে পারব না ‍ঠাকমা। কেন ভাই, আজ কি যে, তুমি চিঠি লিখতে পারবে না।

অনেকদিন হয়ে গেছে আজ না লিখলেও নয়। আর তোমার দেখা সব সময়পাই না যে তোমাকে চিঠি লিখতে বলি। আজ দেখা পেয়েছি, একখানা চিঠি লিখে দাও না ভাই? আমি বুড়ো মানুষ কার কাছে যাব চিঠি লিখতে ভাই, তুমিই একমাত্র ভরসা। আমার যে পায়ে ব্যাথ্যা গো ঠাকমা। পায়ে ব্যথা তাতে কি হয়েছে? চিঠি লিখবে তো হাত দিয়ে? পায়ে কি তুমি চিঠি লিখবে নাকি।

তোমার কথা শুনলে হাসি পায়। তোমার মত এমন কথা কোথাও শুনিনি। গোপাল হেসে বলল, চিঠি তো লিখব হাত দিয়েই। কিন্তু আমার চিঠি অন্য কেউ যে পড়তে পারবে না। আমার লেকা চিঠি আমাকে নিজে গিয়ে পড়েদিয়ে আসতে হবে।

আমার যে এখন পায়ে ব্যথা। এখান থেকে পুরী আবার পুরী থেকে দশ ক্রোশ দূরে নাগেশ্বরপুরে চিঠিটা তো আমি পুড়ে দিয়ে আসতে পারব না। তুমি অন্য কাউকে দিয়ে চিঠিখানা এবারকার মতো লিখিয়ে নাও, ঠাকমা। আমার পা ভাল হলে চিঠি লিখে দেব এবং নিজে দিয়ে পড়ে আসব। বুড়ি মা এর পর আর কি বলবে।

বাধ্য হয়ে চিঠি না লিখিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হল গোপালের বাড়ি থেকে। -

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।