তোমার কথা ভাবলেই মাউন্ট ভিসুভিয়াস মনে পড়ে আমার,
মনে পড়ে, চাপা পড়া পম্পেই নগর আর হারকিউলানিয়াম শহরের কথা,
কানে ভাসে-ঘুমিয়ে থাকা জীবন্ত সমাধির গীতি,
ইচ্ছাতীর্ণ আর্তনাদ, থমকে যাওয়া পরাহত প্রাণের আঁকুতি!
অদম্য আকাংখা আর বিফল প্রতীক্ষার প্রতিফলিত আরশীতে
দৃশ্য সঙ্গীত হয়ে আছো তুমি, অশ্রুত মেলানকলিয়া,
বিলুপ্ত জনপদ থেকে জেগে-ওঠা এক ভাসমান চলৎচিত্র
ধ্বংসস্তুপ হতে কুড়িয়ে নেওয়া মূল্যবান মনি-মানিক্যগুলি
সাজিয়ে রাখি থরে থরে, তোমার জন্য রচি কাব্য পদাবলী।
বিপুল বিক্রম মাধ্যাকর্ষন শক্তিকে উপেক্ষা করে, ছুটে গেছো তুমি
দাড়িয়েছো আজ সপ্তর্যীমন্ডলের ক্রতু ঋষির পদপ্রান্তে
নক্ষত্রপুঞ্জের শতবর্ষীয় অলোক প্রান্তরে উড্ডীয়মান ধ্রুবতারা
তবুও হৃদপিন্ডের রক্ত-ধমনীর নীলাভ স্রোতে
নৈকট্য অপরিসীমে অবস্থিত আজও তোমার বিমূর্ত কায়া।
অগ্ন্যুৎপাতে সারনো নদীর মত পরিবর্তিত হয়েছিল আমার গতিপথ
সমুদ্রতট হতে অকস্মাৎউঠে গিয়েছিলাম অসীম উচ্চাকাশে
আকাশ কুসুম বুনেছিলাম স্বর্গের অবারিত উদ্যানে
কিন্তু আকাশে কি জন্মে পুস্পকলি?
পাথরে কি ফোটে ফুল!
তবুও পম্পেই শহরের গৃহমন্দিরের প্র্তিটি সর্প অলঙ্করণে
কিংবা ক্যাপুয়া হতে প্রাপ্ত শিলালিপিতে লেখা
দেবতা জুপিটারের প্রধান শক্তি, তুমি জুপিটার ভিসুভিয়াস,
তোমার কথা মনে পড়লেই চোখে ভাসে জলন্ত আগ্গেয়গিরি।
হাজার বছর ধরে আমি গড়েছি প্রাসাদ,
ভুমধ্যসাগরের বালুকাবেলায়, জোয়ার ভাঁটার সন্ধিস্থলে
আজলা পেতে নিতে চেয়েছি বৃষ্টির জল,
হিমালয়ের পদপ্রান্তে বসে থেকেছি অপেক্ষায়
তার সমস্ত বরফগুলি গলে যাবার আশায়,
তবুও নেভেনি লেলিহান অগ্নিশিখা চিরবহ্নিমান
জাজ্জ্বল্যমান চিত্তাকাশে দগ্ধ হয়েছে মেঘবলাকার দল।
নামেনি এক ফোটা অজর বর্ষন, আমার অবিরাম-
মেঘমল্লার সঙ্গীতের প্রাণভাঙ্গা পণ আকুল আবেদনে।
নিসঙ্গ একাকী কালাহারি মরুভূমির মত
একা বসে আজ আমি, তেপান্তরের মাঠে ।
নৈঃশব্দে বাজে অনন্ত নির্ঝর পাতাঝরা দিনের গান,
নিরাবতায় মুখরিত বরিষন, নীপবনে ডমরু মাদলের ধ্বনী
বাসন্তী কলহাস্যে গেয়ে যায় পিউকাহা কুহুতান
ঋতু বদলের নিঃশেষিত নিমেষ,স্পর্শে না আর আমার রুক্ষ শরীর।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।