যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের তালিকা থেকে কিউবার নাম বাদ না দেওয়ায় লাতিন আমেরিকান রাষ্ট্রটি গতকাল বৃহস্পতিবার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কিউবা বলছে, এ লজ্জার ঘটনাটির পেছনে ভূমিকা রেখেছে রাজনীতি, কোনো বাস্তব পরিস্থিতি নয়।
যুক্তরাষ্ট্র গতকাল আবারও ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদদাতা রাষ্ট্রের তালিকা’ প্রকাশ করেছে। রয়টার্স জানায়, কয়েক দশক ধরে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিউবাকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে চিহ্নিত করা যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রথায় পরিণত হয়েছে।
কিউবা এক বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ামিতে নির্বাসিত কিউবানদের দিয়ে প্ররোচিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তার নিজের স্বার্থ ও আমেরিকার জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরিচালিত হচ্ছে।
কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘(যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশিত তালিকার) উদ্দেশ্য হলো কিউবাবিরোধী এমন একটি গোষ্ঠীকে তুষ্ট করা, যা দিন দিন ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হচ্ছে। এ গোষ্ঠীটির কৌশল এখন সামর্থ্যহীন এবং তা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের প্রতিনিধিত্বও করে না। ’
যুক্তরাষ্ট্রের তালিকায় ইরান, সুদান ও সিরিয়ার নামও আছে। প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তালিকা প্রকাশ করে। ১৯৮২ সাল থেকে কিউবা এ তালিকার অন্তর্ভুক্ত।
এ তালিকায় নাম থাকার অর্থ হলো, কোনো একটি দেশের ওপর বিভিন্ন ধরনের অবরোধ কার্যকর হওয়া। এ ছাড়া দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ধরনের অর্থনৈতিক সহায়তা পায় না এবং দেশটির বাণিজ্যে নানা ধরনের বাধা তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা।
কিউবার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপে লাতিন আমেরিকান দেশটি অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ১৯৬২ সালে যুক্তরাষ্ট্রপন্থী সামরিক সরকারকে উত্খাত করে কিউবায় গণতান্ত্রিক সরকারের প্রবর্তন হয়। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র কিউবার ওপরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
যুক্তরাষ্ট্র চায় কিউবা তার সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির পথ ছেড়ে পুঁজিবাদী উদার অর্থনীতির পথে চলুক।
কিউবাকে সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পেছনে ইতিপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র যেসব কারণ দেখিয়েছিল, এখন সেগুলো কার্যত অপ্রাসঙ্গিক ও মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এবার বলেছে, ‘কিউবার সরকার কোনো আধাসামরিক বাহিনী বা সন্ত্রাসী দলকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি। ’ তার পরও কিউবাকে সন্ত্রাসী তালিকায় রাখার পেছনে কারণ হিসেবে ওয়াশিংটন বলেছে, কিউবা যুক্তরাষ্ট্রের অনেক পলাতক আসামিকে আশ্রয় দিয়েছে।
ওয়াশিংটনের এ অভিযোগকে মেনে নিয়ে কিউবা বলেছে, এসব আসামির কেউই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না।
বরং এসব আসামিকে ফেরত নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রই উদ্যোগ নিচ্ছে না।
ওয়াশিংটনের আইনজীবী ও কিউবা বিশেষজ্ঞ রবার্ট মিউজ বলেন, কিউবায় যুক্তরাষ্ট্রের আসামিরা পালিয়ে আছে, এমন অভিযোগে কিউবাকে সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি পুরোপুরি বেআইনি। মিউজ বলেন, ওই সব সন্ত্রাসী এখনো কিউবায় আছে, কারণ কিউবার সঙ্গে স্বাক্ষরিত ‘বন্দীবিনিময়’ চুক্তিকে বাস্তবায়ন করছে না যুক্তরাষ্ট্র। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।