আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুরনো স্মৃতি

রুম নং-১০৫ রুমের অবস্থা দেখে তো আমার চক্ষু চড়কগাছ ! এই রুমে থাকতে হবে আমাকে ? আঠারো ফিট বাই বারো ফিট এই রুমের সদস্য সংখ্যা আমি সহ মাত্র ৫৭ জন ! ইয়া মাবুদ ! এ কোন পরীক্ষায় ফেললে আমাকে । এই জন্য কি যুদ্ধ করে ছিলাম !(না মানে ভর্তি যুদ্ধ!!) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে যতটা খুশি হয়ে ছিলাম । এই রুমে থাকতে হবে চিন্তা করতেই সে আনন্দ আমার হাওয়ায় মিলিয়ে গেল । বাবা-মায়ের অতি আদরের এই আমি এর থেকে অনেক বড় রুমে থাকতাম বাসায় । কি আর করা, হলের এটাই নাকি রুলস সিটে উঠার আগে ‘গণ রুমে’ থাকতে হয় ।

দুপুরে খেতে গেলাম ক্যান্টিনে (BFC-বাবুল ফুড কর্ণার ! ) ক্যান্টিনের খাবারের অবস্থা দেখে চোখে পানি চলে এলো । হলের প্রথম রাত কাটলো নির্ঘুম । ৫৭ জনের শোয়ার জায়গা হয়না তাই শিফট করে ঘুমাতে হয় । আর কত রক্ত যে দিয়েছি ছারপোকাকে । ছারপোকার কামড় যে কি জিনিস যে একবার খেয়েছে সেই জানে ।

সে কি কষ্ট ! চোখে না দেখলে বিশ্বাস হয়না । আমার বিড়ম্বনা শুরু হল পরের দিন থেকে । গোসল করে এসে দেখি আমার আন্ডারওয়ার নাই ! কি বিপদ ! নতুন বন্ধুরা সান্তনা দিল এবং একেক জনের একেক মজার অভিজ্ঞতা বলল । আন্ডারওয়ার পেলাম তিন দিন পর । সব চেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পরেছি স্যান্ডেল নিয়ে ।

একেক জনের ১০-১২ জোড়া স্যান্ডেল হাওয়া হয়ে গেছে । সন্ধ্যা থেকে শুরু হতো গেস্ট রুম । কড়া নির্দেশ ছিল বড় ভাই দেখলে সালাম দিতে হবে । একদিন বড় ভাই ভেবে খোদার খাসি টাইপের এক বন্ধুকে সালাম দিয়ে ছিলাম ! সেটা নিয়ে এখনো মাঝে মাঝে হাসাহাসি হয় । গত দেড় বছরে অধিকাংশ বন্ধুরা শিফট হয়ে বিভিন্ন রুমে চলে গেছে ।

আমরা বারো জন এখন থাকি ১০৫ এ । প্রভোস্ট স্যার বলেছেন খুব দ্রুত আমাদেরও শিফট হবে । এতে আমার আনন্দিত হবার কথা কিন্ত ১০৫ কে এতো ভালবেসে ফেলেছি যে আর ১০৫ ছাড়তে ইচ্ছে করেনা । খুব মিস করবো ১০৫ কে । আমার অনেক আনন্দ ও বেদনার সাক্ষী এই ১০৫ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।