সাবধান! ডাবর মধুর বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্ত হবেন না। সুগার-ফ্রি বলা হলেও আসলে তা নয়। চটকদার আর বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হয়ে ডায়াবেটিক রোগীরা এই মধু সেবন করলে মহাবিপদে পড়বেন। অজান্তে এ মধু সেবন করলে এমনকি মৃত্যু ঝুঁকি বাড়বে বহুগুণ।
বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, ‘চিনির বদলে ডাবর মধু ব্যবহার শুরু করুন; এটি চিনির চেয়েও উপকারী।
পাশাপাশি এমন সব গুণে গুণান্বিত এ মধু, যা কিনা প্রাকৃতিক মধুতেও নেই!’
মধু সেবনকারীদের একটি বড় অংশই চিনির বিকল্প হিসেবে ডাবর মধুকে বেছে নেন। এমনকি অনেক ডায়াবেটিক রোগীও মনে করেন, চিনির বদলে ডাবর মধু খেলে তাদের স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হবে না। আর ডাবর বলছে, ডায়াবেটিক রোগী থেকে শুরু করে সবার জন্যই চিনির আদর্শ (কিংবা আদর্শের চেয়েও ভালো!) বিকল্প তাদের মধু।
বিজ্ঞাপনে প্রভাবিত হয়ে অনেক ডায়াবেটিস রোগী চায়ে চিনির বিকল্প হিসেবে মধু ব্যবহার করছেন, যা তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়।
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য চিনির চেয়ে ডাবর মধু কম ক্ষতিকর, একথা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি চিনির চেয়ে বেশি বাড়িয়ে দেয় ব্লাড সুগার। পাশাপাশি ডায়াবেটিক রোগীদের কিডনি ও রক্তে আরো জটিল সমস্যা তৈরি করতে পারে। সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের জন্যেও চিনির বিকল্প হিসেবে নিয়মিত মধু সেবন ক্ষতির কারণ হতে পারে। ফ্রুক্টোজ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকির পাশাপাশি সুগার বেড়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদির ঝুঁকিও রয়েছে।
ডাবর হানির প্রতি কেজিতে ৯১ দশমিক ৩ মাইক্রোগ্রাম অক্সিটেট্রাসাইক্লিন পাওয়া যায়, যা নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে নয়গুণ বেশি। আরো পাওয়া যায় অ্যামপ্লিসিন ও এনরোফ্লোক্সাসিন, যা খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ আবিষ্কারের পর ইউরোপের ২৭টি দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে ডাবর হানিসহ সব প্রক্রিয়াজাত ভারতীয় মধু রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
জানা গেছে, বাণিজ্যিকভাবে মৌমাছি পালনের সময় এটাকে রোগমুক্ত রাখার জন্য ও অধিক মধু পাওয়ার লোভে প্রভাবক হিসেবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে কোম্পানিগুলো। অথচ অ্যান্টিবায়োটিকের সামান্য রকমফের রক্তের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।
ক্ষতি করতে পারে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
মানুষের মধ্যে সচেতনতা না থাকার সুযোগ নিয়েছে ডাবর হানির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। উন্নত দেশগুলোয় নিষিদ্ধ হওয়ায় তুলনামূলক দরিদ্র দেশগুলোর জনগণের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে ও বিভ্রান্তিকর স্লোগান দিয়ে ব্যবসা প্রসারিত করছে।
যাচাই করুন খাঁটি না ভেজাল
ঘরে বসেই যাচাই করতে পারেন কোন মধু খাঁটি আর কোন মধু ভেজাল। খাঁটি মধু রেফ্রিজারেটরে রাখলে জমে না, ভেজাল মধু জমে যাবে কিংবা কালচে তলানি পড়বে।
পিঁপড়া খাঁটি মধু এড়িয়ে চলে, কিন্তু কৃত্রিম মধুর প্রতি আকৃষ্ট হয়। অথবা গ্লাসে পানি নিয়ে তাতে এক টেবিল চামচ মধু দিন। এরপর গ্লাসটি নাড়তে থাকুন। মধু পুরোপুরি মিশে গেলে তা ভেজাল মধু, আর ছোট ছোট কণা বা পিণ্ডের আকার ধারণ করলে তা খাঁটি মধু।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।