মেক্সিকোর নেইকা অঞ্চলটি খনিজ সম্পদের জন্য বিখ্যাত। এখানে মাটির নিচের রুপা, জিংক, সিসা প্রভৃতির অফুরন্ত ভাণ্ডার রয়েছে। নেইকা এলাকার এমনই একটি খনির সম্পদ আহরণের সময় ১৯১০ সালে ভূপৃষ্ঠের ১২০ মিটার নিচে প্রায় এক মিটার লম্বা একটি ক্রিস্টাল শ্রমিকের নজরে আসে। প্রায় ৯০ বছর পর অর্থাৎ ২০০০ সালে একই খনিতে কাজ করার সময় মাটির প্রায় ৩০০ মিটার নিচে ঘোড়ার খুর বা ইংরেজি ইউ অক্ষরের মতো একটি গুহার সন্ধান পান। আর এই গুহার বৈশিষ্ট্য হলো- নানা আকৃতির ক্রিস্টালের সমারোহ।
এই গুহায় প্রাপ্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক ক্রিস্টালটির দৈর্ঘ্য ১২ মিটার, ব্যাস (ডায়ামিটার) চার মিটার এবং ওজন ৫৫ টন। গুহার ভেতরটি অত্যন্ত গরম যেখানে তাপমাত্রা ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছে। সাধারণত গুহার ভেতরে গরমের জন্য ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করা যায় না। গবেষকদের মতে, গুহার মধ্যে আটকে পড়া পানি প্রায় পাঁচ লাখ বছর গড়ে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আবদ্ধ থাকার কারণে স্বচ্ছ প্রাকৃতিক ক্রিস্টালে পরিণত হয়। খনির সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় প্রতিনিয়ত গুহার পানি খনির পানির সঙ্গে নিষ্কাশন করা হয়।
অন্যথায় গুহাটি হয়তো পানিতে তলিয়ে যেত। ২০০৬ সালে ইতালির বলগনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সক্ষম এক ধরনের বিশেষ পোশাক পরে খনিতে গবেষণা চালান। এ সময় দেখা যায়, গুহার নিচের অংশে রয়েছে বিশাল বিশাল ক্রিস্টালের ব্লক। এ ছাড়াও একটি দালানে যেমন নিচ থেকে ছাদ পর্যন্ত কংক্রিটের স্তম্ভ থাকে, তেমনি ক্রিস্টাল গুহায়ও নিচের ব্লক থেকে গুহার ছাদ পর্যন্ত ক্রিস্টালের স্তম্ভ দেখা যায়, যা গুহাটিকে দিয়েছে স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। গবেষকদের মতে, গুহার আরও কিছু চেম্বার এখনো অনাবিষ্কৃত অবস্থায় রয়েছে, তবে তা আবিষ্কার করতে হলে গুহার বিদ্যমান ক্রিস্টালের অনেকটা অংশ ভাঙতে হবে।
এর পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক রয়েছে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, হয়তো একদিন গুহাটি আবারও পানিতে ভরে যাবে। কিন্তু তারপর কী হবে- কেউ জানে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।