আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্ত্রীকে জবাইয়ের পর স্বামীর আত্মহত্যা

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে জবাই করে নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক স্কুটার চালক। বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ এলাকায় এ ঘটণা ঘটে।

নিহতরা হলেন কাওরাইদ ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর গ্রামের কৃষক আবদুল মজিদের ছেলে স্কুটার চালক আক্তার হোসেন (৩২) ও তার স্ত্রী মাবিয়া আক্তার (২৮)। মর্মান্তিক এ ঘটনায় পুরো এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। বিকেলে পুলিশ নিহত দম্পতির লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আক্তার হোসেন রাজধানী ঢাকার মীরপুরে স্কুটার চালাতেন। ঢাকায় থাকাকালে তাঁর সঙ্গে পরিচয় ঘটে ক্যাণ্টনমেণ্ট মাটিকাটা এলাকার মৃত আবদুল খালেকের কন্যা মাবিয়া আক্তারের। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘ চার বছরের প্রেমের একপর্যায়ে ১৯৯৭ সালে তারা বিয়ে করেন। তাদের ঘর আলো করে দুইটি সন্তানও জন্ম নেয়।

কিন্তু হঠাৎ পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রী মাবিয়া আক্তারকে (২৮) জবাই করে হত্যার পর আক্তার হোসেন (৩২) নিজেও ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

নিহত আক্তার হোসেনের বাবা আবদুল মজিদ জানান, বিয়ের পর প্রায় আট-নয় বছর সংসার সুখেই ছিল। তাঁদের সুখের ঘর আলো করে জন্ম নেয় মিঠুন ও আঁখি নামে দুই সন্তান। গত প্রায় সাত বছর ধরে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। তুচ্ছ কারণে তাঁদের মধ্যে কলহ হতো।

গত বুধবার আক্তার হোসেন গভীর রাতে বাড়ি ফেরায় মাবিয়া দরজা খুলতে দেরি করে। দেরি করে দরজা খোলায় রাতে তাঁদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়েছে।

নিহত আক্তার হোসেনের বড় ভাই আক্কাস আলী জানান, আক্তারের ছেলে মিঠুন (১৪) ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জালোবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র  ও আঁখি আক্তার (৮) জাহাঙ্গীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। সকাল ৮টার দিকে মা-বাবার সঙ্গে নাস্তা করে তারা বিদ্যালয়ে যায়। বেলা এগারোটার দিকে আঁখি বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ দেখতে পায়।

দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পরও ভেতর থেকে কোন সাড়া না পাওয়ায় ঘরের পেছনে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে তার বাবার ঝুলন্ত লাশ দেখে সে চিৎকার দেয়। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে মাবিয়া আক্তারের গলাকাটা ও আক্তার হোসেনের আড়কাঠে ফাঁসিতে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহত আক্তার হোসেনের এক ভাবি (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানায়, জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের রমিজ উদ্দিনের ছেলে কিণ্টারগার্টেনের শিক্ষক তাইজুল ইসলামের সঙ্গে মাবিয়া আক্তারের দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া চলছিল। আর এ বিষয়টি আক্তার হোসেন জানার পর থেকে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মর্মানিত্মক এ ঘটনায় হত্যা ও অপমৃত্যুর পৃথক মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। একই সঙ্গে পরকীয়া প্রেমিক তাইজুল ইসলামকেও গ্রপ্তোরের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন, গতকাল সকালে ছেলে-মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়ার পর তাঁদের মধ্যে ফের ঝগড়া হয়েছে। ঝগড়ার একপর্যায়ে আক্তার হোসেন দা দিয়ে মাবিয়াকে জবাই করে হত্যা করে। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আড়কাঠে ফাঁস নেয় আক্তার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.