বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...
ভারতের চার প্রদেশে রাজ্যসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ধরাসাই। দিল্লী, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ় চার প্রদেশেই বিজেপি এগিয়ে। কিন্তু সেমি ফাইনালের এই ভোটের খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেন নবাগত অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লী'র মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে প্রায় ২৬ হাজার ভোটে হারিয়ে রাজনীতির ময়দানে অজ্ঞাতকুলশীল অরবিন্দ কেজরিওয়াল-ই সেরা খেলোয়ার। দিল্লী'র ৭০ আসনের রাজ্যসভায় বিজেপি পেয়েছে ৩২টি আসন, নবাগত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নের্তৃত্বাধীন আম আদমি পার্টি পেয়েছে ২৮টি আসন, কংগ্রেস পেয়েছে ৮টি আসন এবং অন্যরা পেয়েছে ২টি আসন।
মধ্যপ্রদেশে ২৩০ আসনের রাজ্যসভায় বিজেপি পেয়েছে ১৬৫টি, কংগ্রেস ৫৮ ও অন্যান্য ৭টি আসন। রাজস্থানের ১৯৯ আসনের রাজ্যসভায় বিজেপি পেয়েছে ১৬২ আসন, কংগ্রেস ২১টি ও অন্যান্যরা ১৬টি আসন। আর ছত্তীসগঢ়ের ৯০ আসনের রাজ্যসভায় বিজেপি পেয়েছে ৪৯টি, কংগ্রেস ৩৯ ও অন্যরা ২টি আসন।
দিল্লীতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্না হাজারি অনশন করেছিলেন। তখন গোটা বিশ্ব সেই চিত্র দেখেছিল।
আন্না হাজারি'র সেই অনশন ছিল একটি নাগরিক উদ্যোগ। কিন্তু তিনি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চাননি। সেই স্পিরিটকে সামনে নিয়ে তরুন ইনকাম ট্যাক্স অফিসার অরবিন্দ কেজরিওয়াল গঠন করলেন আম আদমি পার্টি। প্রতীক হিসেবে বেছে নিলেন ঝাড়ু। সেই ঝাড়ু প্রতীক নিয়ে তিনি কংগ্রেসে ২০০৮ সালের ৪৫ আসনকে টেনে নামালেন।
কংগ্রেস এবার পেল মাত্র ৮টি আসন। খোদ দিল্লী'র মুখ্যমন্ত্রী শিলা দিক্ষীতকে হারিয়ে বাজিমাত করলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কংগ্রেসের এই ফলাফলকে কটাক্ষ করে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী টুইট করেছেন, ‘বিজেপি একটা রাজ্যে যত আসন পেয়েছে, কংগ্রেস চারটি রাজ্য মিলে তত পায়নি!’আর আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে যাঁকে নরেন্দ্র মোদীর প্রতিপক্ষ বলে মনে করা হচ্ছে, সেই রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করে অরুণ জেটলির মন্তব্য করেছেন, 'এই ভোটের পরে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, নরেন্দ্র মোদী আর রাহুল গান্ধী'র কোনও তুলনাই হয় না। ' নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে একদিকে বিজেপি চাঙ্গা হয়েছে। আরেক দিকে কংগ্রেসের ভোট ব্যাংকে হামলা করেছে নবাগত আম আদমি পার্টি।
তাই কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী হারের দায় মাথায় নিয়ে বলেছেন, 'আমরা আম আদমি পার্টির কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছি। তারা যে ভাবে আনকোরা লোককে প্রার্থী করেছে, ভবিষ্যতে আমরাও তা-ই করতে চাই। '
দিল্লীতে না হয় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির উত্থানে কংগ্রেস বিজেপি'র কাছে ধরাসাই হল। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে? মধ্যপ্রদেশে সারা বছর খোদ কংগ্রেসের দুই নেতা দিগ্বিজয় সিংহ আর জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া'র মধ্যে চলেছে টানাপোড়েন। ভোটের পনেরো দিন আগে অবশ্য কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের নির্দেশে দু'জনে উপরে উপরে একটা ঐক্য দেখিয়েছেন।
কিন্তু তত দিনে ভিতরে ভিতরে ক্ষয়ে গেছে দলের ভিত। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রদেশে পরপর তিন বার সরকার গড়ার কৃতিত্ব অর্জন করলেন শিবরাজ সিংহ চৌহান। গত বারের তুলনায় এবার বিজেপি ২২টি আসন বাড়িয়েছে।
আর রাজস্থানে কংগ্রেসের দলীয় কোন্দল ছিল চরম পর্যায়ে। অশোক গহলৌতের পাঁচ বছরের শাসনের পরে কংগ্রেসের আসন ৯৫ থেকে কমে এবার হয়েছে মাত্র ২১।
আর বিজেপি এক লাফে ৮৪টি আসন থেকে পৌঁছে গেছে ১৬২-তে। কংগ্রেস নেতা জনার্দন দ্বিবেদীর আক্ষেপ করে বলেছেন, '২০০৮-এর ভোটের পর থেকেই শুনে আসছি পরের বার রাজস্থানে আমরা ৫০টার বেশি আসন পাব না। তাহলে এই পাঁচ বছরে সেই বিপর্যয় সামাল দেওয়ার জন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন!'
আর শিবরাত্রির সলতের মতো কংগ্রেসের আশা কেবল জেগেছিল ছত্তীসগঢ় নিয়ে। দিনভর সেখানে যেনো ঢেঁ-কুচকুচ খেলা! কখনও কংগ্রেস দু’টো আসনে এগিয়ে যাচ্ছে, তো খানিক পরেই তাদের পিছনে ফেলে দিচ্ছে বিজেপি। দিনের শেষে কংগ্রেসের হতাশার ঘড়া পূর্ণ করে শেষ হাসিটা রমন সিংহই হেসেছেন।
গত বারের তুলনায় একটা আসন কম জিতে বিজেপি-র আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯। আর কংগ্রেস পেয়েছে ৩৯টি আসন। চার প্রদেশে খেলার ফলাফল বিজেপি ৪ কংগ্রেস ০। আর এই ফলাফলের ম্যান অব দ্য ম্যাচ আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল কংগ্রেস-বিজেপিকে সতর্ক করে বলেছেন, 'দুর্নীতি যে মানুষ আর সহ্য করবে না, সেটা দুই দলের নেতাদেরই বোঝা দরকার। তা না হলে ক্রমশ অন্যত্রও তারা মুছে যাবে।
'
ভারতের রাজ্যসভার এই ভোটে কংগ্রেসের এমন হারের আসল কারণ কি দুর্নীতি? অনেকে বলছেন এটা কংগ্রেসের নেতাদের সীমাহীন দুর্নীতির একটা ফল। আন্না হাজারি সবাইকে সেটা মনে করিয়ে দিয়েছেন দুর্নীতি'র বিরুদ্ধে অনশন করে। কেউ বলছেন কংগ্রেসের পঙ্গু প্রশাসনের কারণেই এই ফল। কেউ বলছেন, সোনিয়া গান্ধী ভারতে যে জনমোহিনী অর্থনীতির মডেল খাড়া করেছেন তাতে শুধু ভারতের কাহিনীই দুর্বল হয়নি, বরং একই সঙ্গে দুর্বল হয়ে পড়েছে কংগ্রেসও। দেশের যে কয়টি রাজ্য সোনিয়ার গান্ধী তাঁর প্রিয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প চালু করেছিলেন, দিল্লি ছিল তাদের অন্যতম।
গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি ভর্তুকি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও সবার আগে চালু হয়েছিল এই রাজ্যে। খাদ্যশস্য থেকে মাগনা ওষুধ দেওয়া পর্যন্ত রাজস্থানে সামাজিক সুরক্ষা খাতে জলের মতো টাকা খরচ করেছেন অশোক গহলৌতের সরকার। তার পরেও কেন এই বিপর্যয়? খোদ সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, 'রাজস্থানে এত জনকল্যাণ কর্মসূচি সত্ত্বেও কেন হার হল ভেবে দেখতে হবে। ' কংগ্রেসের একাংশের ব্যাখ্যা অবশ্য এরকম, এই ফলের মধ্যে দিয়ে জনগণ বুঝিয়ে দিলেন, তাঁরা খয়রাতি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে রাজি নন। বাঁচতে চান সম্মান নিয়ে।
ওদিকে কংগ্রেস মহলের এই মনোভাব উস্কে দিতে শরিক নেতা ওমর আবদুল্লাহ টুইট করেছেন, 'শেষ মুহূর্তে জনমোহিনী প্রকল্পের ঘুষ দিয়ে ভোটে জেতা যায় না। '
কিন্তু শুধু কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুললে বিজেপিকে কি ছাড় দেওয়া যায়? দান-খয়রাতিতে বিজেপি-শাসিত দুই রাজ্য মোটেই কম যায়নি। মধ্যপ্রদেশে ১ টাকা কেজি দরে গম বিলিয়েছেন শিবরাজ। তাহলে তাদের ভাল ফলের কারণ কী? সেটা কি নরেন্দ্র মোদীর প্রভাব? অরুণ জেটলির দাবি, 'মোদী ম্যাজিক অবশ্যই কাজ করেছে। গত সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী হিসেবে মোদীর নাম ঘোষণা করার পর থেকেই দলীয় কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনার জোয়ার এসেছে।
সেই উদ্দীপনাই এই জয় আনল। ' কিন্তু সেই যুক্তি আবার মানছেন না অনেকেই। চার রাজ্যের ফলাফলের সার্বিক ছবিটা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট না-হলেও তাঁদের মতে জনগণের মানসিকতা যতোটা না বিজেপি-পন্থী, তার থেকে অনেক বেশি কংগ্রেস-বিরোধী বলেই ভোটের এই ফল। শেষ পর্যন্ত ভোট কার বাক্সে গেল সেটা মূলত নির্ভর করেছে দু’টি বিষয়ের উপরে। প্রথমত স্থানীয় নেতৃত্বের শক্তি।
দ্বিতীয়ত বিকল্পের উপস্থিতি। কংগ্রেসের ক্ষেত্রে প্রায় সর্বত্রই স্থানীয় নেতৃত্ব ছিল তুলনামূলকভাবে দুর্বল। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে বিজেপি এই দুর্বলতার কড়ায়গণ্ডায় সুযোগ নিয়েছে। সেই সঙ্গে বিকল্পের অভাবও সুবিধা করে দিয়েছে বিজেপিকে। কিন্তু দিল্লিতে আম আদমি পার্টি সামনে থাকায় বিজেপি ততোটা ভাল ফল করতে পারেনি।
এই বিশ্লেষণের সূত্র ধরে রাজনৈতিক ভাস্যকাররা বলছেন, আগামী লোকসভা ভোটে হিন্দি বলয়ে বিজেপি-র যাত্রা হয়তো মোটেও মসৃণ হবে না। কিন্তু বিজেপি নেতারা সেই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের মতে, প্রথমত আগামী কয়েক মাসে কংগ্রেসের অবস্থা আরও খারাপ হবে। দ্বিতীয়ত, অন্যত্র দল বিস্তারের চেষ্টা করব বললেও দিল্লির বাইরে আম আদমি পার্টি কোনও প্রভাবই ফেলতে পারবে না। আর এই অঙ্ক থেকেই নরেন্দ্র মোদীর দিল্লিযাত্রা ক্রমশ নিষ্কণ্টক হচ্ছে বলেই তাঁদের দাবি।
ওদিকে নরেন্দ্র মোদীর যাত্রাভঙ্গ করতে এই হারের দিন থেকেই উঠেপড়ে লাগার অঙ্গীকার করেছে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধী বলেছেন, 'এবার আমরা যুবসমাজকে এমন ভাবে কাজে লাগাব যে আপনারা চিন্তাই করতে পারবেন না। ' আর স্বয়ং সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, 'এবার কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। ' আসল কথা হল, সেমিফাইনালে হেরে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, আর ছায়াযুদ্ধ নয়, ফাইনালে বাঁচতে গেলে মোদীর সঙ্গে লড়তে হবে সামনাসামনি।
ভারতের রাজ্যসভা নির্বাচনের এই ফলাফল থেকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে নির্বাচনী এই হাওয়া কতোটা ঘুরবে? ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কি আগামী দশম সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেসের মত গো হারা হারবে? অবশ্য তার আগে বিএনপিকে ভোটযুদ্ধে নামতে হবে।
নামতে হবে শক্ত করে আটগাঁট বেঁধে। সিটি করপোরেশানের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিএনপি'র প্রার্থীদের কাছে গো হারা হেরেছিল। যদি বাংলাদেশের চারটি সিটি করপোরেশানের নির্বাচনের সঙ্গে ভারতের চারটি রাজ্যসভার নির্বাচনী ফলাফল তুলনা করা হয়, দেখা যাবে বাংলাদেশে যেমন আওয়ামী লীগের ভরাডুবি ঘটেছে সিটি করপোরেশানে তেমনি ভারতে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের ভরাডুবি ঘটেছে। আওয়ামী লীগ আর কংগ্রেস উভয় দেশেই ক্ষমতাশীন দল। উভয় দলেরই সেমি ফাইনালের ভোটযুদ্ধে পরাজয় ঘটেছে।
আবার বাংলাদেশে যেমন হেফাজতে ইসলামের মত একটি নবাগত রাজনৈতিক শক্তি সেই ভোটযুদ্ধে বিরাট ভূমিকা পালন করেছে, তেমনি ভারতে আম আদমি পার্টি একই ধরনের ভূমিকা পালন করেছে। উভয় দেশেই এই দুটি গোষ্ঠী নবাগত। ভারতে বিজেপি চরম ধর্মীয় উগ্রবাদী রাজনৈতিক দল হলেও রাজ্যসভার ভোটে কংগ্রেসকে তারা হারিয়েছে এবং চারটি প্রদেশেই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিজেপি। এদিকে বাংলাদেশে বিএনপি'র ধর্মীয় উগ্রবাদী জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের মত দলগুলো রাজনৈতিক মিত্র হওয়ায়, ভোটের সুরসুরিটা সেদিকে যাবার নানান ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।
ভারতে সোনিয়া গান্ধী'র কংগ্রেস জনমোহিনী অর্থনীতির যে মডেল খাড়া করেছেন তেমনি বাংলাদেশে একই ধারায় শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ মডেল খাড়া করেছেন।
কিন্তু উভয় মডেল কতোটা সাধারণ মানুষের উপকার করতে পেরেছে তা ভোটের ফলাফলে কিছুটা পূর্বাভাষ দিচ্ছে। উভয় দেশে সাধারণ মানুষ খয়রাতি সাহায্যের চেয়ে সম্মানকে বেশি মূল্যায়ন করেছে। যদি আগামী দশম সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহন করে তাহলে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের উদ্বিগ্ন হবার মত অনেক জটিল সমীকরণ এখন আরো সামনে আসছে। ক্ষমতাশীন দল কতোটা দুর্নীতি করলো আর কতোটা উন্নয়ন করলো সেই তুলনামূলক চিত্র যতোই সবার সামনে বিল বোর্ড আকারে ঝুলিয়ে রাখা হোক, মানুষ যে পরিবর্তনের নেশায় ছোটে আর ভোটের ফলাফলে যে তার সুস্পষ্ট ছাপ পড়বে এটাই আসল কথা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, আমাদের রাজনীতিবিদরা সাধারণ মানুষের সেই মনের কথাটি পড়তে পারেন না।
যে কারণে বিএনপিকে যে কোনো মূল্যে নির্বাচনী যুদ্ধে বাইরে রেখেই আওয়ামী লীগ তরিঘরি করে নির্বাচনটা শেষ করতে চাইছে। বিএনপি'র উচিত হবে লেভেল প্লেয়িং মাঠের ভরসা না করে সাধারণ মানুষের আস্থাকে পুঁজি করে সহিংস আন্দোলনের পথ পরিহার করে দশম সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহন করা। তাতে সেই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং শেখ হাসিনা থাকলে বরং তাদের নির্বাচনী মাঠে বক্তৃতা দিতে আরো সুবিধা হবে। আর আওয়ামী লীগ যদি সত্যি সত্যি দেশের উন্নয়ন করে থাকে তাহলে জনগণের প্রতি তাদের আস্থা রেখেই সর্বদলীয় নির্বাচনের মাঠ প্রস্তুত করতে হবে। নইলে একদলীয় নির্বাচন সাধারণ মানুষের কাছে যেমন গ্রহনযোগ্য হবে না, তেমনি সেই নির্বাচনী ফলাফল দিয়ে নতুন সরকারও টেকসই হবে না।
সংসদীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার সদিচ্ছা যদি সত্যি সত্যিই আওয়ামী লীগের থেকে থাকে তাহলে বিএনপিকে ভোটের যুদ্ধে নিয়ে আসাটা এখন খুব জরুরী। সেজন্য বিদেশী চাটুকারদের যতোটা এড়িয়ে সেই কাজটি করা সম্ভব হবে, ততোই সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থাবান হবে বলেই আমার ধারণা। সেক্ষেত্রে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যদি হুট করে যেমন বঙ্গভবনে যান তেমনি হুট করেই সবকিছু ভুলে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসায় চলে যান, একটা কথাই বলতে যে, আসেন একসঙ্গে ভোটযুদ্ধ করি। অতীত নিয়ে আমরা আর কোনো গলাবাজী করব না। তাহলে দেশের মানুষ হাঁফ ছেড়ে বাঁচে।
আমরা শেখ হাসিনার সেই শুভবুদ্ধির দিকে তাকিয়ে আছি। নিশা দেশাই, সঞ্জিতা সিংহ, অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো, বান কি মুন নয়, সেই কাজটি স্বয়ং শেখ হাসিনাকেই করতে হবে। আমরা সেই সুদিনের আশায় নতুন ভোরের অপেক্ষায় থাকতে চাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।