আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফাসি... ফাসি... ফাসি... আসুন জেনে নেয় ফাসি সন্মন্ধে (দুর্বলচিত্তদের প্রবেশ নিষেধ)।


প্রথমে ছোট্ট করে একটু ইতিহাস বলে নিই। ফাসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা সনাতন পদ্ধতি গুলোর একটি। এর প্রথম সুত্রপাত হয়েছিল ২৫০০ বছর আগে পারস্য বর্তমান ইরানে তাও শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য (মহিলাদের শ্বাসরোধের সময় শালীনতার ব্যাঘাত ঘটতে পারে!)। রক্তপাতবিহীন এবং মৃত্যুকালিন গোঙানোর আওয়াজ না হওয়াই এটি খুব দ্রুত সময়ে পুরো বিশ্ব জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তৎকালীন সময়ে এটাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করা হত কারন এটা আয়োজন করা যেমন সহজ তেমনি এর নিষ্ঠুরতাও কম।

শুধুমাত্র যে কোনও গাছকে অবলম্বন করে একটা মই আর একটা দড়ি জোগাড় করতে পারলেই হয়। এর জন্য কোন দক্ষ মানুষেরও দরকার নেই। ফাসি দেয়া সনাতন হলেও বর্তমানে আফগানিস্তান,বাংলাদেশ, মিসর,ইরান, ইরাক, ফেলেস্তিনে,সিঙ্গাপুর,সোমালিয়া এবং সাউথ সুদানে এর জনপ্রিয়তা প্রচুর। আইনতভাবে ফাসির প্রকারভেদ ৪ রকম। ১) স্বল্পপতন (The "Short Drop" method)ঃ এই পদ্ধতিতে বন্দি শুধুমাত্র অল্পকিছু দূরত্বে ঝুলে থাকে।

এইটা সাধারনত ১ ইঞ্চি থেকে কয়েক ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। বন্দির শরীরের ওজন ও নড়াচড়াই তার গলার বাঁধন শক্ত হয় এবং ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। । তৎকালীন সময়ে ঘোড়ার গাড়ি বা অন্য কোন মাধ্যম হতে বন্দিকে গলায় দড়ি লাগিয়ে ফেলে দেয়া হত এবং আমৃত্যু পর্যন্ত তাকে টেনে নেয়া হত বা ঝুলিয়ে রাখা হত। সাধারনত এ ধরনের মৃত্যু ক্যারোটিড বা স্নায়ুযন্ত্রের নিস্ক্রিতার কারনে ধীরে ধীরে হয়ে থাকে।

গলার ফাস যখন carotid arteries and jugular veins কে চেপে ধরে তখন cerebral hypoxia (ischemia) হয় যার মানে হচ্ছে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত ব্রেনে যেতে বাধার সৃষ্টি হয় এবং বন্দির ওজনের কারনে ফাস আরও তীব্র হয়ে জিহবা শ্বাসনালি আটকে দেয়। ফলে বন্দি প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যায়। ২) ঝুলিয়ে রাখা(Suspension hanging) ঃ এ পদ্ধতিতে বন্দিকে শুন্যে অনেকক্ষণ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এটি সাধারনত ক্রেন বা অন্য কোন মাধ্যমে বন্দিকে উপরে উঠানো হয়। এর প্রক্রিয়া এবং কার্যকারিতা স্বল্পপতনের (The "Short Drop" method) মতোই।

তবে সাধারনত জনসম্মুখে রায় কার্যকর করার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি জনপ্রিয়। ৩) আদর্শ পতন(Standard drop hanging.) ঃ এ পদ্ধতিতে বন্দি একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করে থাকে। এটি সাধারনত ৪-৬ ফুটের মধ্যে হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে বন্দির ওজন ও উচ্চতার ভিত্তিতে ঘাড় ভেঙ্গে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনা থাকে। এটি মুলত স্বল্পপতন (The "Short Drop" method) এর আপডেট পদ্ধতি।

পতনের শুরুতেই বন্দি অজ্ঞান হয়ে যায়। বেশিরভাগক্ষেত্রে ঘাড় না ভাঙলেও পতনের বেগের কারনে অথবা রশির ভারি কুণ্ডলীর কারনেও চামড়া অথবা ঘাড়, পেশি, লিগামেন্ট খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ পদ্ধতিতে বন্দিকে প্রথম দুটির চেয়ে বেশি যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। ৪) দীর্ঘ পতন (The "Long drop") ঃ এ পদ্ধতি সাধারনত বন্দিদের দ্রুত পতন এবং ঘাড় ভেঙ্গে দেয়ার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। পতনের শেষ পর্যায়ে এটি বন্দির ঘাড় ও স্পাইনাল কর্ডে গভিরভাবে আঘাত করে এবং তৎক্ষণাৎ অজ্ঞান ও দ্রুত মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

এ পদ্ধতি কার্যকরের জন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় অন্যথায় এতে অনেক সময় দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ার অথবা ঘাড় থেকে মাথা আলাদা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বন্দিদের ওজন এ ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হয়। এ পদ্ধতি কার্যকরের জন্য বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের নিয়ম কানুন মেনে চলে যার মধ্যে ব্রিটিশদের নিয়ম (British drop tables) সর্বজন সম্মত। এ পদ্ধতি কার্যকরের সময় upper neck vertebrae, প্রধানত C2 & C3 vertebrae ভেঙ্গে যায় যার কারনে পুরো স্পাইনাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবার দেখা যাক কিছু ছবি।

অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন কেমন লেগেছে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.