আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনে সফলতা প্রাপ্তি আর প্রত্যাশা. Career Building Tune

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
অনলাইনে সেলিব্রেটি হওয়ার সকলেরই শখ আছে । কিন্তু শুধু শখ থাকলেই তো আর হবে না । এর জন্য দরকার অনেক ধৈর্য,অনেক পরিশ্রম ইত্যাদি ইত্যাদি । সবাইতো চায় পত্রিকার পাতায় তাদের নাম লেখাতে । কিন্তু এটা তো আর ছেলের হাতের মোয়া নয় যে চাইলেন আর পত্রিকায় আপনার নাম উঠে গেলো ।

কিন্তু আপনিও পারেন পত্রিকার পাতায় আপনার নাম উঠাতে ।   হ্যা,আপনার পক্ষেও সম্ভব অনলাইন সেলেব্রেটি হওয়া । আজ তা সম্পর্কে একটি উদাহরনসহ লিখতে চলেছি ।
ধৈর্য,জ্ঞানলাভের বাসনা,আর কিছু ট্রিক এই গুনগুলো যদি আপনার মধ্যে থাকে তাহলে একদিন না একদিন আপনাকে কেউ না কেউ বস বলে ডাকবে,আপনার কাছে সাহায্য চাবে ইত্যাদি ইত্যাদি । আর সাহায্য করার আনন্দ যে কতটুকু সেটা আমি টেকটিনসে আসার পর বুঝেছি ।

আপনি যদি নিঃস্বার্থ ভাবে মানুষের উপকার করে যেতে চান তাহলেই আপনি অনলাইন সেলিব্রেটি হতে পারবেন । আসুন দেখি কিভাবে তা হওয়া যায়ঃ

না,না একদমই নয় আপনাকে খুজতে হবে না । আপনি ঠিক জায়গায়ই দাঁড়িয়ে আছেন । টেকটিউনসই হলো এমন সহায়ক ওয়েবসাইট যেখানে আপনি শিখতে শিখতে শেখাতে পারবেন । আর এই ওয়েবসাইটে কিছু শিখতে হলে আপনার ধৈর্য থাকতে হবে ।

নিয়মিত সারাদেশের টিউনারদের সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা হবে । টিউনারদের মধ্যে সবাই অভিজ্ঞ । তারা তো আর একদিনে সব শিখতে পারেন নি । তাদের সম্পর্কে খোজ নিয়ে দেখবেন তাদেরকেও একদিন কপি-পেস্ট করা হাতেধরে শিখতে হয়েছে । তাদেরকেও পার হতে হয়েছে শত শত বাধা ।

টিউনারদের কাছ থেকে আইডিয়া নিন আর নিজের জীবনের সাথে মিলিয়ে দেখুন আর ঠিক করে নিন আপনাকে কি করতে হবে ।
আমার কাছেও অনেকেই প্রতিদিন ফেইসবুকে সাহায্য চায় । আমি তাদের বিমুখ করি না । আবার আমাদের ফেইসবুক গ্রুপেও(টেকটিউনস গ্রুপ) অনেক সাহায্য দেখা যায় । অধিকাংশই ডাউনলোড লিঙ্ক দরকার সম্পর্কে ।

যেমন ধরুন “ ফ্লাস প্লেয়ারের ডাউনলোড লিঙ্ক চাই" ..."আভাস্ট এর ডাউনলোড লিঙ্ক চাই" ।
দেখুন ভাইজানরা এই সামান্য সফটওয়ারটি কি তাদের পক্ষে খুজে পাওয়া সম্ভব নয় ? নাকি যারা সাহায্য দেন তাদের জন্য ইন্টারনেটটাই ভিন্ন ? তারা কি নিজেরা সফটওয়ার বানায়া লিঙ্ক দেন?
এখন এই প্রশ্নগুলো বুঝতে পারবেন না ।  একটা ছোট উদাহরণ দেই । ধরুন আপনার বাড়ি দিনাজপুর । এখন আপনি যদি ঢাকা যেতে চান  তাহলে আপনাকে নয় বাসে/নয় ট্রেনে/কিংবা প্লেনে যেতে হবে ।

ট্রেনে যেতে সময় লাগবে ৮ ঘন্টা আর প্লেনে যেতে সময় লাগবে ১ ঘন্টা । সময় যাই লাগুক আপনি ঢাকায় যেতে পারবেন ।
এক্ষেত্রে এক্সপার্টদের সফটওয়ার খোজাটা হলো প্লেনের মত । আর সাধারনদের সফটওয়ার খোজাটা ট্রেনের মত । সময় বেশি লাগবে বলে আপনি  নিজের জিনিস নিজে খুজবেন না কেন ? এক্সপার্টরাও তো এভাবেই শিখেছেন ।


নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন আর ভাবুন আপনি কি কি করতে পারেন আর কি কি করতে পারবেন । নিজের জিনিস নিজে বের করাটা খুবই আনন্দের ।  আপনি নিজে স্যারের সাহায্য ছাড়া একটা অঙ্কের উত্তর মিলিয়ে দেখুন কতই না ভালো লাগবে । নিজের প্রতিভাগুলোকে আর ঘুমিয়ে থাকতে দিয়েন না । সেগুলোকে জাগ্রত করুন ।

না হলে পরকালে আল্লাহর নিকট কি জওয়াব দেবেন ?
তবে হ্যা,সাহায্যের দরকার আছে ? সাহায্য হবে এইরকম “ কোন আন্টি-ভাইরাস ভালো সাহায্য চাই “...”কোন মডেম কিনব সাহায্য চাই”......আমার কম্পিউটারের এই সমস্যার সমাধান চাই “   ইত্যাদি । তবে সাহায্য চাওয়ার আগে নিজে ট্রাই করে দেখতে হবে । না ট্রাই করলে শিখবেন কিভাবে ?
আর একটা কথা যদি আপন নিরলস পরিশ্রম করেও কাংখিত জিনিস না পান তবে পরামর্শ নিবেন,সাহায্য নয় । আমার লেখা পড়ে কষ্ট পেতে পারেন । কিন্তু আমি হলক করে বলতে পারি আমি যা বলছি তা ভুল বলছি না ।


সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোর সাথে যুক্ত থাকুনঃ
আমি এক্ষেত্রে আপনাকে ফেইসবুক,টুইটার,গুগল প্লাস,অরকাট ইত্যাদি সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইটের সাথে যোগাযোগ রাখতে বলছি । এতে আপনার এক্সপেরিয়েন্স অর্থাৎ অভিজ্ঞতা বাড়বে । আপনি সারা বাংলাদেশ এমনকি সার বিশ্বের মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারবেন । চিনতে ও জানতে পারবেন সবাইকে । আর ফেইসবুক গ্রুপিং এর মাধ্যমেও আপনি আপনার মণের আশা পূরন করতে পারবেন ।

তবে একটা কথা আপনি যদি ফেইসবুকে সারাদিন চ্যাটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাহলে রেসাল্ট প্লাস মাইনাসে .........মাইনাসই হবে । এক্ষত্রে প্রযুক্তির ভালো দিকটাই আপনাকে ব্যাবহার করতে হবে ।
নিজের একটা পারসনাল ব্লগ থাকা খুব জরুরি । ব্লগটা ওয়ার্ডপ্রেস অথবা ব্লগস্পট হলে ভালো হয় । নিজের ব্লগের মাধ্যমে আপনি নিজেকে ঝালিয়ে নিতে পারবেন ।

নিজের মধ্যে একটা শক্তি জাগবে,আপনার অন্তর বলবে ”আমরাও পারি”’ । তাছাড়া আপনি নিজে উপার্জন করতে পারবেন আপনার ব্লগ থেকে ।
যদি নিজে না খুলতে পারেন তাহলে এক্সপার্টদের কাছে পরামর্শ নিন । যদিও আমি ব্লগিং সম্পর্কে খুব একটা এক্সপার্ট নয় তবুও আমার কাছ থেকেও পরামর্শ নিতে পারেন ।
STRATEGIC TIMEOUT ( 3 মিনিট )
সাল তখন ২০১০,সবেমাত্র বৃত্তি পরীক্ষা দিলাম ।

আর ক্লাস নাইনে উঠলাম । ভালো ফলাফল করা আর বাহিরে ঘোরাফেরা আটকানোর জন্য আমাকে কম্পিউটার কিনে দেওয়া হলো । প্রথম দিন আমার ইঞ্জিনিয়ার আঙ্কেল মোস্তাফিজুর রহমান(রোডস আন্ড হাইওয়ে,সাব-ডিভিসনাল ইঞ্জিনিয়ার,বগুড়া ) আমাকে কপি-পেস্ট করা শিখালেন । সেইদিন সারাদিন করলাম সেই কাজ । কিন্তু একদিন শখ হলো ব্যাকগ্রাউন্ড সিনারি পাল্টাবো ।

আদা জল খেয়ে লেগে গেলাম ব্যাকগ্রাউন্ড সিনারি পাল্টানোর জন্য । উইন্ডোজ নষ্ট হলো । ৫০০ টাকা খরচ করে একজন কম্পিউটার অপারেটর এর মাধ্যমে উইন্ডোজ দিলাম । তারপর আচমকাই শিখে ফেললাম ব্যাকগ্রাউন্ড পাল্টানো । এভাবে শিখতে লাগলাম ছোটখাটো কাজগুলো ।

এভাবে চলতে লাগল আমার প্রাথমিক ইঞ্জিনিয়ারিং জীবন ।   
সাল তখন ২০১১,কম্পিউটার কেনা এক বছর হয়ে গেলো । এখন আমি কম্পিউটারের পোকা । বেশি কিছু না জানলেও যা জানি তাই নিয়ে প্রাউডফিল করি । এর মাঝেই কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকে গেলো ।

ছুটে চললাম বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে এন্টি-ভাইরাসের জন্য । আঙ্কেলের কাছে শুনলাম ক্যাস্পারস্কির কথা । আঙ্কেলের দেওয়া ২০০০ টাকা খরচ করে পাইরেটেড ক্যাস্পারস্কি ইন্সটল করলাম । ওব্যাটা টাকা পেয়ে আরও কিছু জিনিস দিয়ে গেলো । মোটামুটি ভাইরাস তাড়ানোর কাজ শেষ ।

এবার আমার ফ্রেন্ডদের মেমোরি কার্ডে গান দেওয়ার পালা । অডিও দিতে পারলাম কিন্তু ভিডিও গান দিলাম কিন্তু ফোনে চল্লো না । ছুটে গেলাম আমাদের এলাকার শ্রেষ্ট কম্পিউটার মাল্টিমিডিয়া দোকান “বৈশাখি ডট কম “ এ । সেখানে মানিক ভাই আর সাহেব ভাই এর পরামর্শ মতে ফরম্যাট ফ্যাক্টরি আর ওয়ান্ডারশেয়ার কনভার্টার নিলাম । টাকা অবশ্য গুন্তে হয়ে ছিলো ৮০ টাকা ।

যাহোক নিজে কনভার্ট করতে পারবো ভেবে টাকাকে টাকা মনে করলাম না ।
সাল ২০১২,এখন আমি ইন্টারনেটের পোকা । সফটওয়ার এডিট করতে পাকা (সফটওয়ার বানাতে নয়)  । অনেক সফটওয়ার নিয়ে গবেশনা করি । বেশি কিছু করতে পারলাম না কারন ১ লা ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা শুরু ।

আপাতত কাজগুলো স্টান্ডবাই করে পরীক্ষা আর পড়াশুনায় মননিবেশ করলাম । পরিক্ষা শেষ,তার অনেক আগে সাহেব ভাইয়ের কাছ থেকে একটা ফাইল নিয়ে এসেছিলাম যেখানে নানা ধরণের ভালো ভালো ওয়েবসাইটের নাম দেওয়া আছে । ইন্টারনেটের অভাবে সাইটগুলোতে ঢুকতে পারি নি । আমার এডিট করা গেমটিকে আরো ডেভেলপ করার জন্য রবির ৫ জিবি ইন্টারনেট প্যাক(ভ্যাটসহ ৭৫০ টাকা,প্যাকেজ কিনতে ডায়াল *8444*83#) নিলাম । ব্যাস ১৫ দিনের মধ্যেই ক্রিকেট গেমটা ডেভেলপ করলাম ।

এবার সেই ডকুমেন্ট টা বের করে সাইটগুলো ব্রাউজ করলাম । প্রতিটি ওয়েবসাইটই দারুন । ১০ নম্বরে পেলাম টেকটিউনসের নাম । ব্রাউজ করলাম । ব্যাস কেল্লাফতে,নিজে নিজে চিন্তা করলাম কি নাই এই ওয়েবসাইটে! বিভিন্ন পোস্ট থেকে প্রাথমিক জ্ঞান নিয়ে একটা ব্লগস্পট ব্লগ খুললাম ।

গুগল সার্চ করলাম আর ব্লগ ডেভেলপ করতে লাগলাম । এরপর মনে হলো একটা পোস্ট করে হাতের জড়তা ভাঙ্গি । ব্যাস,যে সফটওয়ার খুজতে আমাকে অনেক বাধা অতিক্রম করতে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে তা শেয়ার করলাম এরই মাঝে ৭-৮ টা পোস্ট করলাম টেকটিউন্সে আর ৩৫ টা আমার ব্লগে । তারপর জয়েন করলাম টেকটিউনসের ফেইসবুক গ্রুপে এক-একটা সাহায্য করলাম আর ধীরে ধীরে ফ্রেন্ডলিস্ট বড় হতে থাকলো ।
আমার এলাকায় আমার ব্লগের প্রচার শুরু করলাম কিন্তু তেমন কোন সাড়া পেলাম না ।

তবুও রেসাল্টের পর আরোও ডেভেলপ করার ইচ্ছা আছে । এখন নিজেও বুঝতে পারি না আমি এখন কোথায় দাঁড়িয়ে আছি । ফেইসবুকে এখন অনেকেই বস বলে ডাকে ।    প্রতিনিয়ত সাহায্য চায় ।   আমার অতি সীমিত হলেও তা দিয়ে যথাসাধ্য সাহায্য করি ।


মাত্র ৩ মাসের টেকটিউনসের সাহায্যে বদলে গেল জীবনটা । এখন এটা ভেবে খুব ভালো লাগে যে,আগে তিসাদ নামের কোন গাধাকেও কেউ চিনতো না । আর এখন আমাকে অনেকেই চেনে ।

টেকটিউনসে টিউন করবো ? আমিতো খুব কম জানি ? আমার টিউন কি সবাই পড়বে ? আমাকে নিয়ে সবাই হাসি ঠাট্টা করবে না তো ?
এসকল প্রশ্ন নতুনদের মনে থাকা খুব কমন ব্যাপার । টেকটিউনস বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কমিউনিটি ।

আমি মনে করি এখানকার সবাই সহমর্মী। কেউ কাউকে ঠাট্টা বিদ্রুপ করবেনা বলে আমার বিশ্বাস । সাহস করে কলম(থুক্কু,কি-বোর্ড) ধরতে  হবে । যখন টিউন করার পর কোন পরামর্শ পাবেন তা সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োগ করবেন । যেমন আমি প্রথম প্রথম 4Shared এর লিঙ্ক দিয়েছিলাম ।

এখানে ডাউনলোড করা ঝামেলা বলে অনেকেই ডাউনলোড করতে পারেন নি । আপনি মূল্যবান জিনিস  শেয়ার করলেন ,সেটা কেউ যদি ডাউনলোড না করতে পারে তাহলে শেয়ার করে লাভ কি? তাই সহজ লিঙ্ক দেওয়া জরুরী । এছাড়াও টিউন গ্রহনযোগ্য হওয়ার জন্য কিছু পোস্ট আপনারা পড়লে ভালো পোস্ট করার একটা মন-মানুসিকতা জন্মাবে ।

নিজে চিন্তা করুন এবং নতুন আইডিয়া বানান আর ফেইসবুকে শেয়ার  করুন । কেউ কোন কমেন্ট করলে গ্রহন করুন ।

সেগুলো বিভিন্নভাবে প্রয়োগ করুন । দেখবেন সফলতা আপনাকে খুজে নেবে । ধীরে ধীরে পেয়ে জাবেন আপনার কাঙ্গিত পথ ।
আপনার পোস্ট লিখা হয়ে গেলে নিজেই মার্কিং করুন । তারপর এক্সপার্টদের পোস্টগুলোর সাথে মিলিয়ে দেখুন আর কি কি  ফিচার এড করা যেতে পারে ।

আপনি যখন পোস্ট লিখবেন তখন আপনি একই সাথে লেখক আবার পাঠকও । নিজে একবার টিউনটা রিভাইজ দিন । বানান ভুল থাকলে ঠিক করুন । যেগুলো সফটওয়ারের লিঙ্ক আপনি দেবেন আগে নিজে সেগুলো ট্রাই করুন আর দেখুন সেগুলো কাজ করে কি না । অবশ্যই টিউনটাকে গঠনগত ভাবে সুন্দর ও সাবলীল করার চেষ্টা করবেন ।

সম্ভব হলে ফিচারড ইমেজ আকর্ষণীয় করুন,অবশ্য সেটা আপনার ইচ্ছা । টিউন বেশি তথ্যবহুল করার চেষ্টা করুন ।

সোর্স: http://www.techtunes.com.bd/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।