ভারত বাশ খাইসে । তাও আমেরিকার হাতে। ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী আমেরিকায় পুলিশের হাতে অপদস্থ হওয়ায় অনেকেই বেশ খুশি খুশি ভাব নিয়ে ফেসবুক , ব্লগ এসব জায়গায় স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। এটা আসলে আমাদের প্রতি ভারতীয় শাসকগোষ্ঠীর অন্যায় অবিচারের পাল্টা প্রতিক্রিয়া। ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের এই স্নায়ুযুদ্ধে অনেকে অনেকভাবে মজা পাইতেসে বিশেষত ভারত নাজেহাল হওয়ায় , আমাদের অনেকে আমাদের ইস্যুকে এর মধ্যে জড়ায়ে ভারত -আমেরিকার কাছে আমাদের গুরুত্বের কথা বলতেছে।
বিডিনিউজ আর কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনের বদৌলতে এটার আসল কারণ যে ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশকে নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধ এটা অনেকেই জেনে গেছেন। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছেন এতে আমাদের জন্য কত বড় অপমান লুকিয়ে আছে?
কিন্তু কেউ কি এটা ভেবে দেখেছেন যে পুরো বিষয়টি আমাদের জন্য সূক্ষ্মভাবে বড় অপমানজনক? আমাদের নিয়ে তাদের মধ্যে লাগালাগির মধ্যে আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব যে ধুলোয় গড়িয়ে পড়ছে সেদিকে কারো নজর আছে? এটা হচ্ছে আমাদের উপর কর্তৃত্ব ফলানো নিয়ে ভারত - যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ঠাণ্ডা লড়াই, যাতে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের হাতে কূটনৈতিকভাবে লাঞ্ছিত হোক আর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কূটনৈতিক বাশ খাক, তাতে আমাদের জন্য সম্মানজনক কিছুই থাকছে না। বরং উল্টোটা।
আমাদের শাসকগোষ্ঠীর আর আমাদের দুর্বল চরিত্রের কারণে এখন আমাদের অবস্থা এমন যে নিজেদের এখন পরাধীন পরাধীন লাগে। আমরা কিভাবে চলবো, কে আমাদের শাসন করবে না করবে , এসব এখন চলে গেছে ভারত , পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এদের ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপর।
নিজেদের মধ্যে নিজেদের বিবাদ আর হানাহানি জিইয়ে রাখার ফসল এগুলো। নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ আমরা এখন এমন জায়গায় নিয়ে গেছি যে বি এন পি আওয়ামীলীগ জামাতে ইসলাম এদের মধ্যকার বিবাদ এখন আমাদের সবার মধ্যে ঢুকে গেছে। নিজেরাই নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে গেছি। এসবের সুযোগ তো নেবেই ওদের মত বিদেশী শক্তি। কারণ তাদের প্রত্যেকের ইচ্ছেই তো নিজেদের স্বার্থে আমাদের কাজে লাগানো।
দুঃখ লাগে , বড় দুঃখ লাগে আমরা আমাদের নিজেদের বুঝ নিজেরা বুঝিনা বলে । আমাদের আত্মসম্মানবোধ, সচেতনতাবোধ এতো কম বলেই নিজেদের মধ্যে নিজেদের এতো বেশী বিরোধ। যে বিরোধের জেরে আমরা এতো বেশী বিভক্ত। যে বিরোধের জেরে বাইরের শক্তি আজ আমাদের দেশে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পায়। ভারত -পাকিস্তানের মত তৃতীয় শ্রেণীর দেশের শাসকগোষ্ঠী আমাদের মাথা চিবিয়ে খেতে পারে।
বাদ বাকিদের কথা না হয় তো বাদই দিলাম। এতো কষ্টে অর্জিত স্বাধীনতা এজন্যই আজ রক্ষা করা এতো কঠিন হয়ে পড়েছে। ‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করা কঠিন ‘ ছোটবেলায় ভাব-সম্প্রসারন পড়েছিলাম। আর আজ সেটার প্রমাণ নিজের চোখেই দেখছি। সচেতন হও বাঙ্গালী, সচেতন হও।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।