আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফ্রেশ মুভির ফ্রেশ ফ্রেশ রিভিউঃ ধুম থ্রী!!!



অত্যাধিক খারাপ প্রিন্ট তারচেয়েও খারাপ সাউন্ড কোয়ালিটি (সেটা তো হবেই পাইরেটেড কপি যে!!)তারপর ও দেখে ফেললাম সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ইন্ডিয়ান মুভি ধুম থ্রি। তাই অন্যদের সাথে মুভিটার কাহিনী শেয়ার করছি (সেই সাথে একটু জেলাস ফিল করাচ্ছি) মুভির শুরুতেই দেখা যায় একটি কিশোরকে যে হচ্ছে আমির খানের ছোট ভার্সন সাহির। জ্যাকি শ্রফ হচ্ছেন সাহিরের বাবা এবং দ্যা গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাসের মালিক। এই সার্কাসটি তখন প্রায় ডুবতে বসেছে। ব্যাংকের লোন শোধ না হলে সবকিছু গুটিয়ে চলে যেতে হবে।

সাহির তার বাবাকে তার রোজগারের ২৫ ডলার এনে দিয়ে বলে এটা দিয়ে কিছুতো লোন কম হবে। বাবা আবেগ আপ্লুত হয়ে ছেলেকে বলেন এই টাকা দিলে উলটা তারাই আমাদের কাছে ঋনি হয়ে যাবে কারন এই টাকার মুল্য অনেক এবং এটা যতদিন তোমার কাছে থাকবে ততদিন কেউ সার্কাস বন্ধ করতে পারবে না। সেদিন ব্যাংকের সামনে শেষ সুযোগ হিসাবে প্রদর্শনী ছিল। সবাই প্রান ঢেলে কাজ করার পরও ব্যাঙ্কের মালিকের তা পছন্দ হয়না। তিনি জানান এখানে মানুষ সুন্দরী মেয়েদের ছোট ছোট ড্রেস পড়ে লাফালাফি করা দেখতে আসে।

যেহেতু তাদের সে ব্যাবস্থা নেই তাই পাঁচ দিনের মাঝে সব গুটিয়ে চলে যেতে হবে। এইকথায় উত্তেজিত সাহিরের বাবা মালিকের দিকে পিস্তল তুলে পরে নিজেই সুইসাইড করেন। ছোট্ট সাহিরের সামনেই সবকিছু হয়। মুভির সেকেন্ড রাউন্ডে দেখা যায় পথে বসা এক ভিখারির থালায় হঠাত আকাশ থেকে ডলার এসে পড়ে এবং তারপর শুরু হয় ডলার বৃষ্টি। তখনি বহুতল ভবনের গা বেয়ে সোজা হেঁটে নেমে আসে আমির খান এবং উপস্থিত সকলের দিকে একটা হাসি দিয়েই গায়েব।

তারপর, সেই পুরাতন ইঁদুর বেড়াল খেলা। বাইক নিয়ে নানা ক্যারিক্যাচার এবং পালানো। এমন নিদারুন ব্যাংক ডাকাতি এবং সকলের চোখের সামনে দিয়ে পলায়নের পর যথারীতি আমাদের পুরোনো মানিকরতন অভিষেক আর উদয়ের শিকাগোতে আগমন এবং অপরাধ নিয়ে বিচার বিশ্লেষন। এদিকে সার্কাস নতুন করে শুরু করতে সাহিরের একটা মেয়ে দরকার কিন্ত কাওকেই তার মনে ধরছে না। তখনই সাইকেলে চড়ে এক তরুনীর হুড়মুড় করে আবির্ভাব এবং আবার একটা সুযোগ দেওয়ার আবেদন।

সাহির তাকে জানিয়ে দেয় পাঁচ মিনিট সময় দেয়া হবে তার মাঝে যদি তার নজর মেয়েটির উপর থেকে একবার হটে তবে চান্স খতম!এরপরই শুরু হয় আলিয়া ওরফে ক্যাটরিনার নৃত্যগীত। সেটা দেখে তো আমার চক্ষু চড়ক গাছ। কারন সে অবিকল স্ট্রিপ ডান্সের মত একেএকে পরিধেয় বস্ত্র খুলে খুলে তালে তালে নাচতে থাকে। প্রথমের বিশাল জাব্বাজোব্বা পোশাক দিয়ে শুরু করে গানের শেষে শুধু একটা হাফ প্যান্ট আর ছোট্ট টপ্ অবশিষ্ট থাকে। ডিরেকটর কে এটুকু বাদ রাখার জন্য ধন্যবাদ না দিয়ে পারলাম না।

(ক্যাট্রিনা প্রেমিক্ রা প্লিজ আমার উপরে চেতবেন না। বিশ্বাস না হয় নিজেই দেখে নিয়েন ঠিক বলেছি কিনা) এদিকে মানিক রতনের ক্রাইম এর পোস্টমর্টেম দেখে এবং টিভিতে অভিষেকের কথা শুনে সাহির নিজেই যায় তাকে সাহায্য করতে। বেশ কিছু ক্লু দেয় এবং অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়। এমন কি কখন চুরি হতে পারে সেটাও জানিয়ে দেয়। যথারীতি সকল ব্যাবস্থা গ্রহনের পর ও ডাকাতি হয় এবং মারাত্বক ধাওয়া পালটা ধাওয়া শুরু হয়।

ছেলে দর্শকরা নিঃসন্ধেহে এই অংশটা খুব উপভোগ করবেন। এখানে তো সাহিরের বাইক একবার স্পীড বোর্ডে পরিনত হয় সকলের চোখের সামনে!!!! এখানে অভিষেকের গুলিতে সাহির আহত হয় এবং অভিষেক বুঝতে পারে ভুতটা সরষের ভেতরেই ছিল। সে সন্ধাতে সাহিরের ওপেনিং সার্কাসে হাজির হয় আসামী ধরতে। জবরদস্ত ওপেনিং শো এর পর পুলিশ নিয়ে অভিষেক সাহিরের বডি ভালকরে সার্চ করে কিন্ত গুলির কোনো ক্ষত সেখানে পাওয়া যায় না কিন্ত অভিষেক নিশ্চিত ছিল যে গুলিটা গায়ে লেগেছে। পুলিশের সাথে যখন আমিও ভেবে হয়রান যে দাগ গেল কোথায় তখনি দেখা যায় কাহিনীর সবচেয়ে বড় টুইস্ট।

সাহির আসলে একা নয়। তার একটা জমজ ভাই আছে যার নাম সামার। সে অবিকল সাহিরের মত দেখতে হলেও তার মাঝে অটিজম এর ভাব আছে। এই সামার ছিল তাদের বাবার সিক্রেট। অবিকল একরকম দুই ছেলেকে দিয়ে তিনি অবিশাস্য সব খেলা দেখাতেন।

কেউ এই সিক্রেট জানত না। যেদিন তিনি সুইসাইড করেন তখন ও সামার স্টেজ এ একটা বক্স এ লুকিয়ে ছিল। এই জমজ দুই ভাইএর জীবনের লক্ষ্য হচ্ছে সেই ব্যাংকটা কে দেওলিয়া করে বন্ধ করে দেয়া। দুবার ডাকাতির সময়ই দুইভাই একসাথে কাজ করেছে কিন্ত কেউ বুঝেনি তারা আসলে দুইজন। এদিকে ব্যার্থ হয়ে মানিক রতন যখন দেশে ফিরতে যাচ্ছে তখন উদয় অভিষেক কে মনে করিয়ে দেয় এভাবে চলে গেলে কিভাবে তাদের ইজ্জতের ফেলুদা হবে।

তাই ইজ্জত বাঁচাতে মানিক রতন নব উদ্যোমে ফিরে আসে এবং আড়িপেতে দেখে ফেলে দুজনের সিক্রেট। এদিকে সামার আবার আলিয়ার প্রেমে পড়েছে। সামারের জন্য একমাত্র ছুটির দিন যেদিন সে ফ্রি হয়ে ঘুরতে পারে সেদিন অভিষেক ছদ্দবেশে সামারের কাছে গিয়ে বন্ধুত্ব পাতায় এবং কুটমন্ত্রনা দেয়। এরপর দেখা যায় এতদিনের লক্ষী ভাইটি একজন নারীর সঙ্গ পাওয়ার জন্য অলক্ষী হয়ে উঠেছে। ক্যাট্রিনাকেও দেখা যায় সামারের প্রেমে নিমজ্জিত হতে।

এদিকে সাহির অভিষেকের কাছে গিয়ে সামারের মত অভিনয় করে এবং সব জেনে নেয়। তারপর তাকে হাত পা বেঁধে ফেলে রেখে ছুটে যায় সর্বশেষ মিশনে। দুইভাই একসাথে ব্যাংকে হাজির হয়ে সেখানে বড় একটা বিস্ফোরন ঘটিয়ে বিল্ডিং উড়িয়ে দেয়। এবং যথারীতি ফাইনাল চোর ধরার খেলা। অভিষেক সামারের জন্য টোপ হিসাবে ক্যাটরিনাকে হাজির করে আর সামার তাকে ফেলে পালাতে চায়না একেবারেই।

ফলে বাধ্য হয়ে সাহিরকেও থামতে হয়। সে তার সমস্ত তথ্য হস্তান্তরের বিনিময়ে সামার এবং আলিয়াকে ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয় অভিষেক কে। অভিষেক রাজি হলে সাহির ভাইএর কাছে বিদায় নিয়ে এই এত্ত বিশাল এক বাঁধের উপর থেকে ঝাঁপ দেয়। তখন ভাই তাকে ধরে ফেলে এবং দুজন সারাটা কাল একসাথে থাকবে বলে একসাথে ঝাঁপ দেয়। দুজনে একসাথে নিচে পড়তে থাকে হাসি মুখে।

বাকি সকলেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কাহিনী মোটামুটি এই। আমির খানের অভিনয় ভাল লেগেছে। গানগুলো ধুম সিরিজের অন্যসব গানের চেয়ে দুর্বল। একশন আছে ষোলআনা।

বাইক নিয়ে নানারকম ক্যারিক্যাচারও আছে বিস্তর। মানিক রতনের পারফরমেন্স গতানুগতিক। সবচেয়ে হতাশ লাগল ক্যাটরিনাকে দেখে। কোনো নতুন লুক নেই। সেই একই বেবিডল মার্কা চেহারা।

ধুম সিরিজের অন্যদের মত তারও একটা একদম নতুন চেহারা আশা করছিলাম। এই তিনটা মুভির মধ্যে ধুম টু আমি সবদিক থেকে বেশি এঞ্জয় করেছি। তাই ধুম থ্রির ক্ষেত্রে আশা ছিল আকাশচুম্বি। সব মিলিয়ে মুভিটা খারাপ না। কাহিনী নিঃসন্দেহে ভাল।

যাই হোক মুভিটা সবাই এঞ্জয় করবেন বলেই মনে হয়। খারাপ প্রিন্ট দেখেছি তাই কিছু মিস করে থাকলে নিজ গুনে ক্ষমা করবেন এবং সকলে ভাল থাকবেন। গুডবাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.