সেটা ছিল ক্রিসমাস এর এক বিকেল। কোলাহলপূর্ণ প্রাঙ্গণে অন্যান্য মেলা,খেলার মধ্যে চলছিল ছোটদের ‘খেলনাগাড়ি দৌড় প্রতিযোগিতা’। চূড়ান্ত পর্যায়ে ওঠা চারজন প্রতিযোগী বালক গর্বিত ভাবে নিজেদের গাড়ি গুলি ধরে ছিল কারন প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী গাড়িগুলি ছিল একান্ত ভাবেই তাদের নিজেদের তৈরি।
ওই চারজনের মধ্যে একজনের গাড়িটি বাকিগুলির তুলনায় একেবারেই সাদামাটা, আকর্ষণহীন এবং বিশেষত্বহীন ছিল যদিও আশ্চর্যজনকভাবে সে চূড়ান্ত পর্যায়ে উঠতে পেরেছিল। তবে স্বীকার করা ভাল যে বাকিদের রংচঙে সুন্দর ভাবে তৈরি গাড়ির তুলনায় তার সাধারন কাঠের তৈরি গাড়িটা দর্শকদের কাছে একটুও আকর্ষণীয় ছিলনা এবং তারা সন্দেহ করছিল এই চূড়ান্ত পর্যায়ে সে বাকিদের আদৌ কোনও প্রতিযোগিতায় ফেলতে পারবে কি না।
তবে ছেলেটি কিন্তু গর্বিত ভঙ্গিতে গাড়িটা ধরে ছিল,হাজার হোক নিজের তৈরি গাড়ি বলে কথা।
অবশেষে সবাই নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়াল,বিচারক শুরুর সঙ্কেত দিলেন এবং তারা নিজেদের গাড়িকে যতটা সম্ভব ধাক্কা দিয়ে দৌড় শুরু করল। দৌড়,দৌড় ধাক্কার পর ধাক্কা এভাবে শেষ বিন্দুতে পৌঁছলে দর্শকরা সকলে অবাক হয়ে দেখল সবচেয়ে অসুন্দর দেখতে গাড়িটিই শেষ পর্যন্ত জিতে গেছে।
বিজয়ী ছেলেটিকে সঞ্চালক পুরষ্কার দেবার আগে জিজ্ঞেস করলেন “আমি দেখেছি চূড়ান্ত পর্যায়ের ঠিক আগে তুমি ঈশ্বরের কাছে কিছু প্রার্থনা করছিলে, তুমি নিশ্চয় তোমার জয়ের জন্য তাঁর আশীর্বাদ চেয়েছিলে?”
ছেলেটি একটু ইতস্তত করে বলল “না,আমি অন্যদের হারানোর জন্য কিছু চাইনি, আমি শুধু মনে মনে ঈশ্বরকে বলেছিলাম যে আমি হেরে গেলে যেন না কাঁদি। ”
দর্শকদের ক্ষণিকের নিস্তব্ধতা,বিহবলতা তারপর সেই প্রাঙ্গন ভরে গেল তুমুল হাততালিতে।
কত সময়েই না আমরা নিজেদের ইচ্ছেপূরণের আশীর্বাদ চাই কিন্তু কখনও ভেবেও দেখিনা সেই চাওয়াটা অন্যের চাওয়ার বিপরীত কি না। যদি প্রচলিত ধারণার ঈশ্বর থেকেও থাকেন তাহলে তিনি কিভাবে একজনের আশা পূর্ণ করে অন্যজনকে নিরাশ করবেন যেখানে প্রত্যেকেই তাঁর কাছে সমান প্রিয়! আর জেতা-হারা বা পাওয়া না পাওয়াটাই কোনও কিছুর চূড়ান্ত মানদণ্ড নয়,তাই যেটাই ঘটুক সেটাকে আমাদের সহজভাবে গ্রহন করার চেষ্টা করা উচিত। এতেই বোধহয় জীবন সুন্দর হবে।
বিঃদ্রঃ - সংগৃহীত ও অনুবাদিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।