সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এই নিকটি অবশ্যই (১৮+) দের জন্য এবং দুর্বল ও সংবেদনশীলদের বিশেষ ভাবে অনুরোধ রইলো এই নিকের পোস্ট সমূহ এড়িয়ে যাওয়ার। এর পরও যাদের ভিতরে খুব বেশি কুড়কুড়ি আছে তারা অবশ্যই নিজ দায়িত্বে ঢুকবেন। আর পোলাপাইন!!! এই গুলান বহুত শয়তান ।
আল্লাহ তায়ালা ইবরাহিম (আ.) কে ৩০টি বিষয় দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন। সূরা তওবায় যার ১০টি বর্ণনা রয়েছে।
আর সূরা আহজাবে ১০টি এবং সূরা মোমিনুনে বাকি ১০টির বর্ণনা স্থান পেয়েছে। (তাফসিরে রুহুল মায়ানি, ১/৪৯৩)। শিহাবুদ্দীন আলুসি (রহ.) বলেন, ইবরাহিম (আ.) এর পরীক্ষার যে বিষয়গুলো সুরা তওবায় উল্লিখিত আছে, তা হলোÑ ১. তওবা, ২. ইবাদত, ৩. হামদ বা আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা করা, ৪. সিয়াহাত বা আল্লাহ তায়ালার নিদর্শন দেখার জন্য বিশ্বভ্রমণ, ৫. রুকু, ৬. সিজদা, ৭. সৎ কাজে আদেশ করা, ৮. অসৎ কাজে বাধা দেয়া, ৯. আল্লাহ তায়ালার সীমানা সংরক্ষণ করা এবং ১০. তার প্রতি ঈমান আনা।
আর সূরা আহজাবে পরীক্ষার যে ১০টি বিষয় উল্লিখিত হয়েছে তা হলোÑ ১১. ইসলাম, ১২. ঈমান ১৩. কুনুত বা আনুগত্য, ১৪. সিদক বা সততা, ১৫. সবর, ১৬. খুশু বা ইবাদতে ধীর-স্থিরতা, ১৭. সদকা প্রদান করা, ১৮. রোজা পালন করা, ১৯. লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করা, ২০. জিকির করা।
আর সূরা মোমিনুনে যে ১০টি বিষয়ের কথা বলা হয়েছে, তা হলোÑ ২১. ঈমান, ২২. ইবাদতে মনোযোগ, ২৩. অনর্থক বিষয় পরিহার করা, ২৪. জাকাত প্রদান করা, (২৫, ২৬, ২৭) লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করা তবে স্ত্রী এবং শরিয়তসম্মত দাসী ব্যতীত; ২৮. ওয়াদা রক্ষা করা, ২৯. আমানত রক্ষা করা এবং ৩০. সালাতের ওপর অটল থাকা।
(তাফসিরে রুহুল মায়ানি, ১/৪৯৩)।
ইমাম হাকেম (রহ.) স্বীয় মুস্তাদরাক কেতাবের ৪০২৭নং হাদিসে বর্ণনা করেন, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ইসলামের ৩০টি অংশ এমন আছে, যা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কাউকে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে অতঃপর সে তা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেÑ ইবরাহিম (আ.) ব্যতীত এমন আর কেউ নাই। আর এ কথা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন সূরা নজমের ৩৭নং আয়াতে, ‘ওয়া ইবরাহিমাল্লাজি ওয়াফফা অর্থাৎ আর ইবরাহিম, যে পূর্ণভাবে সম্পাদন করতে পেরেছে। ’ ফলে আল্লাহ তায়ালা তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তিনামা দান করেছেন। (ইমাম হাকেম বলেন, হাদিসটির সনদ সহিহ, আর ইমাম জাহাবিও এ মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
)
কেউ কেউ বলেন, ওই পরীক্ষার বিষয়বস্তু ছিল চারটি। যথাÑ ইমামত বা নেতৃত্ব, বাইতুল্লাহকে পবিত্র করা, বাইতুল্লাহ নির্মাণ করা এবং ইসলাম তথা আল্লাহ তায়ালার কাছে আত্মসমর্পণ করা। (তাফসিরে রুহুল মায়ানি, ১/৪৯৩)।
আবার ইমাম বাগভী (রহ.) বর্ণনা করেন, তাবেয়ি হাসান বসরি (রহ.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা ইবরাহিম (আ.) কে ৭টি বিষয় দ্বারা পরীক্ষা নিয়েছিলেন এবং তাতে তিনি কৃতকার্য হয়েছিলেন। (মায়ালেমুত তানজিল, ১/১৪৫)।
আর সেগুলো হলোÑ
(১, ২, ৩) ছোট বয়সে আল্লাহ তায়ালা তাকে তারকা, চন্দ্র এবং সূর্য দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন। আর তিনি এগুলো নিয়ে সঠিকভাবে চিন্তা-গবেষণা করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন যে, এগুলো কখনও আমার প্রভু হতে পারে না। কারণ, এগুলো স্থায়ী নয় বরং পরিবর্তনশীল। ইবরাহিম (আ.) এর চতুর্থ পরীক্ষা ছিল নমরুদের অগ্নিকা-ে নিক্ষিপ্ত হওয়া। আর ইবরাহিম (আ.) তখন ধৈর্যধারণের মাধ্যমে সে পরীক্ষায় সফল হয়েছিলেন।
আল্লাহ তায়ালা তখন আগুনকে শান্তিদায়ক ঠা-া হতে বলেছিলেন, যার বর্ণনা সূরা আম্বিয়ার ৬৯নং আয়াতে বিদ্যমান।
ইবরাহিম (আ.) এর পঞ্চম পরীক্ষা ছিল স্বদেশ ত্যাগ করে হারান এলাকা এবং পরে সিরিয়ায় হিজরত করা। ইমাম বাগভী (রহ.) বলেন, ৭৫ বছর বয়সে তিনি ইরাকের কুফা থেকে সিরিয়ায় হিজরত করেন। তখন তার সঙ্গে তার স্ত্রী সারাহ (রা.) এবং ভাতিজা লুত (আ.) ছিলেন। (মায়ালেমুত তানজিল : ৬/২৩৮)।
ইবরাহিম (আ.) এর ষষ্ঠ পরীক্ষা ছিল স্বীয় পুত্র ইসমাঈল (আ.) কে কোরবানি করা। কোরআনের সূরা সফফাত সাক্ষী দিচ্ছে যে, ইবরাহিম (আ.) খুব ধৈর্যের সঙ্গে ওই পরীক্ষা দেন এবং কৃতকার্য হন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যখন তারা উভয়ে আত্মসমর্পণ করল, এবং সে (ইবরাহিম) তাকে (ইসমাঈলকে) কাত করে শুইয়ে দিল, আমি তাকে ডাক দিয়ে বললাম, হে ইবরাহিম! তুমি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ। আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয় এটা একটা মহান পরীক্ষা।
’ (সূরা সাফফাত : ১০৩-১০৫)।
তার সপ্তম পরীক্ষা ছিল বৃদ্ধ বয়সে খতনা করার হুকুম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করিম (সা.) বলেন, ইবরাহিম (আ.) ৮০ বছর বয়সে খতনা করেন। (বোখারি : ৩৩৫৬)।
হাসান বসরি (রহ.) বলেন, ইবরাহিম (আ.) এসব পরীক্ষায় সবর করেন এবং উত্তীর্ণ হন।
(মায়ালেমুত তানজিল : ১/১৪৫)।
- See more at: Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।