ইকোনোমিস্ট
১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ কয়েক কোটী মানুষ মেজর জিয়ার পাঠ করা স্বাধীনতা ঘোষনা শুনেছিলেন; কিন্তু ৪০০/৫০০ মানুষ তাঁকে সে সময় দেখেছিলেন: এঁরা ছিলেন বেংগল রেজিমেন্ট, ইপিআর, রেডিওর কয়েকজন কর্মচারী ও ৪/৫ জন আওয়ামী লীগ নেতা।
এর পর ৯ মাসের যুদ্ধের সময়, জেড-ফোর্সের ৫০০ সৈনিক ও অফিসার ছাড়া কেহ তাঁর কথা জানতো না, কেহ তাঁকে চিনতো না। ১ নং সেক্টরের কমান্ডার থাকাকালীন তিনি সেক্টর হেডকোয়াটারে থাকতেন না, সেখানে ছিলেন মেজর রফিক; তিনি জেড-ফো্সের সাথে পজিশনে বা জেড-ফোর্সের হেড-কোয়াটার, 'পংবাড়ীতে' থাকতেন; কোন রাজনীতিবিদের সাথে দেখা করতেন না: বিএলএফ কমান্ডার আবদুর রব জেড-ফোর্সের ছাত্র প্লাটুনের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন, জিয়া রবকে পংবাড়িতে আসার অনুমতি দেননি।
মেজর রফিক ১ নং সেক্টরের কমান্ডার হওয়ার পর, জিয়াকে ৯ নং সেক্টর কমান্ডার করার পর, তিনি বেশকিছু সময় ৯ নং সেক্টরে যাননি, সে সময় কর্ণেল রব ও কর্ণেল ওসমামী কথা বলার জন্য পংবাড়ী আসতে চেয়েছিলেন; জিয়া তাঁদের পংবাড়ী আসতে দেননি।
যুদ্ধের সময় তিনি সৈনিকদের সাথে থাকতেন, সৈনিকদের কথা শুনতেন।
সৈনিকরা যখন পংবাড়িতে জড়ো হতো, জিয়া তাদের কথা শুনতেন; তিনি সবার সাথে হ্যান্ডসেক করতেন; কথা বলতেন না, শুনতেন, মাথা নাড়তেন।
ক্যাপটেনদের মাঝে ক্যা: মাহফুজ ছিলেন তাঁর খুবই ঘনিস্ট, তাঁরা দু'জন তাঁবুর সামনে দাঁড়ায়ে আলাপ করতেন; চট্টগ্রামে মাহফুজের প্ল্যানেই প্রেসিডেন্ট জিয়া নিহত হয়েছিলেন। ক্যা: হামিদ, ক্যা: শামসু, ক্যা: আলী ও লে: খালিদের সাথে মেজরের ভালো সম্পর্ক ছিল; মেজর শওকত আলী ও ক্যা: ওলীর সাথে জিয়ার অফিসিয়েল সম্পর্ক ছিল; কিন্তু পরে, বিএনপি'তে এদের ২ জনকেই জিয়া বেশী ব্যবহার করেছিলেন।
যুদ্ধের পর, তাজুদ্দিন সাহেব ও শেখ সাহেব সবচেয়ে ভুল করলেন মেজর জিয়াকে আর্মিতে রেখে: আইএসআই এর অফিসারকে আর্মিতে রাখা যে কত বড় ভুল, তার প্রমাণ হলো দু'জনেই মেজরের হাতে প্রাণ হারালেন। মেজর জিয়া সরকারের যে কোন পদে থেকে শেখ সাহেবকে সাহায্য করতে পারতেন।
৯ মাস যিনি যুদ্ধ করেছিলেন জাতির জন্য, তাঁকে কেন জীবন ধারণের জন্য দ্বিতীয়বার জীবন যুদ্ধে যেতে হবে? জাতি কি তাঁর ভরণ পোষণ করতে পারতো না? জাতি তারঁজন্য কিছু করেনি, তাই নিজেই সবকিছু হাতে তুলে নিয়েছিলেন।
জিয়া সম্পর্কে যখন মানুষ কথা বলে, জিয়ার আদর্শ নিয়ে যখন কেহ রাজনীতি করে, আমার কাছে আরব্য উপন্যাসের গল্পের মতো মনে হয়: জিয়ার আদর্শ ছিল সৈনিকের আদর্শ, জিয়ার তন্ত্র ছিল জেনারেলের তন্ত্র: সৈরতন্ত্র। মানুষ যখন জিয়া সম্পর্কে কথা বলে, আমি অবাক হয়ে শুনি, জিয়া কি ওদের মানুষ হিসেবে গণ্য করতো? আমার ধারণ, জিয়া জেড-ফোর্সের বাহিরের কেহকে কোনদিন দাম দিতো না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।