সত্য পথের অনুসন্ধানি
খালেদা জিয়া রাগের স্বরে প্রেসের সামনে যে কথা গুলো বললেন তা শুনে বেশ অবাক হলাম। আমি স্বীকার করছি তার রাগার যথেষ্ট কারণ আছে। রাগের মধ্যে এবং হাসির মধ্যেই একজন মানুষকে ভালোভাবে জানা যায়। তখনই একজন মানুষের ভেতরের রূপ ফুটে উঠে। খালেদা জিয়ার ভেতরেও যে প্রতিহিংসা গুমরে কেঁদে উঠছে তাই আমরা প্রত্যক্ষ করলাম।
মানে এটাই: উনিও তাদেরকে চোখের পানি আর নাকের পানি এক করবেন। আমার কাছে উনার যে জিনিসটাকে খুব খারাপ লাগলো তাহলো: পেশাকে ছোট করে দেখা। পরিচিত জনের কাছ থেকে আগে জানলেও খুব একটা বিশ্বাস করতাম না উনি অহংকারী। উনি খুব একটা খেয়াল করেন না বাড়িতে কে কাজ করছে: তার নাম কি: বা গেইটে কে দায়িত্ব পালন করছে: সে খেয়েছে কিনা এসব। বিপরীতে শেখ হাসিনা নাকি বাসায় ঢুকতে এবং বের হতে গার্ডদের নাম ধরে ডাকেন: খেয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করেন।
মেজরের বউ থেকে রাজনীতিতে এসেছেন তাও কম দিনের নয়। কিন্তু তিনি এখনো মনে হয় "ব্লাডি সিভিলিয়ান" থিওরী থেকে খুব একটা বের হতে পারেন নি। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে যে ভাষায় কথা বলেছেন সেটা খুবই বেদনাদায়ক। পুলিশ কনষ্টেবলরা না হয় ছোট চাকুরী করে তাই বলে তাদেরকে এমন ধমক? যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল হক এই রকম ভাবে কর্মচারিদের প্রেসের সামনে নাজেহাল করতেন তখনো আমি কষ্ট পেয়েছি। মানুষের ব্যবহার কতটা ভালো সেটার মাপকাঠি হলো -তিনি তার সিনিয়রদের সাথে বা ধনীদের সাথে কি রকম ব্যবহার করেন সেটার উপরে নয় , তিনি তার অধস্তন অথবা গরীবের সাথে কেমন ব্যবহার করেন তার উপর।
তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন পুলিশরা আসলে ভিক্টিম। তাদের চাকুরী বাঁচাতেই তারা উপরের নির্দেশ পালন করে। তার দুই আমলেই একই কাজ করতে হয়েছে পুলিশকে।
খালেদা জিয়াও জানেন কেউ বুঁকের পাঠা দেখাতে তার বিরুদ্ধে যায়নি। বাংলাদেশে কেউ এতটা বুকের পাঠা তৈরী করে নাই যে খালেদা হাসিনার বিরুদ্ধে সরাসরি কোন কিছু করবে।
উনারাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দায়াময়ী উনারাই সবচেয়ে গড় মাদার। পুলিশের মেয়েটিও জানেন কয়েকদিন পরেই উনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তাই তিনি চরম অপমান সহ্য করেছেন এমনকি নিজ জেলা তথা মাতৃ জেলার নামে কেউ কিছু বললে সেও প্রভুকড হতে পারেন। দ্বিতীয় বারের মত তিনি উচ্চারণ করলেন বেয়াদব শব্দটি। আরেকবার সংসদে উচ্চারণ করে সমালোচনার মধ্যে পড়েছিলেন।
এর আগে শেখ হাসিনার সাথে ফোনালাপেও আমরা বুঝতে পেরেছিলাম হাসিনার থেকে খালেদা জিয়া মোঠেই কম নন। আরেকটা ব্যাপার হলো শেখ হাসিনা অপ্রস্তুত অবস্থায় বেশী বার প্রেস ফেস করেন । আনুপাতিক হারে খালেদা জিয়া খুব কম প্রেস ফেস করেন যার কারণে মনে হওয়া স্বাভাবিক হাসিনা বেশী মুখরা অথবা বেশী বেফাঁস কথা বলেন। কিন্তু আপনারা দেখুন যতবারই খালেদা জিয়া লিখিত বক্তব্যের বাইরে বক্তব্য রেখেছেন তত বারই বেঁফাস কথা এবং দম্ভ এবং অহংকার প্রকাশ করেছেন। তারপরে আমি মানুষের যে পারসেপশন সেটাকে শ্রদ্ধা করে বলবো শেখ হাসিনার থেকে উনি কম বলেন।
শেখ হাসিনার সাথে খালেদার তফাৎ আকাশ পাতাল নয় উনিশ বিশ হতে পারে।
আমার অবাক হবার অন্য কারণ গুলা হলো- একটি জেলা সম্পর্কে উনি যে ভাষায় কথা (গোপালী)বলেছেন সেটা আগামীর একজন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেশ আশংকার। বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনের জন্য যেখানে আমরা শেখ হাসিনার সমালোচনা করছি সেখানে তিনি একটি জেলার নাম পরিবর্তন কর ফেলবে ? আমি ধরে নিলাম সেটা তার রাগের কারণে বলা সেটা তিনি কখনো করবেন বলে মনে হয় না। কিন্তু এটা না করলেও আমরা যে আগামী বছর গুলাতে প্রতিহিংসার আগুনের বলি হবো সেটাতে কোন সন্দেহ নাই।
আমি একজন আওয়ামী সমর্থক বলেই কিনা জানিনা আমার কাছে তার ভাষণটি বেশ পীড়া দায়ক হয়েছে ।
আমি মাইনাস টু ফর্মুলা তথা বিরাজনীতির পক্ষে নই। কিন্তু মনে মনে বলি দু নেত্রীর ক্ষোভের আগুনেই কি জ্বলছে বাংলাদেশ তার মানুষ তার গরু মহিষ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।