বিস্মিত মাইকেল ক্লার্ক। ক্রিকেট দুনিয়াও কম বিস্মিত নয়। যে দলটা কয়েক মাস আগেই ৩-০ ব্যবধানে অ্যাশেজ হেরেছে ইংল্যান্ডের কাছে। সেই দলটাই কিনা মাস কয়েকের ব্যবধানে এতটাই দুর্দান্ত হয়ে উঠল, ইংল্যান্ড কোনো পাত্তাই পেল না! মেলবোর্ন টেস্টের চতুর্থ দিনেই ৮ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এ জয় অনেকগুলো দিকের উন্মোচন করার পাশাপাশি কিছু ইতিহাসকেও সামনে নিয়ে এসেছে।
সিডনি টেস্টে অন্তত ড্র পেলেও এটা হবে অসিদের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জেতা ষষ্ঠ অ্যাশেজ!
মেলবোর্নে ইংল্যান্ডের ২৫৫ রানের প্রথম ইনিংসের পর অসিদের ২০৪ রান ভিন্ন ইঙ্গিতই দিচ্ছিল। তৃতীয় টেস্টের পর মাইকেল ক্লার্ক হোয়াইটওয়াশের যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা অনেকটা বাহুল্যই মনে হচ্ছিল। তবে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে অসিরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংলিশরা ১৭৯ রানেই থেমে যায়। নাথান লায়ন ৫ উইকেট নিয়ে ধস নামান ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে।
তারপরও অসিদের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩১ রান। চতুর্থ ইনিংসে এই রানও কম মনে হয়নি। তবে ক্রিস রজার্সের ১১৬ রানের চমৎকার এক ইনিংসে ৮ উইকেটের জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য দুই ইনিংসে মোট ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন অসি বোলার জনসনই। মেলবোর্ন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার জয় আরও পাঁচটি অ্যাশেজকে আলোচনায় টেনে এনেছে।
১৯২০-২১ অ্যাশেজে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এর ঠিক ৮৬ বছর পর ২০০৬-০৭ অ্যাশেজে রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দ্বিতীয়বারের মতো উপহার দিয়েছিল ইংলিশদের। অবশ্য এরপরের তিনটি অ্যাশেজ জয় করে এর প্রতিশোধও নিয়েছে ইংল্যান্ড। তবে প্রতিশোধ একটা হোয়াইটওয়াশের ঘা শুকানোর আগেই আরেকটা হোয়াইটওয়াশের মুখে পড়ে গেল তারা! টানা চার ম্যাচ জয়ের পর মাইকেল ক্লার্কের দল তো আরেকটা ম্যাচ জয় করতেই পারে! সিডনি টেস্টে নিদেনপক্ষে ড্র হলেও এটা হবে অস্ট্রেলিয়া সেরা ষষ্ঠ অ্যাশেজ। এর আগে দুইবার হোয়াইটওয়াশের ঘটনা ছাড়া তিনবার ৪-০ ব্যবধানে অ্যাশেজ জয়ের রেকর্ড রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার।
১৯৪৮ সালে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের মাটিতে ৪-০ ব্যবধানে জয় করেছিল অ্যাশেজ। ১৯৫৮-৫৯ অ্যাশেজে রিচি বেনাডের অস্ট্রেলিয়া নিজেদের মাটিতে একই ব্যবধানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ডকে। ১৯৮৯ সালে অ্যালান বোর্ডারের অস্ট্রেলিয়া ৪-০ ব্যবধানে ইংল্যান্ডের মাটিতে জয় করেছিল অ্যাশেজ। অতীতের এই রেকর্ডগুলোই বার বার ভেসে উঠছে নিশ্চয়ই মাইকেল ক্লার্কের চোখে। তৃতীয় টেস্ট জয় করে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের যে হুমকি দিয়েছিলেন ক্লার্ক, তা এখন খুবই সম্ভব বলেও মনে হয়।
দেখা যাক, ক্লার্কের দল তা পারে কিনা।
তবে মেলবোর্ন টেস্ট জয়ের পর ক্লার্ক বলছেন, '৪-০ অসাধারণ বিষয়। এটি আমাদের ক্রিকেটারদের মনোবল অনেক বৃদ্ধি করবে। আরও ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণাও পাবে তারা। ' ক্লার্কের এই আরও ভালো কিছু নিঃসন্দেহে হোয়াইটওয়াশেরই ইঙ্গিত দেয়।
দেখা যাক, ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া সিডনি টেস্টে ক্লার্করা এই সফলতা ধরে রাখতে পারেন কিনা!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।