প্রাচীনকালে ধূমকেতুকে মনে করা হত অশুভ ছাঁয়া। বর্তমান জ্ঞান-বিজ্ঞানের চরম বিকাশের যুগে এসে এসব ধারণাকে অন্ধ কুসংস্কারের ঝুলিতেই পুরবেন শিক্ষিত সমাজ। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণার পর ধূমকেতুকে অশুভ ছায়া মনে করার যথেষ্ঠ কারণ তারা খুঁজে পেয়েছেন। সেই সব তথ্য থেকেই ১৫০০ বছর আগের এক মহা দুর্ভিক্ষের কারণ হিসাবে মনে করা হচ্ছে হ্যালির ধূমকেতুকে।
হ্যালির ধূমকেতু বিজ্ঞানীদের অন্য রকম এক আগ্রহের বস্তু।
জলবায়ু সহ মানুষের জীবনযাত্রা পরিবর্তনের কারণ হতে পারে ধূমকেতুটি। তবে এসবই অনুমান। এসবের কোন বিজ্ঞানসম্মত শক্ত ভিত্তি নেই। কিন্তু, ১৫০০ বছর আগে এক দুর্ভিক্ষের সাথে হ্যালির ধূমকেতুর সম্পর্ক মিলিয়ে দেখতে গিয়ে অবাকই হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ঐ সময়ে বায়ুমন্ডলে ব্যাপক পরিবর্তন তৈরি হয় এবং তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে পাল্টে যায়।
যার ফলশ্রুতিতে ফসল ফলনে দেখা দেয় বিপর্যয়। যা দুর্ভিক্ষ ডেকে আনে। বায়ুমন্ডল এবং তাপমাত্রার এই হঠাৎ পরিবর্তন কেন হলো তা বিশ্লেষণ করে দেখছেন গবেষকরা। ৫৪১-৫৪২ সালে যে “জাস্টিনিয়ান প্লেগ” দেখা দেয় ইউরোপে তার পেছনেও এই দুর্যোগ কাজ করেছে বলে মনে করা হয়।
গ্রিনল্যান্ডের মাঝে ৫৩৩ থেকে ৫৪০ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া বরফের স্তরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ বায়ুমন্ডলীয় ধুলার উপস্থিতি পাওয়া যায়।
প্রচুর এই ধুলার সবটাই বায়ুমন্ডলীয় ধুলা নয়। বায়ুমন্ডলীয় ধুলা থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্যের ধুলা ঐ বরফের ভেতর পাওয়া যায়। যার উৎস নিয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন। তারা অনুমান করছেন, ধূমকেতুই হবে এর উৎস। কিন্তু এর পেছনে বরফ চাইয়ের নিচে পাওয়া ধুলা ছাড়া আর কোন শক্ত যুক্তি পাওয়া যায়নি।
ওই সময়ে কোন কারণ ছাড়াই বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছিল।
প্রাচীন মানুষদের নানা ধরণের কুসংস্কার কাজ করতো। উল্কাপাত, ধূমকেতু, সূর্যগ্রহণ ইত্যাদি খারাপ লক্ষণ হিসাবে ধরা হত। হ্যালির ধূমকেতুকেও মনে করা হয় ১৫০০ বছর আগের সেই মহাদুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে। হ্যালির ধূমকেতু প্রতি ৭৫-৭৬ বছর পরপর পৃথিবীর আকাশে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
বিখ্যাত ইংরেজি জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডমান্ড হ্যালির নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে। সর্বশেষ ধূমকেতুটি দৃশ্যমান হয় ১৯৮৬ সালে। আগামী ২০৬১ সালে আবার দেখা যাবে ধূমকেতুটি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।