অহন থিক্কা সব শয়তানরে দৌরের উপর রাখুম।
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতা উনার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ মুবারক ও সালাম মুবারক।
বাংলাদেশে কথিত গৃহযুদ্ধের বিষবাষ্প ছড়াতে প্রচারে নেমেছে একাধিক পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান ও সংবাদ মাধ্যম।
যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর অর্থায়নে পরিচালিত নীতিগবেষণা সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ’ থেকে শুরু করে ‘ফরেইন পলিসি’ নামের একটি বিশেষায়িত ম্যাগাজিন এই প্রচারণায় নেমেছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি ‘ফরেইন পলিসি’ ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করেছে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশসহ আরও নয়টি দেশের গৃহযুদ্ধ সারা পৃথিবীকেই অস্থিতিশীল করে তুলবে।
পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, বাংলাদেশকে ঘিরে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ ও ফরেইন পলিসি ম্যাগাজিনের মতো প্রতিষ্ঠানের কর্মকা- বিশেষ অর্থ বহন করে। এদের প্রচারিত কথিত গৃহযুদ্ধের আশঙ্কাকে যেমন সন্দেহের চোখে দেখার কারণ আছে তেমনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ ও ফরেইন পলিসি ম্যাগাজিনের উদ্দেশ্য নিয়েও সন্দেহ করার কারণ আছে।
ফরেইন পলিসি ম্যাগাজিন বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপ করার পক্ষে জনমত গঠন করে আসছে।
এরই অংশ হিসেবে, উপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়া দেশগুলো আত্মনিয়ন্ত্রণের যোগ্যতা রাখে না এমন একটি মতামতকেও প্রতিষ্ঠা করার লড়াইয়েও নেমেছে ম্যাগাজিনটি। গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফরেইন ম্যাগাজিনটি বস্তুনিষ্ট সংবাদ, বিশ্লেষণ উপস্থাপন করার চেয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপকে বৈধ করার জন্যই সাংবাদিকতা করে থাকে।
বাংলাদেশে কথিত যুদ্ধ নিয়ে ফরেইন পলিসি ম্যাগাজিনের মতো আরও কয়েকটি পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান বেশ সক্রিয় আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। সংঘাত প্রশমনে নয়, সংঘাত উসকে দেয়ার ক্রীড়নক হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কুখ্যাতি আছে পশ্চিমা বিশ্বে।
এই প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমকে সন্দেহের চোখে দেখেন খোদ পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা। ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত হয়না। বরং এই সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রভাবশালী পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত হয়। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি কোন সংঘাতপ্রবণ এলাকায় সহিংসতা বাড়িয়ে তোলার মিশনে সামনের সারিতে থেকে কাজ করে বলেও অভিযোগ আছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের অতীত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির প্রথম কাজ হচ্ছে কোন একটি সংঘাত প্রবণ দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলোর একটিকে ভালো আর একটিকে খারাপ হিসেবে চিহ্নিত করে।
এরপর ভালটিকে অস্ত্র সরবরাহ করার মাধ্যমে সহিংসতাকে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দেয়া। পশ্চিমা নাগরিকদের মতে, সংগঠনটি সিরিয়া, লিবিয়ার বিদ্রোহীদের বিদেশী অস্ত্র সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্র তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। এ কারণে, এই প্রতিষ্ঠানটির পূর্বাভাস থেকে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রকৃত পূর্বাভাস পাওয়া যায়না। বরং পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত সবদেশের সংবাদ মাধ্যমেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট এবং বিরোধী দলের উপর সরকারের দমন-নিপীড়নের সংবাদ ও ছবি।
এ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের মধ্যে গতকাল ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কমনওয়েলথ দেশসমূহের পর্যবেক্ষক না পাঠানোর বিষয় ওঠে এসেছে। সেই সাথে সুপ্রিম কোর্টের ফটকে আইনজীবীদের উপর পুলিশের হামলা এবং সরকারি দলের সমর্থকদের হাতে বিরোধী দল সমর্থক নারী আইনজীবীদের উপর নির্মম নির্যাতনের ছবিও গুরুত্ব সহকারে ছাপা হয়েছে।
কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘আজকাল’ পত্রিকার প্রধান সংবাদের শিরোনাম ছিল, বাংলাদেশে প্রায় গৃহযুদ্ধ। এতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ভুয়া ভোটের দিন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর সংবাদটির এক স্থানে বলা হয়েছে, ঢাকায় যা দেখা গেল তা প্রায় গৃহযুদ্ধই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশে আদৌ কথিত গৃহযুদ্ধের কোন বাস্তবতা আছে কিনা তা অন্য বিবেচনার বিষয়। কিন্তু ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ’ থেকে শুরু করে ‘ফরেইন পলিসি’ তথা ভারতের পত্রিকায়গুলো এই কর্মকা-গুলো থেকে বাংলাদেশকে ঘিরে পশ্চিমা কূটনীতিকরা তথা হিন্দু ও ইহুদীরা চর্মচক্ষুর অন্তরালে কি করছে এবং ভবিষ্যতে কি করবে তা অনুমান করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কারণ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর তথা মূলত ইহুদীদের বৈদেশিক নীতি-নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উল্লেখ্য, ইহুদীরা সারা দুনিয়ায় তাদের আধিপত্য বিস্তার এবং মুসলমান উনাদের বিপর্যস্ত করার উদ্দেশ্যে প্রায় দুইশ বছর পূর্বেই The Protocols of the Learned Elders of Zion নামক এক গভীর ষড়যন্ত্রমূলক বই রচনা করে; যা ১৯১৭ সালে প্রকাশিত হয়। এতে ‘প্রেস ও সংবাদপত্রের ভূমিকা’ নামক পরিচ্ছদে লেখা আছে, “......আমরা প্রেসের সঙ্গেও নিম্নরূপ ব্যবহার করবো।
প্রেসের বর্তমান ভূমিকা কি? মানুষের ভাবাবেগকে উত্তেজিত করা বা ক্ষেপিয়ে তোলার কাজই প্রেস করে যাচ্ছে। আমাদের অথবা অন্য কোনো স্বার্থপর দলের স্বার্থেই প্রেস এ ভূমিকা গ্রহণ করেছে। প্রেস সাধারণ প্রাণহীন, ন্যায়নীতি বিরোধী ও মিথ্যা প্রচারের কাজে নিয়োজিত। প্রেস কার স্বার্থে কাজ করছে জনগণ তা বুঝতেই পারে না। .....
.....যদি এখনই আমরা গয়সমাজের লোকদের মন-মগজে এতটা প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়ে থাকি যে, এরা বিশ্ব পরিস্থিতি তাদের নাকের ডগায় আমাদের লাগানো রঙিন চশমার মাধ্যমেই দেখতে বাধ্য হয়।
....
....আমাদের সংবাদপত্রের সকল প্রকার সম্ভাব্য রঙ ধারণ করবে। তাদের মধ্যে সামন্তবাদী, প্রজাতন্ত্রী, বিপ্লবী এমনকি নৈরাজ্যবাদী পর্যন্ত দেখা যাবে। অবশ্য এ অবস্থা ততদিন থাকবে যতদিন শাসনতন্ত্র টিকে থাকবে। ভারতবাসীদের তৈরি বিষ্ণুদেবের মূর্তির ন্যায় আমাদের সংবাদপত্রগুলোর একশখানা হাত থাকবে এবং প্রতিটি হাতের এক একটি আঙ্গুল জনমতের কোন না কোন একটি সুর বাজাতে থাকবে। যখন কোনো শিরার গতি বেড়ে যাবে তখনই ওই হাতগুলো আমাদের উদ্দেশ্যের অনুকূলে পরিবেশ গড়ে তোলার কাজে অগ্রসর হবে।
আর সত্য কথা এই যে, উত্তেজিত রোগী বিচার বুদ্ধি হারিয়ে ফেলে এবং এ জন্যই অতি সহজে অপরের পরামর্শ গ্রহণ করে। এ নির্বোধেরা মনে করে যে, এদের পক্ষীয় একটি সংবাদপত্রের মতামত এরা আবৃত্তি করছে। প্রকৃতপক্ষে এরা আমাদেরই মতামত অথবা আমাদের উদ্দেশ্য সিদ্ধির সহায়ক মতামতই আবৃত্তি করে থাকে। ভ্রান্তির দরুন এরা মনে করবে যে, এদের দলীয় মুখপত্রের মতবাদ অনুসরণ করেই এরা অগ্রসর হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এরা কিন্তু আমাদেরই পতাকার পেছনে এগিয়ে আসছে।
....”
উল্লেখ্য, ইহুদী প্রটোকলে কথিত মুসলমান বিরোধী ষড়যন্ত্র ও প্রচারণা এবং আজকের বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা মূলত একই। যুক্তরাষ্ট্র তথা ইহুদীদের একটা বড় অভ্যাস হলো কোন কিছু করার আগে তারা ওই বিষয়টি ওই দেশের জনমানসে প্রকারান্তরে গভীরভাবে ঢুকিয়ে দেয়। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষিতেও গৃহযুদ্ধ বাধানোর জন্য তারা সেই অপচেষ্টাই করে যাচ্ছে। অতএব, বাংলাদেশীকেই তথা ৯৭ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীকেই এ বিষয়ে সম্যক অবগত, সর্বাধিক সচেতন ও সর্বোচ্চ সক্রিয় হতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের কালো হাত দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙ্গে দিতে হবে।
মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত মুবারক হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।