আসুন গণিত শিখি!!!
প্রসঙ্গঃ ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন! (জাতীয় তামাশা)
# মোট ভোটার ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৭
# মোট আসন ৩০০ টি।
# বিনা প্রতিদন্ধীতায় নির্বাচিত ১৫৩ আসনে। মানে ৪ কোটি ৮০ লাখ ২৭ হাজার ৩৯ জনের ভোটাধিকার হরণ হয়ে গিয়েছিল। যা মোট ভোটের ৫২.২২ শতাংশ।
# নির্বাচন হয়েছে ১৪৭ আসনে।
মানে ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ জনের ভোটাধিকার ছিল। যা মোট ভোটের ৪৭.৭৮ শতাংশ।
গতকাল সারাদিন যা হয়েছে তা সবাই দেখেছে। আন্তর্জাতিক মহল আগেই জানত এইটা একটা তামাশা হবে। হয়েছেও তাই।
সেই কারনে কোন পর্যবেক্ষক পাঠায়নি তারা। নিজের টাকায় ইসি ভুটান থেকে ২ জন, ভারত থেকে ২ জন পর্যবেক্ষক এনেছে। কিন্তু তামাশা নিয়ে তাদের কি পর্যবেক্ষন তা কেউ পর্যবেক্ষন করেনি।
ফেয়ার ইলেকশন মনিটিরিং এ্যালায়েন্স (ফেমা ) এর মতে রোববারের নির্বাচনে সব মিলিয়ে ১০ শতাংশেরও কম ভোটার ভোট দিয়েছেন। সারাদিন ভোটারের যা আকাল দেখলাম তাতে এই ফিগারও আমার কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকেছে।
যদি ফেমার (FEMA) কথাই ধরি, মানে ১০ শতাংশ ধরি তাহলে মোট ভোট দিয়েছেন-
৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ জনের ১০ পার্সেন্ট।
মানে ভোট পড়েছে ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৯৩.৮ টি।
তাহলে এই নির্বাচনে সিলেকশন+ইলেকশন মিলে সর্বমোট ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৭ জন ভোটারের মধ্যে মাত্র ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৯৩.৮ জনের প্রত্যাক্ষ সমর্থন পেয়েছে নির্বাচিতরা!!!
তার মানে বাকী ৮ কোটি ৭৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৩ জনের মতামতের দরকার হয় নাই তাদের!!!
মানে সর্বমোট ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৭ ভোটের মাত্র ৪.৭৭৭ পার্সেন্ট প্রত্যাক্ষ সমর্থন পেয়ে ওরা সংসদ গঠন করতে যাচ্ছে???!!!!!!!
বাকী ৯৫.২২২ পার্সেন্ট ভোটাধিকার প্রাপ্ত জনগণকে শাসন করবে ওই মাত্র ৪.৭৭৭ পার্সেন্ট প্রত্যাক্ষ সমর্থন পাওয়া প্রতিনিধিরা !!!!!!
মাথাই নষ্ট হয়ে গেছে ম্যান!!! এই হিসাব কষতে গিয়ে!!!
অনেকে বলবেন ফেমা’র (FEMA) এই হিসাব ধরে এই যে হিসাব করলেন এইডা কি ঠিক হল???
গতকাল সারাদিনের অবস্থা দেখে কোন পাগল বলবে যে এই নির্বাচনে ১০ পার্সেন্ট এর বেশী ভোট কাস্ট হয়েছে??? আমি তো মনে করি এই ১০ পার্সেন্ট ই হয়েছে কিনা সন্দেহ। কিন্তু ফেমার জরিপই ধরে যা দেখলাম তাতে তো গণতন্ত্রের তেরটা বেজে গেছে!!!
[[[রাজধানীর গুলশানে একটি কেন্দ্রে গতকাল বিকাল ৪ টায় ভোট গ্রহণ শেষে সর্বমোট ভোট কাস্ট হয়েছে ১৩৬ টা। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৫০০ কিন্তু ৪ টার পরে নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে বাধ্য করা হয়েছে ৭০০+ ভোট দেখাইতে।
এবং লিখতে। এবং লিখার সময় যেন কথায় না লিখা হয় এবং অঙ্কে লিখা হয় সেজন্যে সারা দেশে উপরের মহল থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারন কথায় লিখলে পরে কারচুপি করা যাবে না। কেটে এডিট করতে হবে। কিন্তু অঙ্কে লিখলে সামনে পিছনে ইচ্ছেমতো সংখ্যা বসিয়ে যা ইচ্ছা এমাউন্ট দেখানো যাবে ভোট হিসাবের সময়।
একজাম্পলঃ ‘৭০০’ লিখলে সামনে পিছনে ইচ্ছেমতো সংখ্যা বসিয়ে যা ইচ্ছা দেখানো যাবে। কিন্তু ‘সাতশত’ লিখলে কাটাছেড়া করতে হবে। - বলেছেন ‘নুরুল কবির। নিউ এজ সম্পাদক। গতরাতে NTV তে।
একই রকম অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক আশরাফ কায়সার RTV তে। ]]]
চিন্তা করে দেখুন, গতকাল ভোটের গনতন্ত্র কিভাবে ধর্ষিত হয়েছে!!!
ঢাকার বুকে গতকাল কিছু টিভি চ্যানেলের ক্যামেরায় যা ধরা পড়েছে, একবার ভেবে দেখুন বাহিরের অবস্থা কি? যেখানে টিভি ক্যামেরা যায় নি সেখানে কি অবস্থা? যেখানে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত হাতে গোনা ভোট পড়েছে সেখানে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ভোটের অংক কোথাও কোথাও চার অংক ছুঁয়েছে!!! আহ প্রহসন! বাহ প্রহসন!!!
তাহলে কিভাবে ধরা যায় যে ১০ শতাংশের বেশী ভোট পড়েছে? দিন শেষে টিভি ক্যামেরার সামনে হাস্যোজ্জল মুখে কিছু মিথ্যার ফুলঝুড়ি শোনালেন কিছু ‘দলদাস’রা। বললেন তারা সন্তুষ্ট!!! দেশবাসীকে ধন্যবাদও জানালেন!!!
বললেন, প্রমান হয়েছে "উনার" অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব!!! হায়রে রাজনীতি। জাতিকে ওরা কি সব গেলাচ্ছে!!! ওরা বুঝে না জাতি এখন অনেনেক চালাক।
প্রহসনের নির্বাচন করে মাত্র ৪.৭৭৭ পার্সেন্ট ম্যান্ডেট নিয়ে ওরা বলে সমঝোতা হলে হবে ২০১৯ সালে!!!
এবার আসুন ভারতের চোখে দেখি এই নির্বাচন।
মানে আওয়ামী লীগের চোখে দেখি কারন সুত্রানুযায়ী আমরা জানি, আওয়ামী লীগের চোখ = ভারতের চোখ।
সজীব ওয়াজেদ জয় কাল রাতে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন সংবাদ মাধ্যমগুলো যে রিপোর্ট প্রকাশ করছে তাতে ভোটারদের ভোটদানের হার এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০% বলছে, যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
আমি বুঝলাম না রাতে ভোট দানের হার কিভাবে বাড়ছে???
যদি তার ৪০ পার্সেন্ট ই ধরি তাহলে ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ জনের ৪০ পার্সেন্ট। মানে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭৫ জন ভোট প্রদান করেছেন!!!
ক্যামনে??? মানে এত্তো লোক ক্যামনে ভোট দিছে? রাতের বেলায় ভোট দানের হার বাড়াইয়া??? সবাই বুঝে গেছেন নিশ্চয়ই। ।
আইচ্ছা, তার ৪০% আবারো ধরি ( কিন্তু ক্যাম্নে? এই প্রশ্ন বারবার উঠছেই )তাহলে সর্বমোট ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৭ জন ভোটের মধ্যে মাত্র ১ কোটি ৭৫ লাখ ৭ হাজার ৫৭৫ জনের প্রত্যাক্ষ সমর্থন পেয়েছে নির্বাচিতরা!!
তাহলে বাকী ৭ কোটি ৪৩ লাখ ৯০ হাজার ৪০২ জনের মতামতের দরকার হয় নাই তাদের!!!
মানে এই সিলেকশন+ইলেকশনে সর্বমোট ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৭ জন ভোটের মাত্র ১৯.১১০ পার্সেন্ট প্রত্যাক্ষ সমর্থন পেয়ে ওরা সংসদ গঠন করতে যাচ্ছে???!!!!!!!
বাকী ৮০.৮৮৯ পার্সেন্ট ভোটাধিকার প্রাপ্ত জনগণকে শাসন করবে ওই মাত্র ১৯.১১০ পার্সেন্ট প্রত্যাক্ষ সমর্থন পাওয়া প্রতিনিধিরা !!!
মাথাতো আবারো নষ্ট হয়ে গেছে ম্যান!!!
# যে সংবিধান দেশের ৯৫.২২২ পার্সেন্ট ভোটাধিকার প্রাপ্ত জনগণের (ফেমার FEMA মতে গতকালের ভোটের % হিসাব অনুযায়ী) অথবা ৮০.৮৮৯ পার্সেন্ট ভোটাধিকার প্রাপ্ত জনগণের (সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতে গতকালের ভোটের % হিসাব অনুযায়ী ) মতের তোয়াক্কা করে না, সেই সংবিধান সমুন্নুত রাখার দোহাই দিয়ে তামাশা এই দেশবাসী প্রত্যাক্ষান করল। । জনগণের চাওয়া পাওয়াই সংবিধান। জনগণের আশা আকাঙ্খাই সংবিধান। সুতারাং বিষয় পরিষ্কার।
।
যা করার অতি দ্রুত করুন। জনমত আমলে নিল। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন। আখেরে আপনাদেরই (আ.লীগ এরই) ভাল হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।