ধোঁয়াশা অনেকটা কেটেছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) মিটিংয়ের পরই। পাকিস্তানের আপত্তি থাকলেও এবার বাংলাদেশেই হচ্ছে এশিয়া কাপ ক্রিকেট। তবে মাঠে গড়ানো নিয়ে যতটুকু শঙ্কা রয়েছে তা কেটে যাবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরের পর। সব কিছু ঠিক থাকলে ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসার কথা লঙ্কানদের। ক্রিকেট বোর্ডের কাছে এখন তাই বড় চ্যালেঞ্জ শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়ে।
বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। তবে আসার ব্যাপারে তাদের ইচ্ছা আছে শতভাগ, তেমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাই কমিশনার শারদ কুমার। বেসরকারি এক টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের এই সমস্যা রাজনৈতিক। এখানে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেনি, তাই শ্রীলঙ্কান দলের বাংলাদেশ সফরে কোনো বাধা নেই। শারদ কুমার বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ অনেক বেশি ক্রিকেটকে ভালোবাসে।
তাছাড়া এর আগে গত এশিয়া কাপে দেখেছি এখানকার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা এক জায়গায় বসে খেলা দেখেন। এটা একটা ইতিবাচক দিক। আশা করি, এবারও সমস্যা হবে না। ' শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল যথা সময়েই বাংলাদেশে আসবে বলে মনে করেন লঙ্কান হাই কমিশনার।
শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও।
তিনি বলেন, 'শ্রীলঙ্কা সিরিজের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। আমি যত দূর জানি শ্রীলঙ্কা এখানে আসতে চায়। তাছাড়া আমাদের নিরাপত্তা নিয়েও কোনো সমস্যা নেই। প্রত্যেক দেশের কাছে নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, কোনো সমস্যা হবে না।
তবে এখন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ শ্রীলঙ্কা সিরিজ। শুধু শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশে আসলেই হবে না, সিরিজটা যেন সফলভাবে সম্পন্ন হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। '
২০০৯ সালে পাকিস্তানের লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায় জঙ্গীরা। ৮ জন সাধারণ মানুষ নিহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান ক্রিকেটাররা। সে কারণেই নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় লঙ্কান ক্রিকেটাররা।
তবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর হয়তো নিরাপত্তা নিয়ে আর কোনো ধোঁয়াশা থাকবে না। আর শ্রীলঙ্কা সিরিজটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারলে এশিয়া কাপ নিয়েও কোনো দুশ্চিন্তা থাকবে না। তবে পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত আসবে কিনা তা নিয়ে এক সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়। পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব পাস হওয়ার হলে বাংলাদেশে শুরু হয় পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন।
সে কারণেই বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছে না পাকিস্তান ক্রিকেট দল। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের মিটিংয়ে চেয়েছিল, যাতে বাংলাদেশে এশিয়া কাপ না হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। তাছাড়া এসিসি বাংলাদেশে এশিয়া কাপ আয়োজনের পক্ষে।
পাকিস্তান বাংলাদেশে আসবে কি আসবে না, সে ব্যাপারে পিসিবি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি।
তবে বিসিবি আশাবাদী শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ক্রিকেট দল আসবে। তারা এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। তাই চ্যাম্পিয়ন দলকে ছাড়া টুর্নামেন্টের উজ্জ্বলতা এতোটুকুও ম্লাণ হোক -চায় না বিসিবি। সে কারণেই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতাও চলছে। তবে ডেইলি মিররের এক প্রতিবেদনে পিসিবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নেজাম শেঠীর ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, পাকিস্তান এশিয়া কাপে খেলবে কিনা তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত নয়।
পিসিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হয় কিনা। কারণ এর ওপরই নির্ভর করছে এশিয়া কাপে আমাদের অংশ নেওয়া না নেওয়া। পিসিবি কিংবা পাকিস্তান কূটনৈতিক অফিস কোনো ক্রমেই ক্রিকেট দলের নিরাপত্তার বিষয়টি হালকাভাবে দেখতে পারে না। '
এসিসির প্রধান নির্বাহী আশরাফুল হক মনে করেন, মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর পাকিস্তানের আপত্তি করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, 'যে সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়, সেখানে পাকিস্তানও উপস্থিত ছিল।
সেই সভায় পিসিবি এসিসির সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো আপত্তি জানায়নি। ' তবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও চায় এশিয়া কাপে অংশ নিক পাকিস্তান। বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা মিররকে জানিয়েছেন, 'যদিও এটা নির্ভর করছে উভয় দেশের বোঝাপড়ার ওপর। তবে আমরা আশা করছি, এই টুর্নামেন্টে পাকিস্তান অংশগ্রহণ করবে। ' তবে পাকিস্তান এশিয়া কাপে খেলবে কিনা তা জানা যাবে আগামীকালই।
আইসিসির সভাতেই হয়তো পাকিস্তান তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।