শুভেচ্ছা
মাননীয় বিরোধী দলীয় নেত্রী,
আপনি সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকুন বা না থাকুন, আপনি অবশ্যই দেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী। আপনার দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় সরকারের ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী রূপটি ন্যাংটা হয়েছে ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনে। সেই সাথে প্রমান হয়েছে বিচারপতি খায়রুল হকের তত্বাবধায়ক সরকার বিরোধী ফর্মূলা ছিল ভ্র্ষ্ট এবং ভ্রান্ত। বাংলাদেশের বাস্তবতায় ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতায় রেখে কোন নির্বাচন কমিশন স্বাধীনতা পেতে পারে না। এই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ব্যবস্থাকে বাংলাদেশে ততদিন রাখতে হবে যতদিন না গনতন্ত্র এবং আইনের শাসন দেশে পোক্ত হয়।
যেসব দেশে সুশাসন শেকড় গেড়ে বসেছে সেসব দেশে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। কিন্তু বাংলাদেশে এটা এখনও সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সে মানে পৌছায় নি। এখানে সরকারী দলের ক্যাডাররা সবসময়েই আইনের বাইরে থাকে। নির্বাচনকালীন তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় জনগনের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন করা হয় না।
জন নির্বাচিতদের দ্বারা রচিত সংবিধান অনুযায়ী তারা নির্বাচন পরিচালনা করেন। বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন গুলো শুধু তাদের দ্বারা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচনকালীন দায়িত্বের বাইরে যাতে না যেতে পারে সেইরকমটাই হওয়া উচিত ছিল রায়ের বৈশিষ্ট। কিংবা তত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের গ্রহনযোগ্যতার রূপরেখা কি হতে পারে সেটি নিয়ে তিনি দিক নির্দেশনা দিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে খায়রুল হক সেই ব্যবস্থাকেই উঠিয়ে দেবার পক্ষে মত দেন।
যার ফলাফল আজকের জাল ভোট সম্বলিত ভোটারবিহীন ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন।
তামাশার এই নির্বাচনকে বাতিল করতে জান বাজী রেখে মাঠে নেমেছে বিরোধী দলের কর্মীরা। আওয়ামী সমর্থকরাও ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে নির্বাচনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, বিরোধী দলের নেতৃত্বের আচরন। তাদের কাউকে মাঠে পাওয়া যায় না।
তারা নাকি গা বাচিয়ে চলছেন যাতে সরকারের রোষানলে পড়তে না হয়। দেশের আনাচে কানাচে যেখানে বিরোধী দলের কর্মীরা জীবন দিচ্ছে অকাতরে, সেখানে বিরোধী দলের নেতৃত্বের এরকম আচরন অতীব লজ্জাজনক।
এর শেষ পেরেকটি দেখলাম আজকের পত্রিকায়। খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হচ্ছে। থমকে গেলাম খবরটি পাঠ করে।
তিনি কি সত্যই একজন দেশ নেত্রী? যদি তাই হন, তবে দেশকে নিরাপত্তাহীনতায় রেখে তিনি নিজে কি করে নিরাপত্তা চাইতে পারেন সরকারের কাছে? যে সরকারের স্বৈরাচারী আচরনে জন গনের জীবনে উঠেছে নাভিশ্বাস, সে সরকারের কাছে কেন তিনি নিরাপত্তা চাইবেন। বরং তার উচিত ছিলো নিজদলের কর্মীদেরকে নিজের নিরাপত্তায় নিযুক্ত করা। তার নিরাপত্তার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দিতে চাই না। আন্দোলনে কলাগাছ হলেও নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য কেন তিনি এমন সরকারের কাছে হাত পাতবেন যে সরকারকে তিনি নিজেই অবৈধ বলে দাবী করছেন?
খালেদা যেহেতু সংসদীয় দলের বিরোধী দলীয় নেত্রী নন, তাই বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা হারাচ্ছেন।
তাহলে কি ধরে নেব শুধু মাত্র সুযোগ সুবিধাই উনার কাছে কাম্য ছিল? জনগনের ভোটের অধিকারের বিষয়টি কি শুধুই ছিল উনার লিপ সার্ভিস?
খালেদা, আপনি যদি দেশনেত্রী হতে চান তবে আপনাকে ত্যাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।