আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জানুয়ারী ২, ২০১৩: দুপুর ১২টা ৫২

আমার পরিচয় আমার রোজনামচায়। ঘুম থেকে উঠে পড়লাম নানার হাঁকডাকে। তাঁকে সুন্দরবন কুরিয়র সার্ভিস থেকে ফোন করা হয়েছে, একটা পার্সেল এসেছে কিন্তু হোম ডেলিভারী লেখা থাকা সত্ত্বেও তারা হোম ডেলিভারী চাইছে না। কথায় তিনি ভুলেও গেলেন কোন শাখা থেকে ফোন করা হয়েছে তা জিজ্ঞেস করতে, আর কথা শেষে ফোন রেখে দেবার পর ওই নম্বরে ফোন করলে আর ধরছেই না। উপায়ান্তর না পেয়ে তিনি এলেন তার কুলাঙ্গার নাতির দরজায়।

আমি উঠে আর কি করব- একই চেষ্টা করলাম, পন্ডিতি করে নেট সার্চ দিলাম, ওই টিএন্ডটি নম্বর মেলে না, নিজে নিজে গজ গজ করলাম, ব্যাটাদের ফোন করলে ধরতে সমস্যা কি? নাকি ওদের অফিসেই বলা আছে ফোন ধরা নিষেধ, শুধু অফিস কাজে করা যাবে। অথচ এইদিকে কাস্টমার তো হয়রানিতে পড়ছে। আমার ছোট মামা এখন চট্টগ্রামে, তিনি আর আমার মেজখালু আগ্রাবাদে এই মুহুর্তে আছেন - তাই নানা ওনাদেরও হেল্প চাইল। দেখাযাক কি হয়। সুন্দরবন নাকি বলেছে যে বিকেলের মধ্যে আমাদের বাসায় ডেলিভারী করবে, দেখি করে কিনা।

লন্ডন থেকে আসা আমার ছোট খালু, তার মা কে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেবার একফাঁকে এই কুরিয়রটা করলেন। আমি আবার নাস্তাপানি খেয়ে বসে পড়লাম সামু দেয়ালে লিখতে। গতকাল থেকে মনের জমানো কথাগুলো লিখার সময় হয় নি। মনের কথা- কোত্থেকে শুরু করব বুঝে উঠতে পারছি না। আলোকে মনের সবখানে দেখছি কিন্তু আমার মাঝে যেন প্রতিনিয়ত হারাচ্ছি আলো।

আমি অস্থির ইদানিং, খুবই। ৩১শে ডিসেম্বর, ২০১২ তে বিকাল ৩টার জিইসি মোরে ২ঘন্টায় ৭বার ফোন করে শেষে বিকাল ৫টার দিকে তার ফোন পেলাম, "আমি মন্দিরটার ওখানে আছি, আপনি কই?" চলে গেলাম মন্দিরের ওখানে, দেখলাম একটা ছেলের সাথে। সে পরিচয় করালো ,"আমার কলিগ"। আমি হাত মেলালাম, কিছুক্ষণ থেকে আমি আর কণিকা চলে গেলাম রায় এর বাসায়, সেখানে আমার মোবাইল সিমটা (রায়ের একটা কাজে দিয়েছিলাম - রবি সেরা প্রতিভার রেজিস্ট্রেশনের জন্য) নিয়ে চলে এলাম কিংসে চকো কেক নেবো বলে। কণিকার সাথে এর আগে শিল্পকলায় চিংড়ি খেলাম, রাস্তায় ভাজা চিংড়ী আমি খাইনা, তবে শিল্পকলার সামনে যা বানায় তা অনেক ভাল।

চকো কেক নিলাম নিজের বাসার জন্য - কণিকার বাসার জন্য নিতে চাইলে সে-ই মানা করল, 'আমার বাসায় থার্টি ফার্স্ট বোঝে না - নিয়ে লাভ নেই, তার চেয়ে আমি অফিস চলে যাব'। কণিকার অফিসে আজ থার্টি ফার্স্ট নাইট হবে, রাত বারোটায় কেক কাটার পর যার যার বাসায় গাড়ী দিয়ে পৌঁছে দেবে, তাই কণিকাকে আবার অফিসে আমার দিয়ে আসতে হবে। আমি রাস্তায় বেরিয়ে তার হাত ধরতেই আপত্তি। কেন? কারণ সে চায় না একটা নিরাপদ সম্পর্কের সার্টিফিকেট হাতে না আসা পর্যন্ত আমার হাত ধরে ওয়াসা- জিইসি অঞ্চলে সে হাটাহাটি করে। ব্যক্তিগতভাবে এটা আমি সমর্থন দিলেও মন থেকে সেদিন মানতে পারিনি।

খ্যাঁচখ্যাচ করে উঠলাম সেদিন - সারাবাংলার আজ বৈধ-অবৈধ সম্পর্কগুলো হাত ধরাধরি করে হাঁটছে - আজ আমাদের সম্পর্কে হিজাবী বোরখা পড়ানোর কি হল? ওটা নিয়ে একটা ছোটখাট ঝগড়া হয়ে গেল; কেন যেন মনে হল আমাদের ছাড়াছাড়ি হলে ভাল হয়। পরে আমরা রিক্সা নিয়ে ঘুরে স্টেডিয়ামের মেলায় গিয়ে ঘুরে এলেও, দেখলাম কণিকা অনেকখানি রেগেই আছে। মেয়েদের এই আজাইরা রাগ আমার পছন্দ না। কোন বিষয়ে ঝগড়া হতে পারে, তবে আমি ঝগড়া বলে কিছু মানি না, এটা আমি মানি আলোচনা হিসেবে, মতামতের মিল-অমিল সাজানো হিসেবে। কিন্তু কণিকা ওটা টেনে তার অফিসের সামনে এসে আবার ওই কলিগের সামনে এসে আমার সাথে একটা দুরত্ব রেখে দিল।

আলাদাভাবে কথা বলতে চাইলেও বলল না। শ্রেফ - বাই। আমি সিংহ রাশির লোক - একটুতেই ইগোতে লেগে যায়, কাল তেরো এর যামানা শুরু ভেবে ভেবে বাসায় পৌছাই আর নিজের মনে নিজেই কণিকার সাথে সম্পর্কের ছেদ করে ফেলি। ফেবুতে খুজে বেড়ালাম রিমিকে, কোথায় তুমি রিমি? অনেকদিন কথা হয় না। সেদিন রিমিকে পাইনি, ফ্রাঙ্কোকে পেয়েছিলাম - আমার ফিলিপিনো বান্ধবী।

তার স্টাটাসে সে রাতে সারা এশিয়া বোধহয় থার্টি ফার্স্ট উদযাপন করেছি - ফিলিপাইন, চীন, বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, দুবাই। সে রাতে কথা হয়েছিল সাবুর সাথে, সাবুকে কণিকার কথা বলেছি। আর অবাক হয়েছি একটা বাস্তব দেখে - মেয়েরা মেয়েদের সম্পর্কের ভাঙ্গন চায় মনে প্রাণে। অথচ 'একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়েকে বুঝে' বলে বলে অলীক সম্প্রীতির শ্লোগান তুলে। অদ্ভুত তাই না? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.