আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আচ্ছা কেন পৃথিবীটা এতো ছোট হয়? (ছোটগল্প)

বোকারা ভাবে তারা চালাক, চালাকরা ভাবে তারা চালাক। আসলে সবাই বোকা। বোকার রাজ্যে আমাদের বসবাস
একসময় ঢাকা শহরে রিকশা ভাড়া করে ঘোরাঘুরি করা ছিল একটা আয়েশী বিনোদন। তরুন-তরুনী’র দল রিকশা ভাড়া করে ঘুরে বেড়াতো, এাঁ ছিল একটা ক্রেজ। আর আজকের ঢাকা শহরের প্রায় রাস্তাই রিকশা নামক বাহনের জন্য নিষিদ্ধ, অনেক জায়গায় তার যাতায়াত সীমিত।

তবে যে সমস্ত এলাকায় এখনো রিকশা’র প্রবেশাধিকার আছে, সে জায়গায় রিকশাগুলো কেমন জট পাকিয়ে যায়। আমি গত একঘন্টা যাবত পুরাতন ঢাকা’র নয়াবাজারের জ্যামে বসে আছি। সন্ধ্যা প্রায় হয় হয়, সব ঘুড়ি আকাশ হতে নেমে যাচ্ছে, আমি হতাশ চোখে চেয়ে আছি। আজ পুরাতন ঢাকার অতি বিখ্যাত পৌষসংক্রান্তি উৎসব ‘সাকরাইন’ পালিত হচ্ছে। অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল পুরাতন ঢাকায় যেয়ে এই উৎসব প্রত্যক্ষ করার।

আজ সেই ইচ্ছাপূরণের একটা সুযোগ হঠাৎ করেই এসে গেল। আমার অফিসের কলিগের শ্বশুরবাড়ী পুরাতন ঢাকায়, উনার শ্বশুরবাড়ী থেকে দাওয়াত করেছে ‘সাকরাইন’ উপলক্ষ্যে। কি মনে করে যেন উনি আমায় অফার করলেন উনার সাথে যাবার জন্য, আমি কিছুটা আমতা আমতা করেও শেষ পর্যন্ত রাজি হয়ে গেলাম।

আমি রিকশায় একা বসে আছি, আমার কলিগ দুপুরের দিকেই চলে এসেছেন। ‘সাকরাইন’ এর মূল আকর্ষন যে ঘুড়ি ওড়ানো তা শুরু হয় সেই সকাল বেলা থেকে, মূল মজা পেতে হলে যেতে হবে দুপুরের আগে আগে।

অফিসে জরুরী কাজ থাকায় আমি দ্রুত বের হতে পারলাম না, কলিগের শ্বশুরবাড়ী’র ঠিকানা নিয়ে নিয়েছি সেখানে উনি বের হয়ে যাওয়ার সময়। গুলিস্তানে বাস থেকে নেমে রিকশা নিয়েছি, জায়গার নাম ‘মুরগীটোলা’! পুরাতন ঢাকায় আজব আজব সব জায়গার নাম পাওয়া যায়; পাতলাখান লেন, গরম পানির গলি, ঠাটারী বাজার, মুরগীটোলা... ... ....। সত্যই আজিব!

রিকশায় বসে বসে দেখতে লাগলাম চারিপাশের বাড়ির ছাদগুলোতে তরুন-তরুনী’দের ভীড়। কয়েকটা ছাদে দেখতে পেলাম আগুন জ্বালানো হয়েছে। বুঝতে পারলাম তারা তাদের নাটাই-সুতো পোড়াচ্ছে।

সাকরাইন নিয়ে একটু স্টাডি করতে গিয়ে যে মজার তথ্যগুলো পেয়েছি তার একটি হল এই নাটাই-সুতো পোড়ানো। একটু পরে শুরু হল বাজি পোড়ানো আর পটকা ফুটানো’র ধুম। এই দেখতে দেখতে যখন কলিগের শ্বশুরবাড়ি পৌছলাম তখন আকাশ হতে সন্ধ্যার লালিমা মুছে গিয়ে অন্ধকারেরা ঠাই নিয়েছে। সেখানে পৌছে মেইন গেট দিয়ে ঢোকা মাত্রই একজন বছর ষাটের সাদা লুঙ্গি আর সাদা ফতুয়া পরিহিত ভদ্রলোক এগিয়ে এলেন। “আপনি ছোট জামাইয়ের অফিসের বন্ধু? দেরী করে ফেলেছেন, সোজা ছাদে চলে যান, ছাদে যাওয়ার সিঁড়ি দেখিয়ে বললেন ভদ্রলোক।



ছয়তলা বাড়ির সিঁড়ি টানা বেয়ে উঠতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠলাম। আধুনিক ফ্ল্যাট বাড়ি আর কর্পোরেট অফিসে জবের সুবাদে লিফটনামক যন্ত্রটির উপর যে কি পরিমানে নির্ভরশীল হয়ে পরেছি তা বুঝতে পারলাম। হাঁপাতে হাঁপাতে যখন ছাদে উঠে এলাম তীব্র আলোর ঝলকানি আর জোরালো বাজনার শব্দে কিছুটা অবাক হলাম। চোখে একটু আলো সয়ে আসতে সময় নিলাম, তার মাঝেই দেখি আমার কলিগ আমাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলো। হাজার দু’য়েক স্কয়ার ফিটের ছাদে লোকে লোকারন্য, আধুনিক আলোকসজ্জা আর গানের বিকৃত সংস্করণ ’ডিজে’ নিয়ে তরুন-তরুনী থেকে শুরু করে কিছু মধ্যবয়সী নারী-পুরুষও দেখতে পেলাম বাজনার তালে তালে নাচছে।

চারিপাশের দেয়াল ঘেঁষে চেয়ারে বসে অন্যেরা গল্পে মশগুল। আমার কলিগ আমাকে নিয়ে ছাদের এক কোনায় নিয়ে একটি ফাঁকা চেয়ারে বসিয়ে দিল। আমি ভাবছি আমি যে সাকরাইন উৎসবের কথা বইয়ে, রিপোর্ট এ পড়েছি, তার কোথাও আমি এই আধুনিকতার বিকৃত উদযাপনের কথা শুনতে পাই নাই।

“আসেন একটু নেচে দেখেন ভালো লাগবে”- কলিগের কথায় আমার ভাবনায় ছেদ পড়ল। তার জোরাজুরি অনেক কষ্টে রিফিউজ করার পর উনিও এসে আমার পাশে বসলেন।



“আরে ভাই দেখছেন অবস্থা! ঢাকাইয়া ফ্যামিলিতে বিয়ে করে মহা যন্ত্রনায় আছি’রে ভাই। ”

“তাই নাকি? আপনার চেহারা দেখে কিন্তু উল্টাটাই মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছেতো আপনি খুবই এনজয় করছেন। ”

“আরে ভাই এনজয়? রোজ রোজ এই দাওয়াত, সেই দাওয়াত লেগেই আছে। আমারতো মনে হয় ঢাকাইয়ারা প্রতিদিনই কোন না কোন ফাও অনুষ্ঠান নিয়ে মজে থাকে।



“ভাবী আসসালামুআলাইকুম...” বলতেই কলিগ বেচারা লাফ দিয়ে দাড়িয়ে ঘাড় ঘুরাতে গিয়ে হাতে থাকা কফির কাপ হতে কিছুটা কফি ছলকে বাইরে পড়ল। আমি তার সাথে মজা করার জন্য মিথ্যে করে কথাটি বলেছি। ঘাড় ঘুড়িয়ে কাউকে না দেখতে পেয়ে কলিগ বেচারা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাল। আমি মুচকি হাসি হাসতে লাগলাম।

“কি ভাই ভাবীকে এত ভয় পান যে...” আমি হাসতে হাসতে বললাম একটু উচু স্বরেই।

যে বাজনা চারিদিকে বাজছে তাতে করে জোরে কথা না বললে কিছুই শোনা যাবে না।

“হে হে হে, কি যে বলেন না ভাই। আমি আমার বউকে ভয় পাবো কেন?” কলিগ বেচারা নিজের জড়তা কাটানোর চেষ্টা করছেন।

“এই নাচ-গান কতক্ষণ চলবে?”

“সারারাত... পারলে আরও বেশী। ”

“বলেন কি? পাগল নাকি?”

“পাগল মানে মহা পাগল।

বললাম না, ঢাকাইয়া মেয়ে বিয়ে করে ফাইসসা গেছি। হে হে হে”

আমি ভদ্রলোকের হাসি দেখে বুঝে গেলাম সে মহা সুখে আছে। তার বারবার ‘ঢাকাইয়া মেয়ে বিয়ে করে ফাইসসা গেছি’ টাইপের কথা শুনে বুঝা যাচ্ছে সে যে কি পরিমানে মজায় আছে।

“খালি তারা পাগল না, সাথে পাগলা পানিও আছে... পাগলা পানি বুঝেনতো?” কলিগ ভদ্রলোক চোখ দিয়ে ইশারা করলেন। বুঝলাম তিনি এলকোহলের কথা বলছেন।



আমি হাত ঘড়ি’র দিকে তাকালাম, রাত প্রায় ন’টা বাজে। বাসায় ফিরতে হবে, সেই খিলক্ষেত। আমি কলিগকে বললাম, সে হেই হেই করে উঠলো। না খেয়ে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে চলে যাবো, এটা কোন কথা হল নাকি? শেষে তাকে অনেক বুঝিয়ে নিয়ে নীচে নেমে এলাম। তার শ্বশুর সেই সাদা লুঙ্গি আর সাদা ফতুয়া পরিহিত ভদ্রলোক কোন মতেই না খেয়ে আমাকে বের হতে দিলেন না।

খাবার জন্য তাদের অন্দরমহলে প্রবেশ করতে হল। খাবার আইটেম দেখে আমার আক্কেলগুড়ুম। হেন কোন পদ নেই যা দেখলাম না, সাথে মিষ্টি, পিঠা, পায়েস প্রভৃতি। আমি বসে পরলাম তার সাথে ডাইনিং টেবিলে।

খাবার টেবিলের দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছিলাম।

হঠাৎ তাকে দেখে আমি যেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলাম। আমি যেন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না। ঐন্দ্রিলা আমার সামনে পোরসেলিনের রেজালার বাটি নিয়ে দাঁড়িয়ে। কেমন একটা গিন্নি গিন্নি ভাব এসেছে চেহারায়। আমি যতটা চমকে উঠেছিলাম, ও ঠিক ততটা চমকালো না।

তবে চেহারায় ক্ষণিকের জন্য বিস্ময়ের চিহ্ন ফুটে উঠলো ঠিকই। আমি তার দিক হতে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে টেবিলে রাখা মোরগ পোলাও এর ধুমায়িত বাটির দিকে নিবদ্ধ করলাম। হুরমুর করে স্মৃতিরা এসে গড়াগড়ি খেতে লাগল আমার চেতনার আঙ্গিনা জুড়ে।

আমি আর ঐন্দ্রিলা একসাথে কাটিয়েছি প্রায় ছয়টি বসন্ত, একই আকাশের নীচে, একই ক্যাম্পাসের সীমানায় একসাথে চলেছে ছয়টি বছর। কত স্মৃতি, কত গান, কত না ভালবাসা...... কত মধুর স্মৃতি।

তারপর কত নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে দুজনা’র দুটো পথ দুটি দিকে গেছে বেঁকে। আজ থেকে প্রায় চার বছর আগেকার ঘটনা। কথা দিয়েছিল তারা দুজন’ই যে কক্ষনো এই জীবনে আর তারা দেখা করবেনা। তার মাস তিনেক পরে বন্ধু-বান্ধবের কাছে শুনে এসেছে ঐন্দ্রিলা বিদেশ চলে গেছে; কেউ বলল হাইয়ার স্টাডি, কেউ বলল বিয়ে করে স্বামীর সাথে চলে গেছে। আমি কখনো আর খোঁজ করতে যাই নাই।

যে ভালবাসা ছিল বিশ্বাসের, সেই ভালোবাসায় এতোটুকু সৎতো থাকাই যায়। কথা দিয়েছি কখনো আর দেখা হবে না বলে, তবে কেন তার কোন খোঁজ করা?

আজ হঠাৎ করে এভাবে দেখা হয়ে যাবে আমি কল্পনাও করতে পারি নাই। আমি চুপচাপ মাথা নিচু করে খেতে লাগলাম। আমার কলিগ এই কথা সেই কথা বলে যাচ্ছে, আমি কোন কিছুই শুনতে পেলাম বলে মনে হল না। আমি আমার শ্রবণশক্তি বোধহয় হারিয়ে ফেলেছিলাম।

শুধু শ্রবণশক্তি কেন, আমি আমার সকল চেতনাই বোধহয় তখন হারিয়ে ফেলেছিলাম। রোবটের মত খেয়ে যাচ্ছি, হঠাৎ কলিগের হাতের ধাক্কায় সম্বিৎ ফিরে পেলাম।

“কি লজ্জা পাচ্ছেন নাকি মশাই, আপনি আর লজ্জা? আমার সম্বন্ধীর ওয়াইফ। উনাকে দিলাম আপনার জন্য মেয়ে দেখার দায়িত্ব। বলেন কেমন মেয়ে চাই”
আমি বিষম খেলাম, পানির জন্য হাত বাড়াতেই ঐন্দ্রিলা পানির গ্লাসটায় পানি ঢেলে দিতে লাগলো।

আমার সামনে আমার সেই প্রিয় শঙ্খের ন্যায় সাদা হাতখানি, যা কখনো আমার হাতে থাকতো ধরা। আমিতো আর কখনো দেখা হোক তা কখনো চাইনি। কতটা কষ্ট করে, স্বযতনে বুকের গভীরে বেদনাগুলোকে সব কবর দিয়েছি। আজ এই কুক্ষণে কেন আবার সেই কবর খুড়ে নীল বেদনারা সব ঝড় তুলছে। আমি দ্রুত খাবার শেষ করে উঠে দাড়িয়ে পা বাড়ালাম মেইন গেইটের দিকে।

আনমনে, নিজের অজান্তেই বললাম, “যাই”। আমার কলিগ হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে তাকিয়ে রইল আমার প্রস্থানের পথে চেয়ে। খুব ইচ্ছা হচ্ছিল একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি ঐন্দ্রিলা কি করছে। সে কি আমার পানে দৃষ্টি মেলে চাইছে সেই আগের মত।

বাইরে খুব শীত লাগছে।

শীতের এই মধ্য সময়ে থেকে থেকেই শৈত্যপ্রবাহ হচ্ছে, আজো মনে হয় শুরু হল। শীত কাপর তেমন একটা নিয়ে বের হইনি। থেকে থেকে শরীর কেঁপে উঠছে; শীতে নাকি নীল বেদনাদের উলম্ফনে বুঝতে পারছি না। থেকে থেকে সাকরাইনের আতশবাজি আকাশকে আলোকিত করে দিচ্ছে। যেমন আলোকিত করে আমার ভুবনজুড়ে ছিল ঐন্দ্রিলা, আজ এই রাতে আছে নীল বেদনারা।

আর কখনো মুখোমুখি হব ঐন্দ্রিলার তা দুঃস্বপ্নেও ভাবি নাই, তবু দেখা হয়ে গেল। আসলেই পৃথিবীটা কত ছোট।

আমি আর ঐন্দ্রিলা একসাথে কাটিয়েছি প্রায় ছয়টি বসন্ত, একই আকাশের নীচে, একই ক্যাম্পাসের সীমানায় একসাথে চলেছে ছয়টি বছর। কত স্মৃতি, কত গান, কত না ভালবাসা...... কত মধুর স্মৃতি। তারপর কত নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে দুজনা’র দুটো পথ দুটি দিকে গেছে বেঁকে।

আজ থেকে প্রায় চার বছর আগেকার ঘটনা। কথা দিয়েছিল তারা দুজন’ই যে কক্ষনো এই জীবনে আর তারা দেখা করবেনা। তার মাস তিনেক পরে বন্ধু-বান্ধবের কাছে শুনে এসেছে ঐন্দ্রিলা বিদেশ চলে গেছে; কেউ বলল হাইয়ার স্টাডি, কেউ বলল বিয়ে করে স্বামীর সাথে চলে গেছে। আমি কখনো আর খোঁজ করতে যাই নাই। যে ভালবাসা ছিল বিশ্বাসের, সেই ভালোবাসায় এতোটুকু সৎতো থাকাই যায়।

কথা দিয়েছি কখনো আর দেখা হবে না বলে, তবে কেন তার কোন খোঁজ করা?

আজ হঠাৎ করে এভাবে দেখা হয়ে যাবে আমি কল্পনাও করতে পারি নাই। আমি চুপচাপ মাথা নিচু করে খেতে লাগলাম। আমার কলিগ এই কথা সেই কথা বলে যাচ্ছে, আমি কোন কিছুই শুনতে পেলাম বলে মনে হল না। আমি আমার শ্রবণশক্তি বোধহয় হারিয়ে ফেলেছিলাম। শুধু শ্রবণশক্তি কেন, আমি আমার সকল চেতনাই বোধহয় তখন হারিয়ে ফেলেছিলাম।

রোবটের মত খেয়ে যাচ্ছি, হঠাৎ কলিগের হাতের ধাক্কায় সম্বিৎ ফিরে পেলাম।

“কি লজ্জা পাচ্ছেন নাকি মশাই, আপনি আর লজ্জা? আমার সম্বন্ধীর ওয়াইফ। উনাকে দিলাম আপনার জন্য মেয়ে দেখার দায়িত্ব। বলেন কেমন মেয়ে চাই”
আমি বিষম খেলাম, পানির জন্য হাত বাড়াতেই ঐন্দ্রিলা পানির গ্লাসটায় পানি ঢেলে দিতে লাগলো। আমার সামনে আমার সেই প্রিয় শঙ্খের ন্যায় সাদা হাতখানি, যা কখনো আমার হাতে থাকতো ধরা।

আমিতো আর কখনো দেখা হোক তা কখনো চাইনি। কতটা কষ্ট করে, স্বযতনে বুকের গভীরে বেদনাগুলোকে সব কবর দিয়েছি। আজ এই কুক্ষণে কেন আবার সেই কবর খুড়ে নীল বেদনারা সব ঝড় তুলছে। আমি দ্রুত খাবার শেষ করে উঠে দাড়িয়ে পা বাড়ালাম মেইন গেইটের দিকে। আনমনে, নিজের অজান্তেই বললাম, “যাই”।

আমার কলিগ হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে তাকিয়ে রইল আমার প্রস্থানের পথে চেয়ে। খুব ইচ্ছা হচ্ছিল একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি ঐন্দ্রিলা কি করছে। সে কি আমার পানে দৃষ্টি মেলে চাইছে সেই আগের মত।

বাইরে খুব শীত লাগছে। শীতের এই মধ্য সময়ে থেকে থেকেই শৈত্যপ্রবাহ হচ্ছে, আজো মনে হয় শুরু হল।

শীত কাপর তেমন একটা নিয়ে বের হইনি। থেকে থেকে শরীর কেঁপে উঠছে; শীতে নাকি নীল বেদনাদের উলম্ফনে বুঝতে পারছি না। থেকে থেকে সাকরাইনের আতশবাজি আকাশকে আলোকিত করে দিচ্ছে। যেমন আলোকিত করে আমার ভুবনজুড়ে ছিল ঐন্দ্রিলা, আজ এই রাতে আছে নীল বেদনারা। আর কখনো মুখোমুখি হব ঐন্দ্রিলার তা দুঃস্বপ্নেও ভাবি নাই, তবু দেখা হয়ে গেল।

আসলেই পৃথিবীটা কত ছোট।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।