সুনন্দা পুষ্করের যে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি এ ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তার দেহে পাওয়া গেছে আঘাতের চিহ্ন। গলায় ছিল দাগ। ময়না তদন্ত করার পর এইমসের চিকিত্সকরা জানিয়ে দিয়েছেন, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শশী থারুরের স্ত্রীর। তার মৃত্যুটি অতর্কিত ও অস্বাভাবিক।
তবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি চিকিত্সকরা। এইমসের অটোপসি বোর্ডের সদস্য সুধীর গুপ্তা বলেছেন, 'পোস্ট মর্টেম শেষ হয়েছে। বাকি সব রিপোর্ট মিলিয়ে দেখে দু'তিন দিনের মধ্যে চুড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে। আপাতত এটাকে অস্বাভবিক ও অতর্কিত মৃত্যুর ঘটনা ধরেই এগোচ্ছি আমরা। তাঁর দেহে আঘাতের চিহ্নও ছিল।
'
পোস্ট মর্টেমের পর একের পর এক প্রশ্ন সামনে আসছে তদন্ত কর্মকর্তাদের। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি সুনন্দাকে খুন করা হয়েছে? খুন করা হলে কে তা করেছে? গোটা ঘটনায় শশী থারুরের ভূমিকাই বা কী? সুনন্দা কি শশী থারুর আর মেহের তারারের প্রেমের বলী? সুধীর গুপ্তা বলেছেন, 'আমরা যথাসম্ভব এই মৃত্যুর কারণ খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছি। দেহের সব আঘাতের ছবি ও ভিডিও তোলা হয়েছে। কী ধরনের আঘাত ছিল তা প্রকাশ্যে আনা সম্ভব নয়। শুধু এটুকুই বলা যাবে, আঘাতের চিহ্ন ছিল অবশ্যই।
'
এদিকে মৃত্যুর দুই দিন আগেও সুনন্দা-শশী দম্পতির মধ্যে ঝগড়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এমনকি সেই সময় আরও একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সুধীর গুপ্তার এ প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সুনন্দার মৃত্যু যে কোনও মতেই স্বাভাবিক ভাবে হয়নি। এই মতামতেই ইন্ধন দিচ্ছেন কেরালা ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর চিকিত্সকেরা। দিল্লি আসার সপ্তাহ খানেক আগে এখানেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে এসেছিলেন সুনন্দা।
একাধিক পরীক্ষা করলেও কোনও গুরুতর অসুস্থতা ধরা পড়েনি। কেআইএমএস-এর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ জি বিজয়রাঘবন বলেন, 'সুনন্দা যখন আসেন তখন কোনো রকম গুরুতর সমস্যা পাওয়া যায়নি তাঁর শরীরে। আজকাল এমন অনেকেই আসেন সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে। তাকে খুবই সাধারণ কিছু ওষুধপত্র দেওয়া হয়। '
এদিকে গত কয়েক দিন ধরে সুনন্দার টুইটার অ্যাকাউন্ট, তাঁর বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে কথোপকথন, তিরুবনন্তপুরম-দিল্লি ভ্রমনে তাঁর ও থারুরের বাকবিতণ্ডার প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ, সব কিছুই প্রমাণ দিচ্ছে সুনন্দার চূড়ান্ত অবসাদগ্রস্ততার।
ফলে আত্মহত্যার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এ কথা মানতে রাজি নন সুনন্দার আত্মীয়-স্বজন। সুনন্দার মামাতো ভাই সঞ্জয় পণ্ডিতা এবং তাঁর স্ত্রী অনু এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন। সঞ্জয়ের কথায়, 'সুনন্দা অত্যন্ত লড়াকু ও সাহসী মেয়ে। ও আত্মহত্যা করতেই পারে না।
'
এই অবস্থায় পুলিশের ভূমিকা বড় হয়ে উঠেছে। শুক্রবার শশী থারুরের সঙ্গে একবার কথা বলেছিল পুলিশ। ওই দিন তারা মন্ত্রীর বিবৃতি লিপিবদ্ধ করেছে। হোটেলের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সুনন্দার ফোন ও আই-প্যাড খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পরীক্ষা করা হচ্ছে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজও। কে জানে সামনে কোন সত্য লুকিয়ে আছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।