বৃহস্পতিবার ক্যাথলিক চার্চের বিশ্ব যোগাযোগ দিবসে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি ইন্টারনেটকে মানুষের জন্য ‘ঈশ্বরের দেয়া উপহার’ বলে মন্তব্য করেছেন।
পোপের এ বিবৃতি নিয়ে খবর ছাপে যুক্তরাজ্যের ‘দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট’, ‘দ্য টাইমস’সহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।
ক্যাথলিক চার্চের যোগাযোগ প্রসঙ্গে এক বার্তায় ইন্টারনেট নির্ভর ডিজিটাল যুগের সুবিধা-অসুবিধা এবং ভিন্ন ধর্মের ও মতের অনুসারীদের সঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগের কৌশল সম্পর্কে লিখেছেন পোপ।
ইন্টারনেট জগতের বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারীর মধ্যে ক্যাথলিক খ্রিস্টানধর্ম সম্পর্কে ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিভিন্ন কৌতুহলের জবাব দিতে বলেছেন তিনি।
তবে ইন্টারনেট জগতে ডুবে থাকতে গিয়ে বাস্তব জগতের প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখার মতো নেতিবাচক দিকটিও উল্লেখ করেছেন পোপ।
“এটি কিছুক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থেই খুব ভালো ভূমিকা রাখে, এটি ঈশ্বরের একটি কৃপাও বটে। তবে ভার্চুয়াল জগতে ডুবে থাকার প্রবল ইচ্ছা বাস্তব জীবনে আমাদেরকে বন্ধু-প্রতিবেশীদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে পারে,” সতর্ক করেন তিনি।
পোপ বলেন, “ডিজিটাল যুগের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই স্বস্তিকর। এ এমন এক ধরনের ঝাঁঝালো ওষুধ যা ব্যাথা দূর করে দেয়, এমন এক মাদকতা যা চিত্ত বিনোদন দেয়”।
‘ঈশ্বরের একমাত্র কৃপার অধিকারি কেবল যীশুর অনুসারীরাই’- ক্যাথলিকদের এমন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে স্পষ্টত সরে আসার ইঙ্গিত রয়েছে পোপের এ বক্তব্যে।
তিনি বলেন, ক্যাথলিকদের এতো গোঁড়া হলে চলবে না। কেবল তারাই সত্য ধারণ করে আছে এমনটি ভাবার কারণ নেই।
পোপ ফ্রান্সিসের এ দৃষ্টিভঙ্গি চার্চের সুদীর্ঘ অতীত ইতিহাসের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।
তিনি বলেন, “ভিন্ন ধর্মের লোকদের সঙ্গে সংলাপ করার অর্থই হল তাদেরও যে গ্রহণযোগ্য কিছু মতামত আছে তা স্বীকার করে নেয়া এবং তার মতামতকে মূল্যায়ন করা। সংলাপে অংশ নেয়া মানে আমাদের নিজেদের বিশ্বাস ও ঐতিহ্যকে খাটো করা নয়”।
আগের পোপ জোসেফ রটজিঙ্গারের সময় চার্চের মৌলিক শিক্ষা ছিল- কেবলমাত্র ক্যাথলিক চার্চ অর্থাৎ, ক্যাথলিকরাই পরকালে পরিপূর্ণভাবে আত্মার মুক্তি লাভ করবে।
কিন্তু পোপ ফ্রান্সিসের দৃষ্টিভঙ্গি আগের সে ধারণা বদলে দিয়েছে। যারা কেবল ঈশ্বরের কৃপা প্রত্যাশা করে কিন্তু যীশু খ্রিস্টের শিক্ষার পূর্ণ অনুসারি নয় তারাও পরকালে মুক্তি পাবে বলে ইতোপূর্বে মন্তব্য করেছেন ফ্রান্সিস।
আরেক বক্তব্যে নাস্তিকরা পরকালে মুক্তি পেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তিনি। উপরন্তু হলি থার্সডে উপলক্ষে পোপ রীতি ভেঙে দুই নারীর পাও ধুয়ে দিয়েছিলেন ।
এভাবে একের পর এক চমক সৃষ্টি করে এরই মধ্যে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভ্যাটিকানের এ নতুন পোপ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।