আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজনীতির নিচে মানবাধিকারের বাস

ভূমি দখলের সংস্কৃতির কারণেই হিন্দুদের ওপর সহিংসতা থামছে না। এ সংস্কৃতিটা চালু হলে আজকে আওয়ামী লীগ করে, কাল বিএনপি ও পরশু জাতীয় পার্টি করবে। মূলত সে একজন জমি দখলকারী। স্বার্থ উদ্ধারে সে দল বদলায়। নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে সে অন্য দখলদারদেরও সমর্থন দেয়।

এটাই এখন চলছে দেশে। বৃহস্পতিবার চ্যানেল টুয়েন্টিফোর-এর টকশো 'মুক্তবাক'-এ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক আফসান চৌধুরী এ কথা বলেন। মানজুর আল মতিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র উপ-পরিচালক অ্যাডভোকেট নিনা গোস্বামী ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্যারিস্টার আরিফ বিল্লাহ। আফসান চৌধুরী বলেন, হিন্দুদের সম্পত্তি দখলের জন্য তাদের ওপর সহিংসতা বেশ কিছু দিন ধরে চলছে। নির্বাচনের পর এটা বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশে যতদিন পর্যন্ত হিন্দু সম্পত্তি শেষ না হবে এ সহিংসতা থামবে না। এমনকি দেশের বড় বড় হিন্দু উকিলদের বড় বড় কাজই হচ্ছে হিন্দুদের সম্পত্তিগুলো কীভাবে মুসলমানদের কাছে সহজে হস্তান্তর করা যায় সে ব্যবস্থা করা। কিন্তু দেশের সবচেয়ে নাজুক গোষ্ঠী হিসেবে হিন্দুদের প্রতি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া কী সরকারের দায়িত্ব নয়? অথচ রাজনৈতিক সমর্থনেই এ দখল সংস্কৃতি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। এ দেশের আইনের শাসন, মানবাধিকার সব কিছু রাজনীতির নিচে বসবাস করছে। একটা দেশের সেনাবাহিনী মাঠে থাকতে এভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা কি খুব সম্মানজনক ব্যাপার? আইনের শাসন সবার।

কেন একজন হিন্দুকে বলতে হবে আমি একজন হিন্দু, আমিও বাংলাদেশের নাগরিক? তিনি বলেন, সহিংসতা কখন বাড়ে? যখন আপনি দেখেন সহিংসতা করে আপনি ক্ষমতায় যেতে পারেন, সুবিধা ভোগ করতে পারেন কিন্তু আপনার কোনো সাজা হয় না, তখনই আপনি সহিংসতার পথে যান। এটা আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। কোর্টে এখন নতুন কেস আসা আগের থেকে অনেক কমে গেছে। বিচারহীনতার কারণে সাধারণ মানুষ এখন আর ফর্মাল কোর্ট সিস্টেমে যেতে চায় না।

তিনি বলেন, '৭১ সালে প্রচুর হত্যাকাণ্ড ঘটেছে যেগুলো সাধারণভাবে যুদ্ধের সময় ঘটে থাকে।

কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনের পরও হত্যাকাণ্ড চলেছে। সেই সময়ে একটা পর্যায়ে যখন কোনো সরকারই ছিল না তখন সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড হয়েছে। সবার সামনে ঢাকা স্টেডিয়ামে কাদের সিদ্দিকী ও তার লোকেরা বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে মানুষ মেরেছে। হতে পারে যাদের মেরেছে তারা রাজাকার ছিল কিন্তু এই মারার অধিকারটা কাদের সিদ্দিকীদের ছিল না। একটা বিষয় যখন স্বীকৃত হয়ে যায় যে, আইনের অবস্থা সামলানোর জন্য আপনি বেআইনি কাজ করতে পারেন এবং রাষ্ট্র আপনাকে এটা করতে এক ধরনের অনুমতি দিচ্ছে তখন আর এটা থামানো যায় না।

ইতিহাসের গবেষক দাবি করে তিনি বলেন, আমরা বেআইনি জিনিসটাকে অনেক সহজে গ্রহণ করি। সাধারণ মানুষ কিন্তু র্যাবের পক্ষে। তারা দেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেহেতু খুব খারাপ হয়ে গেছে, র্যাব এসে ধরে নিয়ে গেলে ওই খুনি বা ডাকাতের হাত থেকে বাঁচা যাবে। এটা একটা রাষ্ট্রের চরম ব্যর্থতা।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.