চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মত সংসদ সদস্য হয়েছেন তিনি। এবার অবশ্য বেশিরভাগ এমপির মত তিনিও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির এই প্রেসিডিয়াম সদস্য।
আনিসুল ইসলাম সম্প্রতি নতুন মন্ত্রিত্ব, সরকার ও রাজনীতি কথা বলেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে।
সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে বসে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি মন্ত্রী হিসাবে তার অগ্রাধিকার ঠিক করেছেন, ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত পানি সমস্যা। তবে সময় নিতে চান আরেকটু, কারণ ভারতের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন।
তিস্তা পানি বণ্টনে নায্য হিস্যা আদায় এবং টিপাইমুখ বাঁধের যৌথ সমীক্ষার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “চেষ্টা করবো বিষয়গুলোর সমাধান করতে। বর্তমানে ভারতে নির্বাচনকালীন অবস্থা যাচ্ছে, নির্বাচনের পরপরই এ বিষয়ে আলোচনার উদ্যেগ নেয়া হবে। ”
জেনারেল এইচ এম এরশাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিস ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন।
শেখ হাসিনার পানি সম্পদমন্ত্রী বলেন, “ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা উচিত, সুসম্পর্ক্ বজায় রেখেই এসব বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নেয়া হবে। ”
দায়িত্ব পালনকালে নদী শাসন ও সেচ সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টিকেও প্রধান্য দেবেন তিনি।
নতুন মন্ত্রী এই মন্ত্রণালয়ে আরো বেশি বরাদ্দ চান।
তার মতে, “বরাদ্দ প্রকল্প ও কাজের তুলনায় খুব কম। ”
তার হিসাবে, “প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা দরকার হলেও সেখানে বরাদ্দ এক হাজার সাতশ কোটি টাকা।
বরাদ্দ বাড়াতে চেষ্টা করবেন তিনি।
নতুন নতুন সেচ প্রকল্প শুরু করার আশা ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, “বিশেষ করে সেচ প্রকল্প, চাষে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের পরিবর্তে নদ-নদীর (সারফেস ওয়াটার) ব্যবহারে গুরুত্ব দেয়া হবে। ”
নদী দুষণরোধে বিশেষ কাযর্ক্রম হাতে নেবার আশ্বাস দেন আনিসুল ইসলাম।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে ‘দুর্নীতি’ রোধে কঠোর হবার হুঁশিয়ারি দিয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
সংসদ বর্জন করবে না জাতীয় পার্টি
মন্ত্রিত্ব নিলেও জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে ‘যথাযথ’ ভূমিকা রাখবে বলে জানান আনিসুল।
তিনি বলেন, “সরকার থেকেও বিরোধীদলের ভূমিকা পালনে কোনো সমস্যা হবে না।
বিরোধী দলের কাজ হচ্ছে গঠনমূলক রোল প্লে করা। ”
দশম সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি কখনো সংসদ বর্জন করবে না বলেও আশ্বাস দেন দলটির প্রভাবশালী এই নেতা।
“সরকারের বিভিন্ন কাজের অবশ্যই সমালোচনা করা হবে তবে। প্রয়োজনে বিরোধী দল ওয়াক আউট করবে। ”
জাতীয় পার্টির আগামী পরিকল্পনা জানতে চাইলে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল বলেন, “দলকে পুনর্গঠিত করে আরো গতিশীল এবং আগামীতে সব দলকে নিয়ে নির্বাচন করার জন্য একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করতে চাই।
”
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের জন্ম ১৯৪৭ সালের ২০ ডিসেম্বর। তিনি পড়াশুনা করেছেন মূলত অর্থনীতি ও আইন নিয়ে।
তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স, ১৯৬৯-৭০ সময়ে কায়েদে আজম ইউনির্ভাসিটি থেকে অর্থনীতিতে এমএসসি, ১৯৭৫ সালে যুক্তরাজ্যের এসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি নিয়েছেন।
১৯৭২-৭৩ সালে যুক্তরাজ্যের লিংকনস-ইন-লন্ডন থেকে বার এট ল ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।
ফটোগ্রাফি, ক্রিকেট এবং ফ্লাইং তার শখ।
এরশাদের আমলে ১৯৮৬ ও ৮৮ সালেও তিনি হাটহাজারী থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।