চলছে শীত মৌসুম। কমতে শুরু করেছে নদীর পানি। রাজধানী ঢাকার চারপাশের নদীগুলোতে অবৈধ দখলদাররা আবার হয়ে উঠছে বেপরোয়া। প্রকাশ্যে চলছে দখলযজ্ঞ। ধারাবাহিক দখলে কান্না থামছে না ঢাকার উপকণ্ঠের দুই নদীর।
কয়েক দিন আগে হঠাৎ করে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দখলদার চক্র। মহানগরীর চারপাশের তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা নদী এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে দখলের নানা চিত্র। নদী রক্ষায় উচ্চ আদালতের আদেশ উপেক্ষিত। ধারাবাহিক দখলে পাল্টে গেছে তুরাগ নদের সার্বিক চিত্র। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নানা কারণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
তবে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এসব কথা মানতে নারাজ। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে দাবি করেন, ঢাকার উপকণ্ঠের দুই নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে তার মন্ত্রণালয়ের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই।
হুমকির মুখে তুরাগ : তুরাগ নদীর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে এই নদী। কহর দরিয়া খ্যাত তুরাগে এই শুষ্ক মৌসুমে চলছে বেপরোয়া দখল উৎসব।
সীমানা পিলার দিয়েও থামানো যাচ্ছে না অবৈধ দখলদার। পাশাপাশি তুরাগের তীরভূমি ও জলাশয়গুলো অবাধে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। নদীর বুকে তৈরি করা হয়েছে পাকা দেয়াল ও নানা ধরনের অস্থায়ী স্থাপনা। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নদীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ, নদীর তীরে পায়ে চলার পথ তৈরি, নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনা ও নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছে বর্তমান সরকার। এ ছাড়া ঢাকার চারপাশে নদীগুলো দখলমুক্ত রাখতে নদীতে সীমানা পিলার বসানো হয়েছে।
এর পরও কেউ নদী দখল করলে তাদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযানসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল সরেজমিন নদী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা দখল হচ্ছে। অথচ প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০-এ বলা হয়েছে, 'জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন করা যাইবে না। বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করা যাইবে না। বা অনুরূপ ব্যবহারের জন্য ভাড়া, ইজারা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করা যাইবে না।
' কিন্তু তুরাগ পাড়ের বাস্তব চিত্র ভিন্ন। টঙ্গী অংশে তুরাগের বুকে বিশাল বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, টঙ্গীর মৌজা বাদম এলাকায় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ওই বিরাটকায় বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জলাভূমিতেই বাউন্ডারি ওয়াল তৈরি শেষ হয়েছে চলতি বছর। বাউন্ডারির পশ্চিম প্রান্তে একটি সেতু অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে।
সেতুর পশ্চিম তীরে তালতলা এলাকায় তুরাগে চলছে বালুর ব্যবসা ও বালু দিয়ে ভরাট কার্যক্রম। ফলে ওই অংশে নদী সঙ্কুচিত হয়ে শীর্ণকায় খালে রূপ নিয়েছে। নির্মাণ বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্রিজের খুঁটিগুলোর কারণে নৌযান চলাচল চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মিরপুরের শিন্নীরটেক এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম অভিযোগ করে বলেন, এ এলাকায় স্থানীয় দারুস সালাম থানা পুলিশের সহযোগিতায় তুরাগ নদীর বাঁধ কেটে ২০-২২টি ইট ও বালু বেচাবিক্রির টং ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এসব টং ঘর থেকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে মাসহারা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তুরাগ থানাধীন তালতলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সেতুর পশ্চিম পাশ দখল করে কনক্রিট মেশানোর কারখানা তৈরি করেছে একটি প্রতিষ্ঠান। এর উত্তর অংশে বাউন্ডারির ভেতরেই তুরাগ নদীর কয়েকটি সীমানা খুঁটি বসানো হয়েছে। কারখানার পশ্চিম পাশে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভরাট করা হয়েছে বালু ফেলে। প্রস্তাবিত ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের সামনে ড্রেজারে বালু ফেলে পাহাড়ের মতো উঁচু করা হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার সোহেল আনোয়ার খান এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমরা নদীর অংশ দখল করিনি।
আমরা স্থাপনা নির্মাণ করেছি কেনা জমিতে। সূত্র জানায়, এক বছর আগে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও গাজীপুর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সেখানে নদীর সীমানা বলে খুঁটি দিয়ে গেছেন। তুরাগ থানার ভাটুলিয়ায় আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া সড়ক সংলগ্ন এলাকায় তুরাগের ৭০ নম্বর (তুরাগ পি-৭০) খুঁটির পাশে আনুমানিক প্রায় ২০০ ফুট বা তারও বেশি অংশ অবৈধ দখলে চলে গেছে। ৭০ নম্বর খুঁটির প্রায় ১০০ গজ দক্ষিণে ও উত্তরে নম্বরবিহীন তুরাগের চারটি মেইন পিলার। এসব খুঁটির ভেতরে নদীর মধ্যেই আরেকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নামে ভরাট এবং বাউন্ডারি দেয়াল দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রস্তাবিত হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাশেদ রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনুমোদন নিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা তাজুল ইসলাম জানান, এক-দেড় বছর আগে সেখানে ভরাট কাজ শুরু হয়। পরে বিআইডবি্লউটিএসহ বিভিন্ন সংস্থার বাধায় ভরাট কাজ স্থগিত করা হয়েছে। ভাটুলিয়া তুরাগের ৭০ নম্বর খুঁটির উত্তর পাশে দেখা গেছে তুরাগের ভেতরই দারুল ফালাহ সালেহিয়া সাহেব আলী আলিম মাদ্রাসা ও এতিমখানা নামে একটি তিনতলা মাদ্রাসা। রয়েছে কয়েকটি বাড়ি ও আধা পাকা ছাপড়া ঘর।
তুরাগ থানার তালতলায় কনক্রিট কারখানার উত্তর পাশে জাহান ফিলিং স্টেশন। ফিলিং স্টেশনের পশ্চিম পাশেও বালু ভরাট করে দখল চলছে তুরাগের পাড়। আশুলিয়া চেকপোস্টের পাশে একটি দোতলা ভবন। এ ছাড়া আশুলিয়া-মিরপুর সংযোগ সড়ক থেকে নদীর পাড় পর্যন্ত জলাধারের মধ্যে নীল রঙের রঙিন টিন দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে কয়েক বিঘা জমিতে। আশুলিয়া চেকপোস্টের পাশেও জলাধারে বাউন্ডারি দেয়াল দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।
এর বাইরে ৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ তুরাগে এবং ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ টঙ্গী খালে শত শত অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। বিআইডবি্লউটিএ, জেলা প্রশাসক ও সরকারি সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর কিছু দিনের মধ্যেই আবার সেগুলো বেদখল হয়ে পড়ে। গত বছর তুরাগে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি বসানোর সময় কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। খুঁটিগুলোর অধিকাংশই নদীর মূল সীমানা ও নকশা মেনে এবং হাইকোর্টের রায় অনুসারে বসানো হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। পিলার বসানোর সময় গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যদের মধ্যেও নদীর প্রকৃত সীমানা নিয়ে কয়েক দফা বিরোধ হয়েছিল।
খুঁটি বসানোর সময় বিআইডবি্লউটিএ'র তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মিয়া অভিযোগ করেছিলেন তুরাগ নদীর মূল তীরভূমিতে খুঁটিগুলো বসানো হয়নি; খুঁটি বসনো হয়েছে 'লো ওয়াটার লাইন' অনুযায়ী। তার দাবি ছিল, নদীর পুরো জমি বিআইডবি্লউটিএকে বুঝিয়ে দিতে হবে; নইলে নদী সংরক্ষণ করা যাবে না। ওই সময় গাজীপুর জেলা প্রশাসক কামাল উদ্দিন তালুকদার ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক শামসুর রহমান ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি উল্লেখ করে নদীর তীরভূমি অনুযায়ী পিলার স্থাপন সম্ভব নয় বলে মত দেন। ঢাকা জেলার তৎকালীন প্রশাসক মুহিবুল হক নদীর তীরভূমি রক্ষা করে পিলার স্থাপন করার পক্ষে মত দেন। গাজীপুর জেলা প্রশাসন নদীর ভেতর পিলার স্থাপন করছে।
সিনিয়র আইনজীবী ড. তুহিন মালিক বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী দখল প্রসঙ্গে মহামান্য হাইকোর্ট তার এক রায়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসকদের নদীর মূল সীমানা নির্ধারণকল্পে সিএস (১৯১৩) ও আরএস (১৯৮৩) রেকর্ডের ভিত্তিতে নদী জরিপের নির্দেশ দেন। হাইকোর্ট কর্তৃক নির্ধারিত নদীর সংজ্ঞাকে অবজ্ঞা করে জেলা প্রশাসন নিজস্ব বিবেচনায় শুষ্ক সময়ের নদীর তলাকে ইচ্ছামতো 'নদী' ধরে নিয়ে তুরাগ ও বালুর বুকের মধ্যেই খুঁটি বসিয়েছে। এসব ক্ষেত্রে নদী জরিপ, স্থাপনা চিহ্নিতকরণ, সীমানা নির্ধারণ ও খুঁটি স্থাপনসহ সব বিষয়েই বিদ্যমান আইন, নিয়মনীতি, পরিবেশ কিছুই যথাযথ বিবেচিত হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক।
মরতে বসেছে শীতলক্ষ্যা : শীতলক্ষ্যা নদীর সীমানা পিলারের ভেতর এখনো রয়ে গেছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। এসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বস্তিঘর ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবনের অংশ।
এ ছাড়া নদীর পাড় দখল করে বছরের পর বছর ধরে চলছে বালুর ব্যবসা। এসব কারণে মরতে বসেছে এক সময়ের সে াতস্বিনী শীতলক্ষ্যা। দখল ও দূষণের কারণে ক্রমশ মরে যাচ্ছে নদীটি। নদীর স্বচ্ছ ও সুপেয় পানি শিল্প-কারখানার বর্জ্যে এখন বিষাক্ত হয়ে উঠছে। এতে নদীর পানি দূষিত হয়ে লালচে রং ও পচে উৎকট গন্ধ ছড়াচ্ছে।
৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পুরো নদীর পানি এখন পুরোপুরি দূষিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া নদীর সংযোগ খালগুলো ধীরে ধীরে ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় নদীর স্বাভাবিক গতিপথও পরিবর্তন হতে চলেছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল কর্তৃপক্ষ-বিআইডবি্লউটিএ'র দেওয়া তথ্য মতে, শীতলক্ষ্যা নদী অবৈধ দখলের তালিকায় রয়েছে ১২৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। অবৈধ দখল ও দূষিতের তালিকায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে_ বোর্ড মিল, ডায়িং, অয়েল রিফাইনারি কারখানা, লেদার প্রক্রিয়াকরণ কারখানা, পাল্প অ্যান্ড পেপার মিল। জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মো. আলমগীর হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা ঢাকার চারপাশের চার নদী রক্ষায় কাজ করছি।
এ ছাড়া চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা নদীর পানি দূষিত করার অভিযোগে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমান করা হয়েছে। আদায় করা হয়েছে জরিমানার চার লাখ টাকা। সরেজমিন দেখা গেছে, নদীর দুই ধারে গড়ে ওঠা কারখানাগুলোতে বর্জ্যের ড্রেনেজ সিস্টেম রয়েছে সরাসরি শীতলক্ষ্যায়। আর এই নদীর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রয়েছে ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা নদীর। ফলে সব কারখানার বর্জ্য পরিশোধন ছাড়াই এসব নদীতে এসে পড়ে।
তার সঙ্গে এই নদীতে পড়ছে নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলির নাগরিক বর্জ্য। এ ছাড়া ঢাকা শহরের উত্তরাঞ্চলের সব কারখানা ও নাগরিক বর্জ্য বালু নদীতে পড়ে। সেখান থেকে স্রোতের টানে সোজা চলে আসে শীতলক্ষ্যায়। নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের আশপাশের শিল্প-কারখানা থেকে ৪২ ধরনের রাসায়নিক বর্জ্য নদীর পানিতে মিশছে। এসব বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে ক্রোমিয়াম, পারদ, ক্লোরিন, নানা ধরনের এসি দস্তা, নিকেল, সিসা, ফসফোজিপসাম, ক্যাডমিয়াম, লোগা অ্যালকালি ইত্যাদি।
বর্ষাকালে নদীর পানি বেশি থাকায় ততটা বোঝা না গেলেও বর্তমান শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় এখন পারাপারের সময় যাত্রীদের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। পানির দুর্গন্ধে নদীর দুই তীরে বাস করাও কষ্টকর। রূপগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রেজাউল করিম অভিযোগ করে বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় দিয়ে হাঁটতে হলে নাকে রুমাল ছাড়া আর কোনো গতি থাকে না। নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন শিল্প বর্জ্যের কারণে দেশের দ্বিতীয় দূষিত নদী হিসেবে শীতলক্ষ্যাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিষাক্ত শিল্পবর্জ্যে শীতলক্ষ্যা এখন মুমূর্ষুপ্রায়।
নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ জেলার ১০ থানা এলাকার তিন শতাধিক ডায়িং ফ্যাক্টরির মধ্যে বৃহৎ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এফলুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) বা বর্জ্য পরিশোধন প্রকল্প স্থাপন বাধ্যতামূলক হলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই ব্যয় বৃদ্ধির কারণে তা স্থাপন করা হয়নি। ফলে শিল্প-কারখানার বর্জ্যে নষ্ট হয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মহানগরীর ডেমরা ও কাঁচপুরের বিভিন্ন দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী নদীসহ জেলার বেশির ভাগ খাল-বিলের পানি। এসব নদীর স্বচ্ছ সুপেয় পানি আজ বিষাক্ত। সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার কলাগাছিয়া থেকে ময়মনসিংহ জেলার টোক-বর্মি এলাকা পর্যন্ত ৬৫ মাইল বিস্তৃত শীতলক্ষ্যা নদী।
নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ জেলায় এই নদী অতিবাহিত হয়ে মুন্সীগঞ্জের মেঘনায় মিলিত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জ থেকে নরসিংদীর ঘোড়াশাল পর্যন্ত গড়ে উঠেছে বিভিন্ন কল-কারখানা। এ ছাড়া দুই জেলার ১০টি থানা এলাকায় তিন শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের ডায়িং রয়েছে। এসব কারখানায় কাজই হয় মূলত কেমিক্যাল দিয়ে। তিন শতাধিক ডায়িং শিল্প-কারখানার বর্জ্যই ৮০ শতাংশ। কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা বিচ্ছিন্নভাবে নদী রক্ষায় কাজ করলেও তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।
দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নদী রক্ষায় ওয়াকওয়ের নির্মাণ কাজ চলছে। শীঘ্রই নদীর পানি দূষিত ও অবৈধ দখলদারমুক্ত করার জন্যও অভিযান শুরু করার কথা রয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।