আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কান্না থামছে না লিমার

কিছুক্ষণ পরপরই হূদয়বিদারী চিৎকার করে কেঁদে উঠছে তিন বছরের শিশুটি, বোঝাতে পারছে না কোথায়, কেমন যন্ত্রণা হচ্ছে তার। শুধু কেঁদেই চলেছে। তার যন্ত্রণা আর কান্না সবার মর্ম স্পর্শ করছে। কিন্তু কেউ কিছুই করতে পারছে না।
গতকাল বুধবার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতালে) গিয়ে দেখা গেল শিশু লিমা আক্তারের এই যন্ত্রণাকাতর চিৎকার আর নিকটজনদের অসহায়ত্ব।


৩ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর কাফরুলে ককটেলকে খেলনা বল মনে করে ডান হাতের তিনটি আঙুল হারাল লিমা আক্তার।
কাফরুলে পূর্ব ইব্রাহীমপুরের ইটখোলা বাজারসংলগ্ন এলাকায় বাবা-মা আর দাদির কাছে থাকে লিমা। বাসার সামনে ময়লার স্তূপের পাশে পড়ে থাকা ককটেল হাতে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে তার ডান হাতের কবজি অবধি ঝলসে গেছে।
দাদি, চাচা, বাবা-মায়ের শতচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে।

হাসপাতালের বারান্দায় বাবা আল আমিন মেয়েকে কোলে করে কান্না থামানোর চেষ্টা করছেন। আর দাদি তার ব্যান্ডেজ করা হাত ধরে রেখেছেন।
লিমার বাবা গাড়ি চালান ও মা পোশাককর্মী। বাবা ও মা দুজন কাজে গেলে নাতিকে দেখে রাখার দায়িত্ব দাদি শরিফা বিবির।
বাবা আল আমিন প্রথম বললেন, ‘আমি সকালে কাজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, এমন সময় বিকট শব্দ শুনতে পাই।

লোকজনের চিৎকারে বাইরে গিয়ে দেখি লিমা রাস্তায় পড়ে আছে। এরপর আমি নিজেই অচেতন হয়ে যাই। ’

মা সোহাগী আক্তার বলেন, ‘মেয়েকে ভালা কইরা মানুষ করার লাগি স্বামী-স্ত্রী দুজনই কাম করি। এহন তো মাইয়া আমার পঙ্গু হইয়া গেল। ’

হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, চারটি আঙুল ককটেল বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গেই উড়ে গেছে।

এ ছাড়া বাঁ হাত ও পেটে আঘাত আছে। শিশুটির বয়স কম ও শারীরিকভাবে দুর্বলতার কারণে সুস্থ হতে প্রায় আট সপ্তাহ লেগে যাবে।

বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে গত ২৬ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ১৮-দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধে ককটেল বিস্ফোরণ ও পরিবহনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ১৭ শিশু আহত হয়েছে। এর মধ্যে হাত হারিয়ে পঙ্গু হাসপাতালে এখনো ভর্তি আছে তিনজন শিশু। এরা হলো মুরাদ (৯), তোফাজ্জল (১১) ও লিমা (৩)।

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.