রোববার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্বে ১৯ দলীয় জোটসমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ে অবৈধ সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। প্রতিদিন হত্যা ও গুমের পাশাপাশি বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, বাড়িতে বাড়িতে পুলিশি তল্লাসির নামে মূলত হিংস্র আক্রমণ চালাচ্ছে।
“ভোট কারচুপি করতে সরকার রাষ্ট্রশক্তিকে বিভৎসভাবে কাজে লাগাচ্ছে, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। ’’
এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি।
আগামী ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বে ১১৭টি উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই ব্রিফিং হয়।
রিজভী বলেন, “কেরানীগঞ্জ, বরিশাল দক্ষিণ, ভোলার বোরহান উদ্দিন, মুন্সিগঞ্জ সদর, চাঁদপুরের মতলব, সিরাজগঞ্জের তাড়াশসহ বিভিন্ন উপজেলায় ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডাররা ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থীদের প্রচারণায় একের পর সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে। নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি তল্লাসির নামে নির্যাতন চালাচ্ছে। ’’
তিনি দাবি করেন, কেরানীগঞ্জের মিরেরবাগ, কোন্ডা, শুভাড্যা, কলাতিয়ার খাড়াকান্দি বাজার, খেজুরবাগ সাতপাখি, সাতকা, হযরতপুরের জগন্নাথপুরের তিন রাস্তার মোড় প্রভৃতি স্থানে জোট সমর্থিত প্রার্থী নাজিম উদ্দিন মাস্টারের গণসংযোগকালে ক্ষমতাসীনরা হামলা করেছে।
রিজভী বলেন, “এসব বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
“ক্ষমতাসীনদের নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন ও সন্ত্রাসের বিষয়ে কোনো অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে দিলে তারা নির্লিপ্ত ভুমিকা পালন করে। এটা যেন অরণ্যে রোদন হয়ে দাঁড়ায়, কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না। ’’
প্রধানমন্ত্রীর এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, “তওবা প্রধানমন্ত্রীর বেলায়ই প্রযোজ্য। নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রা ভঙ্গ করার কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর আছে।
জনগণ নয়, অন্য একটি দেশের সমর্থনে তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান।
“প্রধানমন্ত্রীর মুখ দিয়ে প্রতিদিন কুৎসা ও কদর্য কথা বের হচ্ছে। তিনি কোথা থেকে এসব শিখেছেন, আমরা তা জানি না। ছয় বছর তিনি দেশের বাইরে একটি দেশে ছিলেন। সেখানে কোনো কু-স্কুলে হয়তো তিনি এসব শিখেছেন।
’’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এহেন বক্তব্যে দেশবাসী লজ্জা পেলেও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) লজ্জা পান না। ”
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উনার তো চক্ষু লজ্জা বলে কিছু নাই। কখন যে কী বলবেন, কী করবেন, তার ঠিক নাই। উনি নির্বাচন করবেন না। আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন হবে না।
“উপজেলা নির্বাচনে এসেছে। হাটি হাটি পা পা করে সব কিছুতেই আসবে। বিএনপি নেত্রীও সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। এবার বাংলাদেশের জনগণের সামনে নাকে খত দিয়ে তওবা করেন। আর এ ধরনের কথা বলবেন না।
”
গয়েশ্বর বলেন, “কেরানীগঞ্জে ১৯২টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। এই নির্বাচনে সরকারি প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে সরকার জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। নির্বাচনের ফলাফল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে কারচুপির নানা কলাকৌশল করছে। ”
ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে দলের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী আসাদুজ্জামান, কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী আলহাজ নাজিমউদ্দিন মাস্টার, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব ও যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।