গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুরের মুজিবনগরে বনভোজন শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই বাসটি যশোরের চৌগাছার ঝাউতলায় রাস্তার ধারে পুকুরে পড়ে যায়।
এতে সাত শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলেই মারা যায়, আহত হয় অর্ধশতাধিক। পরে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আরো একজন।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে জেলা প্রশাসক চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শেষে গত সপ্তাহে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি।
তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিনা ইয়াসমিন। অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মিলু মিয়া বিশ্বাস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুব্রত কুমার বণিক এবং বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সহকারী পরিচালক আশরাকুর রহমান।
তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত রাস্তায় বীজ সংগ্রহের জন্য শাকের ডাঁটা শুকানোকে দায়ী করেছেন। বৃষ্টিতে ডাঁটা ভিজে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায় বলে তদন্ত কমিটি মনে করছে।
বিআরটিএ যশোরের সহকারী পরিচালক আশরাকুর রহমান জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় শিশুদের প্রাণহানির কারণে ব্যাপক আলোচিত বাসটি (রাজশাহী মেট্রো-জ-১১-০০৮০) রাস্তায় চলাচলের উপযুক্ততা হারিয়েছিল।
বাসটি সর্বশেষ ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ফিটনেস সার্টিফিকেট পায়, যার মেয়াদ শেষ হয় ২০১৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। এরপর আর বাসটির অবস্থা পরীক্ষা করা হয়নি।
এই ধরনের বাস রাস্তায় নামানো দণ্ডনীয় অপরাধ বলেও জানান তিনি।
দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি যশোর-বেনাপোল রুটে চলাচল করতো। নিয়ম অনুযায়ী অন্য কোনো রুটে বাসটি নিয়ে যেতে হলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হয়।
এক্ষেত্রে এই নিয়মও মানা হয়নি বলে জানান তদন্ত কমিটির সদস্য আশরাকুর রহমান।
এদিকে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় ১৬ ফেব্রুয়ারি চৌগাছা থানায় চার জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। আসামিরা হলেন- গাড়িটির চালক ইস্রাফিল হোসেন, চালকের সহকারী মহররম আলি এবং গ্রামবাসী দুই ভাই জাহাঙ্গীর আলম ও শহিদুল ইসলাম।
চালক ইস্রাফিল হোসেন ও চালকের সহকারী মহররম আলি যশোরের পুলিশ সুপারের কাছে আত্মসমর্পণ করে ইতোমধ্যে জামিন নিয়েছেন। এছাড়া গ্রেপ্তারের পর জাহাঙ্গীরও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জামিনে মুক্তি পান।
আরেক আসামি শহিদুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
থানার ওসি পরিদর্শক মতিয়ার রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফিটনেস সার্টিফিকেট না থাকা, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, রাস্তায় ডাঁটা ফেলে রাখা, চালকের অসতর্কতাসহ দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। ”
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।