আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পেশীশক্তির রাজনীতি এবং বুদ্ধিবৃত্তির মুন্ডুপাত



বিষয়টি দেখলে মনে হবে যে, অর্থহীন রাজনৈতিক পেঁচালের আর একটি রচনা; যা পড়লে দৃষ্টিভঙ্গির উপকারের চেয়ে হয় ক্ষতিকর সময় নষ্ট। তবে রচনাটি এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। গত ৪৩ বৎসরের দেশীয় রাজনীতিকে সম্পূর্ণ এক ভিন্ন মাত্রিকতা থেকে যাচাই করাই হলো আজকের প্রয়াস।

যে সকল বাস্তবতার আলোকে আলোচনা, তা হচ্ছে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এই দেশে, তথাকথিত গণতন্ত্র চর্চা হয় এখানে, তবে সার্বক্ষণিক একটি যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব রাজনৈতিক অংগনে। প্রায় প্রতিটি নির্বাচন এ দেশে ভয়ঙ্কর সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

সর্বস্তরে নৈতিকতার ব্যাপক অবক্ষয়। মনে হয় বর্তমান সময়ের মুসলমানরা গণতন্ত্রের মতো মানব রচিত শাসন ব্যাবস্থা পরিচালনা করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এহেন বিশ্বাসটি একেবারে অমূলকও নয়, সমসাময়িক মুসলমান নেতৃবৃন্দ যেখানে মানবরচিত শাসন ব্যবস্থাই সঠিকভাবে বুঝতে অক্ষম, সেখানে স্রষ্টার রচিত খিলাফত কিভাবে বুঝবে? ওরা যে আজকের যুগে “জালুমান জাহুলার” পর্যায়ের তা জানতে হলে ক্লিক করুন

“জালুমান জাহুলা” শব্দটি আরবী ভাষা; যার বাংলা অর্থ হচ্ছে “আত্মধ্বংসকারী গন্ডমূর্খ। ” ’৭১ এর (বাংলাদেশী) জাতীয়তা বোধের মেরুদ- গুঁড়িয়ে দিয়ে, আমরা এখন কেউ আওয়ামী লীগ, কেউ বিএনপি কিংবা জামাত-শিবির অথবা জেএমবি। দেশ বা জাতীয়তা বোধ এখন আমাদের কাছে গৌণ, মুখ্য হচ্ছে আমার দল।

দেশ গোল্লায় যাক- তাতে কী, দলকে ক্ষমতায় নিতে হবে। ক্ষমতার বাইরে থাকলে সকলে দেশ গেল, দেশ গেল বলে আর্তচিৎকার করে। তবে অন্তর পড়ে থাকে ক্ষমতা দখলের দিকে। ক্ষমতায় যাওয়ার পর ব্যাপক দুর্নীতিই প্রমাণ করে যে, ক্ষমতার বাইরে থেকে দেশের জন্য আর্তচিৎকারের উদ্দেশ্য কী ছিল?

মূর্খতা আমাদের নেতৃবৃন্দকে এমনিভাবে পেয়ে বসেছে যে, তারা জ্ঞানী এবং প্রকৃত বুদ্ধিজীবীদেরকে শত্রু মনে করে। চরম পর্যায়ের চাটুকাররাই এখন তাদের একমাত্র অবলম্বন।

চাটুকাররা সর্ববিষয়ে অভিজ্ঞ এবং একান্ত অনুগত পরামর্শদাতা। ক্ষমতা দখলের পর সকল প্রকার জাতীয় সমস্যা জ্ঞান বা দূরদৃষ্টি দিয়ে সমাধান না করে ক্ষমতার পেশীশক্তি দিয়ে সমাধান করাই হচ্ছে চাটুকারদের একমাত্র পরামর্শ। তাদের কারণে দেশ চালনায় বারবার ব্যর্থ হয়েও ওরাই হচ্ছে বর্তমান নেতাদের সর্বশেষ অবলম্বন। ইতিহাস তো অনেক দূরের কথা বর্তমান থেকেও তৃতীয় বিশ্বের নেতার শিক্ষা নিতে ব্যর্থ। খনা তাই বলেছিল-

খনা }
“গোশতে গোশত বৃদ্ধি,
শাকে বৃদ্ধি মল,

লেখক }
মূর্খরা মূর্খদের টানে
জ্ঞানীরা থাকে অতল।



কঠিন বাস্তব সত্য প্রকাশের জন্য খনার জিহবা কেটে নেয়া হয়েছিল। কারণ, সে যুগের চাটুকাররা ওই পর্যন্ত করেই সন্তুষ্ট ছিল। তবে বর্তমান চাটুকাররা খুন ও গুমে বিশ্বাসী, তাই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ প্রয়াস হিসেবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থাকাটাই যুক্তিযুক্ত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।