ভাড়া বাসায় স্থাপিত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের আট শতাধিক শাখাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিবিড় পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। এসব শাখার দৈনন্দিন লেনদেন, লকার ও ভল্ট প্রতিনিয়ত তত্ত্বাবধান করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে কোনো দুর্ঘটনা জনিত ক্ষতি পোষাতে শাখার ভল্টের টাকাকে বীমার আওতায় আনা হবে। শুধু তাই নয়, শাখাগুলোর গ্রাহক সম্পর্কিত তথ্য ও আশপাশে বাসিন্দাদের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সংরক্ষিত থাকবে। এসব শাখার ক্লোজ সার্কিট (সিসি) টিভির সঙ্গে সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা বিভাগের সঙ্গে যুক্ত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে এসব শাখায় সিসি টিভি যুক্ত করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, সারা দেশে সোনালী ব্যাংকের ১২০৪টি শাখার রয়েছে। এ ছাড়া বিদেশে আরও চারটি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে আট শতাধিক শাখা স্থাপন করা হয়েছে ভাড়া বাড়িতে।
এগুলোকে আগামী তিন মাসের মধ্যে নিজস্ব ভবনে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। কেননা সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ পরিদর্শনে বলা হয়েছে, ব্যাংকটির আট শতাধিক শাখা ঝুঁকিপূর্ণ। এর অধিকাংশই ঢাকার বাইরে অবস্থিত। নিরাপত্তা নিশ্চিতে সোনালী ব্যাংকের সব শাখার ভল্ট রুমগুলোর মেঝে ও দেয়ালগুলোকে আরসিসি ঢালাইযুক্ত করে স্টিল প্লেট যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভল্ট রুমে অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা ও বৈদ্যুতিক অ্যালার্ম যুক্ত করার ঘোষণাও দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ভল্ট ক্যাপাসিটির অতিরিক্ত অর্থ দৈনন্দিন বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থানান্তর করতে বলা হয়েছে। ভল্ট রুমে কোনো জানালা ও ভেন্টিলেটর না রাখতে পরামর্শ দিয়েছে পরিদর্শন কমিটি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সম্প্রতি সোনালী ব্যাংকের ১২০৪টি শাখায় পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রধান কার্যালয় ৬১টি টিম গঠন করে। ৬১টি আঞ্চলিক অফিসকে কেন্দ্র করে এসব টিম পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে ব্যাংকটির আট শতাধিকেরও বেশি শাখা।
গত জানুয়ারিতে সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখায় ভল্ট লুট হওয়ার পর তদন্ত কমিটি ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল ব্যাংকটির নিরাপত্তা জোরদারের জন্য। সেগুলো বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্ত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এসব শাখায় ইতোমধ্যে নিরাপত্তা বাড়াতে জনবল বৃদ্ধির জন্য কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (সিকিউরিটি ফার্ম) সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপনের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও তাদের সহায়তা দিচ্ছে বলে জানান প্রদীপ কুমার দত্ত।
এদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি এবং পরবর্তীকালে ব্যাংক লুটের ঘটনায় ব্যাংকের ইন্টারনাল সিস্টেমের উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। এখন আর চাইলেই কেউ হলমার্কের মতো ঘটনা ঘটাতে পারবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।