আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নৌপথে জোর প্রধানমন্ত্রীর

প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া নৌপথকে সচল রাখার লক্ষ্য সরকার ঠিক করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ধমনী এই নদীপথ।
“কিভাবে নৌপথগুলোকে সচল রাখা যায়, সে পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। আমাদের সম্পদ সীমিত, আমাদের উদ্যোগ প্রয়োজন। ”
শনিবার সকালে ঢাকার সদরঘাটে দেশে তৈরি বিআইডব্লিউটিসির যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি বাঙালি’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর এটিতে চড়েই চাঁদপুর রওনা হন তিনি।


রওনা হওয়ার পর নতুন নৌ-যানটির বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। পথে পথে জাহাজে থেকে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নিয়ে বুড়িগঙ্গা, মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, পরিবেশদূষণ রোধে বর্জ্য পদার্থের প্রবেশমুখ বন্ধ এবং অবৈধ অবকাঠামো অপসারণ কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন।
এসব কাজে গতি আনতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নির্দেশনাও হাসিনা দেন বলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবূল হক শাকিল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
বুড়িগঙ্গা থেকে মোহনপুর পর্যন্ত যাত্রায় বিভিন্ন স্থানে নদীর দু’পাড়ে দাঁড়ানো হাজার হাজার জনতা হাত নেড়ে এবং স্লোগান দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।

চাঁদপুরের মতলবের মোহনপুরে জাহাজে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনতে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে মানুষ

দুপুরে মোহনপুর পৌঁছে জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়েই বক্তব্য রাখেন হাসিনা।

বিআইডাব্লিউটিসি লঞ্চ ঘাটে এবং তার দু’দিকে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্থানীয় হাজারো নারী-পুরুষ তার কথা শোনেন।
চাঁদপুরের মতলবের মোহনপুরে জাহাজে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনতে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে মানুষ
বিআইডব্লিউটিসির ফেরি সেবাকে শক্তিশালী করতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকা শহরের চতুর্দিকে বৃত্তাকার নৌপথে যাত্রী পরিবহনের জন্য ছয়টি ওয়াটারবাস, দ্বীপাঞ্চলের মধ্যে যাত্রী পরিবহনের জন্য চারটি সি-ট্রাক, দুটি পন্টুন, দুটি অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী জাহাজসহ ২০০৯ সাল হতে সর্বমোট ৩০টি জলযান নির্মাণের কথা জানান তিনি।
দেশের ৫৩টি নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ১২ হাজার কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা গ্রহণের কথা জানিয়ে হাসিনা বলেন, “বুড়িগঙ্গার অবস্থা নিজেরাই দেখলাম। বর্জ্য বিভিন্ন জায়গায় এসে পড়ে, তা বন্ধ করতে হবে।


এই প্রসঙ্গে ঢাকায় নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ এবং দূষণ ঠেকাতে হাজারীবাগের চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলো সাভারে সরানোর কথাও বলেন তিনি।
নৌপথের উন্নয়নে পটুয়াখালীতে বাংলাদেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর, কেরানীগঞ্জের পানগাঁওয়ে দেশের প্রথম অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
বক্তব্যে খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মালিকানায় নৌযান থাকার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “স্টিমার সার্ভিস কিভাবে হবে? যদি সরকার প্রধানের ছেলের কোকো এক থেকে ছয় থাকে। হয় অন্যটাকে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেবে। না হয় চলতে দেবে না।


“সব সেক্টরেই একই অবস্থা ছিল। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে খাম্বা বানিয়েছিল। ”
এমভি বাঙালির পর আগামী জুন মাসে এমভি মধুমতি উদ্বোধনের ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-বরিশাল-খুলনা নৌপথের জন্য আরো দুটি যাত্রীবাহী জাহাজ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
“প্রায় সাত বছর পর যাত্রীবাহী জাহাজ নির্মিত হল। যাত্রীসেবার ক্ষেত্রে এটি মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত হবে।


এম ভি বাঙালি উদ্বোধনের পর তাতে চড়ে চাঁদপুরের মতলবের মোহনপুর যাওয়ার পর ডেকে দাঁড়িয়েই মেঘনা পাড়ে সমবেত জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে নৌপথে ভ্রমণের স্মৃতিচারণ করে হাসিনা বলেন, “আমি যখনি স্টিমারে চললাম, তখনি ছোটবেলার কথা মনে পড়ল। আমরা স্টিমারে টুঙ্গীপাড়ায় যেতাম। ওয়াইজঘাট, সদরঘাট বা নারায়ণগঞ্জ থেকে উঠে চাঁদপুর, বরিশাল হয়ে যেতাম।
এম ভি বাঙালি উদ্বোধনের পর তাতে চড়ে চাঁদপুরের মতলবের মোহনপুর যাওয়ার পর ডেকে দাঁড়িয়েই মেঘনা পাড়ে সমবেত জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


“বরিশালে ফুফুর বাড়িতে খেয়ে খুলনার আগে পাটগাতি বা গোপেরডাঙ্গা নামতাম। দাদী নৌকা পাঠাতেন। তাতেই টুঙ্গীপাড়া যেতাম। ”
যাত্রাপথে বাবার কবিতা পড়ে শোনানোর কথাও স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। “তবে, আনন্দের সেই ভ্রমণ এখন আর নেই।

সেই বাদাম তোলা নৌকা...। ”
এই অনুষ্ঠানে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, নৌ-পরিবহন সচিব মঞ্জুরুল ইসলাম ও বিআইডাব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানও বক্তব্য রাখেন।
বক্তৃতা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।