স্থানীয় হাই স্কুল পেরুবার সময় আমরা দেখলাম একটা শহীদ মিনার। কোথাকার কোন ভাষা আন্দোলনের সময় নাকি ঢাকার দুই তিনজন ছাত্র মারা যায়... তারপর থেকেই হিন্দুয়ানী বাংলার প্রতিটি স্কুলে স্কুলে শহীদ মিনার গজায়। জিনিসটার একটু বর্ণনা দেই। মিনারের পাদদেশে আছে একটি কবর। প্রতিদিন সকালে মিনার প্রদক্ষিন একটা রিচুয়াল।
খালি পায়ে, হাতে ফুল নিয়ে প্রভাতফেরিতে অংশ নিতে হয়।
"ইস্ট পাকিস্তান টু বাংলাদেশ"
-ব্রিগেডিয়ার সাদুল্লা খান, হিলাল ই জুরাত।
এই জেনারেল সাহেব একাত্তরে কিশোরগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে তার মনোভাব তুলে ধরলাম।
একজন পাকিস্তানী জেনারেলের বইতে এর থেকে বেশী আর কিই বা আশা করা যায়।
"শহীদ মিনারের পাদদেশে কবর" এই ধরনের কথা জীবনেও শুনি নাই। একজন পাকিস্তানী মানুষের কাছে এর থেকে বেশী আর কিইবাঁ আশা করা যায়। বেচারা তার বর্বর, মাথামোটা, অশিক্ষিত, মূর্খ, ইতর জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেছে মাত্র। মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রত্যেক পাকিস্তানী ঠিক এভাবেই চিন্তা করে।
আমার এক আত্মীয় একবার পাকিস্তানে গিয়েছিলেন সেখানে এক তরুণের কাছে জানতে চেয়েছিলেন একাত্তরে কি হয়ছিলো।
সে উত্তরে বলে হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধ। মুজিবের গাদ্দারির কারণে হিন্দুরা সফল হয়েছিলো। সেই আত্মীয় বললেন তুমি ভুল করছো বাংলাদেশ মুসলমান কান্ট্রি। সেই সময় অনেক মুসলমানও মারা গিয়েছিলো। সেই তরুণ চোখ টিপে বলল তারা কি হিন্দু ছিলো না মুসলমান ছিলো সেটা কি তুমি "লুঙি উতারকে দেখা"।
আত্মীয় খানিকটা উত্তেজিত হয়ে বলেন আমার এক পরিচিত মুসলমানকে তখন মেরে ফেলা হয়েছিলো। সেই তরুণ বলে, এটা অসম্ভব। হয় তোমায় পরিচিত মানুষ ভুল ইসলামের চর্চা করতো, অথবা তাকে আমরা মারিনি মেরেছে ইন্ডিয়ার সৈনিক। আমাদের সেনাবাহিনী ভুল করতেই পারে না। তুমি ইতিহাসের কিছুই জানো না...
পাকিস্তানীদের মনসতত্ত্ব এমনই।
যাই হোক, যা বলছিলাম। এ বছর একুশে ফেব্রুয়ারির কিছু আগে দেখলাম আমার কিছু পরিচিত ছোটভাই "শহীদ মিনার মূর্তিপূজা..." "শহীদ মিনার ভেঙে ফ্যালো..." টাইপ প্রবল উগ্র মৌলবাদী ধ্বংসাত্মক লেখা শেয়ার করছে। আমি তাদের ডেকে ভাস্কর্য আর মূর্তির পার্থক্য বোঝানোর চেষ্টা করলাম। খুব হাল্কা ভাষায় বোঝাতে চাইলাম কালচার আর রিলেজিয়ান ল্যাজেগোবরে করে ফেললে হবে না। শহীদ মিনার আমাদের আবেগের যায়গা এটা নিয়ে উল্টা পাল্টা করলে মানুষই সাইজ করে দেবে।
তেমন একটা সুবিধা করতে পারলাম না, আমার একগাদা হাদিসের রেফারেন্সের বিপরীতে সে আমাকে কেয়ামতের দিন সত্তুরটা মুসলমানদের দলের একটা দল জান্নাতে যাবে এই হাদিস ধরিয়ে দিয়ে প্রস্থান করলো।
আজ লেখাটা পড়তে গিয়ে মনে পড়লো সেই ছেলেটার কথা।
ব্রিটিশ চলিয়া গিয়াছে তবু তাহাদের দ্বিজাতি তত্ত্ব আজও মানুষ মারিতেছে,
পাকিস্তান চলিয়া গিয়েছে তবু তাদের ঔরসজাত পাকিমন পেয়ারুরা আজও আমাদের বিভক্ত করিয়া চলিতেছে।
লাস্টে একটা জোকস বলি।
এক পাকি মেজর ফ্যান পরিস্কার করার জন্য তার সদ্য বার্ণিশ করা টি-টেবিলে ওপর কাঁদামাখা জুতো নিয়েই উঠে পড়লেন।
স্ত্রী বলিলেন;
"টেবিলের ওপর একখানা কাগজ বিছাইয়া লইলেই তো পারো..."
সহাস্য মেজর সাহেব কহিলেন;
"বোকা মহিলা, আমি তো এমনিতেই নাগাল পাইতেছি..."
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।