আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণে আগ্রহ বাড়ছে সড়ক প্রকৌশলীদের

বিটুমিনের পরিবর্তে কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণে আগ্রহ বাড়ছে সড়ক প্রকৌশলীদের। সংস্কারের ঝামেলা কম থাকায় এবং দীর্ঘস্থায়ী ও সাশ্রয়ী প্রযুক্তি হওয়ায় বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কংক্রিটের সড়ক নির্মাণ প্রযুক্তি। সড়ক প্রকৌশলীরা বলেছেন, বিটুমিনের তৈরি সড়কের চেয়ে কংক্রিটের তৈরি সড়ক বেশি টেকসই। এতে নির্মাণ ব্যয়ও ১২ থেকে ১৫ শতাংশ কম হয়। বন্যার পানি ও বর্ষার বৃষ্টিতে বিটুমিনের সড়ক যেখানে ভঙ্গুর হয়ে পড়ে সেখানে কংক্রিটের সড়ক থাকে সুদৃঢ় ও অটুট।

প্রকৌশলীদের মূল্যায়ন- পানিতে কংক্রিট শক্তি পায় আর বিটুমিন শক্তি হারায়। এ জন্যই বর্ষায়, জলাবদ্ধতায় বিটুমিনের তৈরি সড়কের ক্ষতি হয় সবচেয়ে বেশি।

সড়ক প্রকৌশলীদের মতে, বাংলাদেশের জলবায়ু, প্রচুর বৃষ্টিপাত, বন্যা, জলাবদ্ধতাসহ নানারকম প্রাকৃতিক দুর্যোগে সড়কব্যবস্থা দ্রুত বিনষ্ট হচ্ছে। সড়কে ফাটল, ছোট-বড় গর্ত, বিটুমিন উঠে ইট-পাথর বেরিয়ে পড়াসহ বিভিন্ন কারণে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। এসব প্রেক্ষাপটে কংক্রিটের সড়ক নির্মাণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

সূত্র জানায়, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) দেশের মোট ২১ হাজার ৪৮০.২৫ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১৪ হাজার ৬৫২ কিলোমিটারে ২০১২ সালের মার্চে একটি পর্যবেক্ষণ ও জরিপ করে। এতে দেখা যায়, ৩ হাজার ৫৩৩ কিলোমিটার সড়কই যান চলাচলের একেবারে অনুপযোগী, ৭ হাজার কিলোমিটার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বাকি অংশের অবস্থাও ভালো নয়। সড়কের এ বিপর্যয়ের কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। বাড়ছে জীবন ও সম্পদ হানি।

এ বাস্তবতার প্রেক্ষাপটেই দেশের সড়ক নির্মাণে প্রচলিত নির্মাণ কৌশল থেকে বেরিয়ে আধুনিক, বিশ্বমানের ও টেকসই সড়ক নির্মাণের কথা ভাবা হচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোয়ও একই সমস্যার মুখোমুখি হয়ে বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা বিটুমিন বা অ্যাসফল্ট প্রথা ছেড়ে সড়ক নির্মাণে ব্যবহার করছেন কংক্রিট যা রিজিড পেভমেন্ট (জরমরফ চধাবসবহঃ) নামে পরিচিত। এ সড়ক প্রচলিত বিটুমিন সড়কের তুলনায় অনেক বেশি টেকসই এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিকভাবেও সাশ্রয়ী। জানা গেছে, বিটুমিনের সড়কের স্থায়িত্বকাল ২০ বছর বলা হলেও অতিরিক্ত পণ্যবাহী যান চলাচলের কারণে কিছু এক/দুই বছর, আর বেশির ভাগ সড়কই পাঁচ বছরের মধ্যেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। অথচ আগে সড়ক নির্মাণে বিটুমিনের পরিবর্তে কংক্রিটই ব্যবহৃত হতো, যা স্থায়িত্বেও ছিল অনন্য।

দ্য গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক মহাসড়কটি এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো সড়কের মধ্যে একটি। ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার আয়তনের এ মহাসড়কটি চট্টগ্রাম থেকে ভারত, পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তানের কাবুলে মিশেছে। প্রায় চার শতাব্দীকাল পেরোলেও মহাসড়কটি এখনো টিকে আছে। ইউফ্রেটিস নদীতীরের দেশগুলোয়ও একই প্রযুক্তিতে অনেক সড়ক নির্মিত হয়েছে। ধারণা করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব কাল থেকেই ইরাকে প্রথম রিজিড বা কংক্রিট সড়ক নির্মিত হয়।

তখন থেকেই সড়ক নির্মাণে অত্যন্ত কার্যকর নির্মাণ কৌশল হিসেবে এ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রকৌশলীরা জানান, একসময় বাংলাদেশে সিমেন্ট আসত ইন্দোনেশিয়া ও পরে ভারত থেকে। ফলে কংক্রিটের সড়ক নির্মাণ করাও ছিল বেশ ব্যয়সাধ্য। সিমেন্ট সংকট ও পশ্চিমা দাতাদের চাপে বাধ্য হয়েই এ দেশের সড়কে বিটুমিন ব্যবহার শুরু হয়। বর্তমানে সিমেন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশ শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, সিমেন্ট রপ্তানিও হচ্ছে।

এমনকি শিল্পটি ব্যাপকভাবে বিকাশ লাভ করলেও চাহিদা না বাড়ায় তার পরিসর খুব বেশি বাড়ানো যাচ্ছে না। তাই সড়ক নির্মাণে কংক্রিটের ব্যবহারই বিটুমিনের শৃঙ্খল থেকে বেরোবার কার্যকর উপায়। জানা গেছে, বিশ্বের সব উন্নত দেশেই কংক্রিট সড়ক বা রিজিড পেভমেন্ট নির্মিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রায় সব শহরের সড়কই নির্মিত হচ্ছে এ প্রযুক্তিতে।

সেখানে মাত্র ছয় মাইলের একটি সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে শতাব্দীকাল আগে শুরু হয় কংক্রিট সড়কের যাত্রা। যুক্তরাষ্ট্রে গত ২০ বছরে ১১ হাজার মাইলেরও বেশি সড়ক নির্মিত হয়েছে কংক্রিটেই। এমনকি দেশটির মোট সড়ক যোগাযোগের প্রায় ৫০ শতাংশই কংক্রিটে তৈরি। জাপান ও ইতালি সড়ক নির্মাণে এ পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করেছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোও এখন আর পিছিয়ে নেই।

ভারত ও শ্রীলঙ্কায় সড়ক, উড়ালসড়কসহ বিভিন্ন প্রকল্পে কংক্রিটের ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) 'ইভালুয়েশন অব ফ্লেঙ্বিল অ্যান্ড রিজিড পেভমেন্ট কনস্ট্রাকশন ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক গবেষণাপত্রে বলা হয়- (বিটুমিনের) ফ্লেঙ্বিল পেভমেন্টের চেয়ে (কংক্রিটের) রিজিড পেভমেন্টই সময়োপযোগী ও সাশ্রয়ী। এ ধরনের সড়কের স্থায়িত্ব প্রায় ৫০ বছর। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করলে আরও বহু বছর নির্বিঘ্নে ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ মান বজায় রেখে নির্মাণ করলেও বিটুমিন সড়কের আয়ুষ্কাল সর্বোচ্চ ১০ বছর।

অনেক বিশেষজ্ঞ অবশ্য পাঁচ-ছয় বছরের বেশি স্থায়িত্বের কথা বলেন না। আর ঘন ঘন সংস্কারের ঝামেলা তো রয়েছেই। সড়ক প্রকৌশলীরা জানান, পিচমিশ্রিত বিটুমিন সড়কের চারটি স্তর থাকলেও তা শুধু ওপরের স্তরকেই অাঁকড়ে রাখতে পারে কিন্তু রিজিড পেভমেন্টের কংক্রিট তার সব উপাদানের মধ্যে দৃঢ় বন্ধন সৃষ্টি করে বলে অবকাঠামো সহজে নষ্ট হয় না। যেমন একটি সড়ক দ্রুত নষ্ট হলেও ওই সড়কেরই একটি সেতু কংক্রিট নির্মিত বলে ৩০-৪০ বছর পেরোলেও তেমন ক্ষতি হয় না। এর অন্যতম কারণ, বিটুমিন পানিতে শক্তি হারায়, কিন্তু কংক্রিট পায় শক্তি।

তা ছাড়া কংক্রিটের সড়ক নির্মাণে ব্যবহৃত হয় পোর্টল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্ট, কোর্স অ্যাগরিগেইট, বালু এবং পানি যার সবটাই শক্তিশালী প্রাকৃতিক উপাদান। এ ছাড়াও অবকাঠামোর কার্যক্ষমতা ও স্থায়িত্ব বাড়াতে তাতে মেশানো হচ্ছে আধুনিক নানা উপাদান। ফলে কংক্রিট সড়ক হচ্ছে অত্যন্ত শক্ত, নিরেট ও অধিক চাপসহনীয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী। কারণ, এ দেশের বাতাসে আদ্রতা অনেক বেশি।

কংক্রিট চরমভাবাপন্ন জলবায়ুতেও রাসায়নিক আক্রমণ সহ্য করে টিকে থাকতে পারে। এ ধরনের সড়কের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ যেমন কম, তেমনি ভারী ও বেশি যানবাহন চলাচলের জন্যও উপযোগী। সূত্র জানায়, স্থান ও জলবায়ুর ধরন অনুযায়ী বিশ্বে বিভিন্ন প্রযুক্তিতে কংক্রিট সড়ক নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে বড় সড়কের ক্ষেত্রে রোলার কমপ্যাডক কংক্রিট (আরসিসি) এবং ছোট পরিসরে কমপ্যাকড কংক্রিট (সিসি) পদ্ধতি নির্মাণের বহুল প্রচলিত ধারা। তবে সম্প্রতি নির্মাণকাজ দ্রুত ও অধিক টেকসই করতে কাস্ট-ইন-সিটু ছেড়ে প্রি-কাস্ট/প্রি-স্ট্রেস পদ্ধতি বেছে নিচ্ছেন প্রকৌশলীরা।

কারণ, জয়েন্ট টু জয়েন্ট পদ্ধতিতে নির্মিত এ কংক্রিট মূলত প্রি-কাস্ট/প্রি-স্ট্রেসড প্রক্রিয়ায় তৈরি লম্বা ক্লিয়ার স্প্যান যা যে কোনো স্থান থেকে তৈরি এবং পরিবহন করে নির্মাণস্থানে খাপমতো জোড়া লাগানো যায়। কোনোভাবে এর কোনো স্প্যান ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা সরিয়ে অন্য একটি স্প্যান জুড়ে দেওয়া যায়। ফলে বিটুমিন সড়কের মতো বছর বছর কার্পেটিংয়ের ভোগান্তি পোহাতে হয় না এবং সাশ্রয় হয় বিপুল অঙ্কের অর্থ। যেসব সড়কে বড় ও ভারী কার্গো ভ্যান চলে সেসব সড়কে ফাইবার রি-ইনফোর্সড কংক্রিট ব্যবহারে অত্যন্ত শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী সড়ক নির্মাণ করা যায়। কংক্রিট পুনর্ব্যবহারযোগ্য বলে তা বেশ পরিবেশবান্ধব।

প্রতিনিয়তই পুরনো অবকাঠামো ভেঙে গড়া হচ্ছে নতুন ভবন, যার অব্যবহৃত কংক্রিট ব্যবহার করে সহজেই হালকা ধাঁচের সড়ক নির্মাণ করা যায়। উল্লেখ্য, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট নগরীর বিজয় সরণির র্যাংগস ভবনের ভাঙা কংক্রিট দিয়ে নির্মাণ করেছে রেমড আর্থ হাউস। জার্মানির শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্প্রতি কংক্রিট অ্যাডমিক্সারে জুড়ে দিচ্ছেন প্লাস্টিক বর্জ্য, ফাইবার, গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ারের টুকরা ও পলেস্তেরিন (কর্কশিট) জাতীয় উপাদান। ফলে কংক্রিটের পানিসহনীয়তা বাড়ার পাশাপাশি সাধারণ সড়ক নির্মাণ থেকে ১২% অর্থ, ১৫% নির্মাণ সময় সাশ্রয় সম্ভব হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বিটুমিন সড়ক গাড়ির জ্বালানি খরচ বাড়িয়ে দেয় এবং টায়ারের প্রচুর ক্ষয় করে।

তা ছাড়া ভঙ্গুর সড়কগুলো যানবাহনের কাঠামোরও আয়ু কমিয়ে দেয়। অথচ কংক্রিটের সড়ক ১০%-এর বেশি জ্বালানি সাশ্রয় করে যানবাহনের মাইলেজ বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের অধিকাংশ সড়ক-মহাসড়কই নষ্ট হয় বর্ষা মৌসুমে। সে সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত, বন্যা ও জলাবদ্ধতায় সড়কের পিচ-বিটুমিন উঠে গিয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গ্রামের সড়কগুলোর অবস্থা আরও খারাপ।

বৃষ্টি বা বন্যার সময় প্রচণ্ড বেগে পানি সড়কের ওপর দিয়ে প্রভাবিত হয়, এতে সহজেই বিটুমিন উঠে গিয়ে মাটি আলগা হয়ে যায়। তা ছাড়া সড়কের দুই পাশের গাছ থেকে অনবরত পানি পড়তেই থাকে। ফলে সড়কগুলো টিকতে পারছে না। অথচ কংক্রিট উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে চমৎকার বন্ধন। এটা স্ল্যাব আকারে থাকে অনেকটা ঘরের ছাদের মতো।

তাই এর ওপর দিয়ে পানি বয়ে গেলেও তেমন ক্ষতি হয় না। নিচ থেকে মাটি সরে গেলেও ধসে পড়ে না। রাজধানীতে গত কয়েক বছরে ডিসিসি অল্প কিছু রাস্তা কংক্রিটে নির্মাণ করেছে, যা বর্তমানে ভালো অবস্থায় রয়েছে। জানা গেছে, বিটুমিনে ব্যবহৃত কালো রঙা পিচ সাধারণত অশোধিত পেট্রলিয়ামের উচ্ছিষ্ট বা বর্জ্য থেকেই তৈরি হয়। এতে পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বিষাক্ত হাইড্রোকার্বন থাকে।

পিচ উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন এবং ব্যবহারের সময় বাতাসে প্রচুর হাইড্রোকার্বন ছড়ায়। আর এ বিষাক্ত উপাদান পাথরে মিশিয়ে সড়ক নির্মিত হয়। অথচ এটা মানবদেহ, প্রাণীকুল ও পরিবেশের ওপর মারাত্দক প্রভাব ফেলে।

সূত্র জানায়, প্রতি বছর দেশের সড়কগুলো মেরামত ও কার্পেটিংয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় হয়। অথচ কংক্রিটের সড়ক নির্মিত হলে এসব ঝামেলা থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।

তবে সে ক্ষেত্রে ব্যাপক পর্যবেক্ষণ, গবেষণা ও গাইডলাইন ঠিক করতে হবে যেন সবকিছুই সুষ্ঠুভাবে এবং নিয়ম মেনে করা হয়। ঠিকাদার বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজের নীতিমালা করতে হবে। প্রকৌশলী, ঠিকাদার এমনকি শ্রমিকদের এ প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সড়ক, মহাসড়কে কংক্রিট সড়কের কোন পদ্ধতি ও স্ট্যান্ডার্ড মানা হবে তাও ঠিক করতে হবে। কারণে অকারণে যেন সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করা না হয় সে জন্য সড়কের নিচে টানেল পথে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ইন্টারনেট, টেলিফোনসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় লাইন টানা যেতে পারে।

তবে সবচেয়ে আগে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে দেশের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের। বিশেষ করে সওজ, এলজিইডি, বুয়েটসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে। সড়ক যোগাযোগের সর্বত্রই যদি এ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তাহলে সিমেন্ট, রেডিমি, স্টিল ও অন্যান্য শিল্পের পাশাপাশি কংক্রিট স্প্যান নির্মাণের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে, ঘুচবে বেকারত্ব। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. নুরুল হুদা এর আগে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, কংক্রিটের সড়ক নির্মাণ আমাদের সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে নতুন গতি আনতে পারে। তিনি বলেন, ষাটের দশকে দেশের অধিকাংশ সড়ক তৈরি হতো সিমেন্ট দিয়ে।

তখন জেলা পরিষদ এবং সিঅ্যান্ডবির রাস্তা ছিল দেশজুড়ে। পরে পর্যায়ক্রমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বিটুমিনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। তিনি বলেন, সিমেন্টের তৈরি রাস্তায় খরচ কম। তবে বিটুমিনের রাস্তার বড় সমস্যা হচ্ছে টাকার অভাবে বছর বছর মেরামত করা যায় না। অন্যদিকে এসব রাস্তায় মবিল পড়লে দ্রুত রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়।

উত্তরাঞ্চলের রংপুর, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলায় কংক্রিটের রাস্তা করার উপযোগী। এসব রাস্তায় খরচ কম, স্থায়িত্ব বেশি। ইঞ্জিনিয়ার নুরুল হুদা আরও বলেন, রাজধানীর অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আমরা বানিয়েছি। সে হিসাবে সড়ক নির্মাণে রাজউকের অভিজ্ঞতা দীর্ঘ দিনের। এয়ারপোর্ট রোড, মিরপুর রোড, নবাবপুর রোড, প্রগতি সরণি, গুলশানের রাস্তা, বিজয় সরণি ওভারপাস, কুড়িল ফ্লাইওভার, উত্তরা তৃতীয় প্রকল্পসহ অনেক রাস্তা আমরা তৈরি করে সিটি করপোরেশনকে দিয়েছি।

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।