আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লোকাল সোনার খনি

দেশি ছাগলের শরীর যে লেভেলের কালো, মুখটা ঠিক সে লেভেলের কালো করে আমাদের মাঝে এলেন মোকাম্মেল ভাই। আমরা তাকে সম্মিলিতভাবে জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে। মোকাম্মেল ভাই কোনো জবাব দিলেন না। আমরা আমাদের প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করলাম। মোকাম্মেল ভাই এবার মুখ খুললেন, আর কইস না।

আমি যেইদিন মোবাইল কিনি, তার একদিন পরেই মোবাইলের দাম কইমা যায়। ক্যান, একদিন আগে দাম কমলে সমস্যাটা কী! আমরা মুখে হাসি চাপিয়ে বললাম, ও, এই কথা। তার মানে আপনি বেশি দামে মোবাইল কিনে ঠকেছেন, এই তো? মোকাম্মেল ভাই রামঝাড়ি লাগালেন, ধুর মিয়ারা, আন্দাজে কথা কইয়ো না। আমি মোবাইল কিনে ঠকি নাই। মোবাইলের কথা বইলা একটা উদাহরণ দিলাম।

ঠকছি বিয়া কইরা। মোবাইল কিনার পরদিনই যেমন মোবাইলের দাম কইমা যায়, তেমনি বিয়া করার পরই বিয়ার খরচ কইমা গেছে। বিয়ার খরচ কমে গেছে মানে? আমাদের সম্মিলিত প্রশ্নে মোকাম্মেল ভাই সবিস্তারে কথা জুুুড়লেন- শোনো তাইলে। আমি যখন বিয়া করছি, তখন একটা খাতেই খরচ হইয়া গেছিল তিন লাখ টাকা। বিয়াটা যদি আমি এখন করতাম, তাইলে সেই খাতে এক লাখ টাকা লাগত কিনা সন্দেহ আছে।

এইটা কোন খাত জান? গয়নাগাটির খাত। এখন বিমান বন্দরে কেজি কেজি স্বর্ণ পাওয়া যায়, বুঝতেই পারতাছ গয়নাগাটি বানাইতে এখন কত স্বল্প খরচা পড়ব। ইস, কেন বিয়াটা আগে করছিলাম! পাঠক, মোকাম্মেল ভাইয়ের মতো অনেকেই হয়তো ভাবছেন যেহেতু বিমান বন্দরে ম্যালা পরিমাণ সোনা যাওয়া যাচ্ছে, অতএব সোনার দাম বুঝি অনেক কমে গেছে। আসলে কিন্তু তা না। কারণ এই সোনা আপনার বউ বা বান্ধবীর গয়না বানানোর কাজে ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই।

তবে এই সোনা নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ থাকতে পারে। তাহলে চলেন গবেষণা করি। প্রথমেই আমার এক প্রতিবেশীর গবেষণার বিষয়টি তুলে ধরা যাক। এই প্রতিবেশীর সঙ্গে আগে আমি হাঁটতে বের হতাম। কিন্তু এখন আর তাকে পাওয়া যায় না বললেই চলে।

তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এখন আপনি থাকেন কই? হাঁটেন টাটেন না? প্রতিবেশী বলল, হাঁটি, তবে এলাকা পরিবর্তন করেছি। এখন এদিকে না হেঁটে বিমানবন্দর এলাকায় চলে যাই। এতো এতো সোনা পাওয়া যায় এইখানে। যদি একটা টুকরা কেউ ভুলে ফেলে চলে যায়, আর আমি যদি পেয়ে যাই, তাহলে অন্তত একটা স্বর্ণের আংটি তো বানাতে পারব। আপনি হয়তো জানেন না ভাই সাহেব, স্বর্ণের আংটি পরার খুব খায়েশ আমার।

বিমান বন্দরের সোনা নিয়ে সবাই ব্যক্তি স্বার্থের কথা চিন্তা করলেও আমার এক বন্ধুর মুখে চিন্তার ছাপ দেখা গেল। পেশায় সে শিক্ষক। বন্ধু কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে বলল, এইভাবে চলতে থাকলে তো আমার ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় নম্বর কম পাবে। তার কথায় আমি মোটামুটি শব্দ করে হেসে ফেললাম। অতঃপর জিজ্ঞেস করলাম, বিমান বন্দরে সোনা প্রাপ্তির সঙ্গে তোর ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষায় নম্বর কম পাওয়ার সম্পর্ক কোথায়? বন্ধু বলল, সম্পর্ক আছে।

ওদের ভূগোল পরীক্ষায় এসেছিল পৃথিবীর বিখ্যাত একটি সোনার খনির নাম লিখ। আমি আশঙ্কা করছি, ওরা আবার হযরত শাহ্জালাল বিমানবন্দরের নাম লিখে চলে এলো কি না।

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।