ইমরান তাহিরের বলটা সোজা ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে সীমানার ওপাশে আছড়ে ফেললেন। টিভিতে ভেসে এল ভাষ্যকারের মুগ্ধতা মাখানো কণ্ঠস্বর—‘বিরাট কোহলি, ইউ রান মেশিন!’ কোহলি রান মেশিন, এ কথা পুরোনোই হয়ে গেছে। প্রশ্নটা হচ্ছে, এই মেশিনটা প্রতিপক্ষের কাছে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের আতঙ্ক হয়ে উঠেছে কি না। সামনে যাকেই পাচ্ছেন, কোহলি যে দুমড়েমুচড়ে ছুড়ে ফেলছেন। যেমন আজ গুঁড়িয়ে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ফাইনালে যাওয়ার আশা।
কোহলির ব্যাটে আসা ৪৪ বলে ৫টি চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৭২ রানের সৌজন্যে ৬ উইকেটের অনায়াস জয় নিয়ে ভারত গেল ফাইনালে। ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালটিরই দুই প্রতিপক্ষ মুখোমুখি হচ্ছে আবার।
একে তো সেমিফাইনাল, তার ওপর ১৭৩-র মতো রান করতে হবে তাড়া। উত্তেজনাপূর্ণ একটা ম্যাচের অপেক্ষায় ছিলেন যাঁরা, তাঁদের সেই আশার গুড়ে বালি দিলেন কোহলি। দলীয় ৩৯ রানে রোহিত শর্মা ফিরে যাওয়ার পর নেমেছিলেন।
এরপর থেকে সময় যতই গড়িয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকাকে ম্যাচ থেকে ততই ছিটকে দিয়েছেন। টানা পাঁচ জয় নিয়ে ফাইনালে গেল ভারত। আরও একবার সেমিফাইনাল-দুঃখ নিয়ে বাড়ি ফিরল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার অবশ্য তাদের করার কিছুই ছিল না। ভাগ্যকেও দুষতে পারবে না।
সবচেয়ে বড় কথা, কেউ বলতে পারবে না দক্ষিণ আফ্রিকা আবার ‘চোক’ করেছে। সে রকম চাপের পরিস্থিতি তৈরির আগেই তো ম্যাচ শেষ!
সেই ১৯৯২ থেকে শুরু। বিশ্বকাপ মানেই দক্ষিণ আফ্রিকার কেবল দুঃখ-জাগানিয়া গল্প। সব গল্পের এক শিরোনাম—চোক, চোক এবং চোক! পরিসংখ্যান অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষেই ছিল আজ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে ১৭২ কিংবা তার বেশি রান করে এর আগে ম্যাচ হারেনি কোনো দল।
কিন্তু কোহলি যে সব রেকর্ড ভেঙে-টেঙে দেবেন বলেই পণ করেছেন!
দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ১৭৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই এগিয়েছে ভারত। প্রথম ওভারে সেই যে ১৪ রান তুলে শুরু, এরপর আর ভারতের রানের চাকা থামাতেই পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের ইনিংসটাও হয়ে থাকল কোহলিময়। ভারতের পাঁচ জুটির চারটিতেই থাকল তাঁর নাম। এর মধ্যে তৃতীয় উইকেটে যুবরাজ সিংয়ের সঙ্গে ৫৬ রানের জুটিটা যদি হয় ভিত্তি, তবে পঞ্চম উইকেটে সুরেশ রায়নার সঙ্গে ৩৪ রানের জুটিটা হলো সেই ভিত্তিতে ভর করে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান আর বলের ব্যবধান কমিয়ে ফেলার।
মাত্র ১৫ বলে যে এই ৩৪ রান এনে দিয়েছে এই জুটি।
ভারতের সব ব্যাটসম্যানই কম-বেশি রান পেয়েছেন। তবে টানা চার ম্যাচে তৃতীয় ফিফটি করে আলোটুকু কেড়ে নিলেন কোহলিই। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানের মালিকও এখন তিনি। ৫ ম্যাচে মোট রান ২৪২।
গড়? ১২১!
কোহলি, ইউ রান মেশিন!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।