ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসি) লোকসভা নির্বাচনের তফসিল বাতিল অথবা স্থগিত করার হুমকি দেওয়ার পর কিছুটা সুর নরম করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশাসনের আট কর্মকর্তার বদলিতে রাজি হলেও এসব পদে নির্বাচন কমিশন যাঁদের নিয়োগ দিয়েছে, তাঁদের মানতে রাজি নন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, আজ বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে মমতার সরকার নতুন নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তাদের মেনে না নিলে কমিশন তাদের সিদ্ধান্ত নেবে।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে নিরপেক্ষভাবে কাজ না করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন গত সোমবার পাঁচজন জেলা পুলিশ সুপার, একজন জেলা প্রশাসক ও দুইজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে বদলি করে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের বদলির আদেশ মানবেন না বলে ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করে কোনো কর্মকর্তাকে বদলির আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই। প্রয়োজনে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হোক। তবুও তিনি কর্মকর্তাদের বদলি করবেন না।
এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন গতকাল সকালে ঘোষণা দেয়, আট কর্মকর্তাকে বদলি করা না হলে পশ্চিমবঙ্গের সংশ্লিষ্ট আসনগুলোতে নির্বাচন বাতিল বা স্থগিত করা হবে।
এমনকি রাজ্যের মুখ্য সচিবের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এই হুমকির পর আগের অনড় অবস্থান থেকে সরে আসে রাজ্য সরকার।
সূত্র জানায়, কমিশনের হুমকির পর রাজ্যের মুখ্য সচিব সঞ্জয় মিত্র গতকাল সকালে মমতার নির্দেশে নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে বদলির আদেশ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন, আট কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হবে। তা ছাড়া বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্য সরকারের ওপর কেন আস্থা রাখা হয়নি, তাও জানতে চাওয়া হয়।
সূত্র জানায়, মুখ্য সচিব চিঠিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে আইএএস ও আইপিএস কর্মকর্তাদেরও একটি তালিকা পাঠান। তিনি অনুরোধ করেন, আট কর্মকর্তার স্থলে যেন এই তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এর আগে গতকাল সকালে রাজ্য সরকার নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্বাচন বাতিল বা স্থগিত করার হুমকি প্রসঙ্গে জানতে চায়। পক্ষান্তরে বদলির আদেশে সই করতে রাজ্য সরকারকে গতকাল বেলা ১১টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে নির্বাচন কমিশন বলে, অন্যথায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কমিশনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, কমিশন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে বাধ্য...কর্মকর্তাদের বদলি করা না হলে সংশ্লিষ্ট আসনগুলোতে নির্বাচন বাতিল বা স্থগিত করা হতে পারে।
আট কর্মকর্তার বদলি নিয়ে মমতার ভূমিকায় রাজ্যজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। কড়া ভাষায় নিন্দা জানায় কংগ্রেস, বিজেপি ও বাম দল। কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, পাগলের মতো কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্বাচন কমিশনের উচিত জামিন অযোগ্য ধারায় মমতার বিরুদ্ধে মামলা করে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া।
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, উনি আইনের তোয়াক্কা করেন না।
গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরতে চাইছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের খুব দরকার ছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।