বসে আছি। বসে থাকা ছাড়া আপাতত আর কিছু করার নেই। বিদ্যুৎ চলে গেছে। রুমের মধ্যে ঘুটঘুটে অন্ধকার। যেদিকে তাকাই শুধু কালো ... কোথাও কোন আলো নেই।
আলোর জন্য অপেক্ষা করছি। হঠাৎ একরাশ আলো জানালা গলে রুমে ঢুকে পড়লো। কিছুক্ষনের মধ্যে সে আলো আবার মিলিয়েও গেল। তারও কিছুক্ষন পরে বিকট শব্দে রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। আমি জানালার পাশে এসে দাড়ালাম।
আকাশে মেঘ জমেছে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। ঝড়ো বাতাস বইছে চারিদিকে। সবকিছু মিলিয়ে কেমন একটা থমথমে রাত!
একটা সরকারি কাজে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় এসেছি। ভেবেছিলাম কাজ শেষ করে বিকেল বেলায় ঢাকায় ফিরে যাব।
কাজ শেষ হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই থেকে যেতে হলো। অফিসের লোকজন উপজেলা পরিষদের ডাকবাঙলোতে থাকার ব্যবস্থা করেছে। শুধু কেয়ারটেকার ছাড়া ডাকবাঙলোতে আর কোন জনমানব নেই।
ল্যাপটপে কাজ করছিলাম।
বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরে ল্যাপটপের অবশিষ্ট চার্জটুকুও শেষ। রুমে কোন মোমবাতি নেই। দড়জা খুলে কেয়ারটেকারের খোজে বের হলাম। কেয়ারটেকারটা যে রুমে থাকে সে রুমের দড়জা আটকানো। বেশ কয়েকবার চেচিয়ে ডাকলাম।
ঝড়ো বাতাসের শব্দ, মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দের মধ্যে সে ডাক কেয়ারটেকারের কানে ঠিক পৌছছে কিনা ঠিক বোঝা গেল না । কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর হাল ছেড়ে দিয়ে আবার রুমে ফিরে আসলাম।
বাইরে অঝরে বৃষ্টি ঝড়ছে। কেমন একটা ঠান্ডা বাতাস জানালা গলে গায়ে এসে লাগছে। সিদ্ধান্ত নিলাম শুয়ে পড়বো।
মোবাইলের আলোতে মশাড়ি টাঙ্গিয়ে নিলাম। শুয়ে পড়লাম। বৃষ্টি পড়ার শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। আমি ঘুমানোর চেষ্টায় মনোযোগী হলাম। না ঘুম আসছে না।
একে তো নতুন জায়গা। তার ওপর জনমানবহীন কেমন বিদঘুটে নিস্তব্দতা। কিছুতেই ঘুম আসছে না।
বাধ্য হয়েই বিছানা থেকে উঠে পড়লাম। জানালার কাছে এসে একটা সিগারেট ধরালাম।
তখনও অঝরে বৃষ্টি ঝড়ছে। হালকা বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। মোবাইল ফোনে সময় দেখলাম। বারটা বেজে বাহান্ন মিনিট। উপজেলা শহরের জন্য এটা গভীর রাত।
তার ওপর বর্ষার এই ওয়েদার।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।