শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে পাইকগাছা '' সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম'' এবং "মুক্তিযোদ্ধা সংসদ" শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারী পাক হানাদারদের এদেশের দোসর জামায়াত,রাজাকার আর আলবদরদের দ্রুত বিচারের দাবীতে মানব বন্ধন পালন করা হয়। মানব বন্ধনে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদেরও অংশ নেবার আহ্বান জানানো হয়। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে সকাল ১০টার আগেই পৌঁছে যাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে।
মানব বন্ধনে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের পাক হানাদার আর তাদের দোসরদের নির্মমতার বর্ণনা দেন পাইকগাছা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হসেন বাচ্চু,সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গি,উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অধক্ষ্য আবুল কালাম আজাদ সহ অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
মানব বন্ধন শুরু করার সাথে সাথে বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ।
মুক্তিযোদ্ধাদের বর্ণনায় নতুন প্রজন্মের সবাই জানতে পারে অনেক ঘটনার কথা। জানা যায় যদি কখনও কোন মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার আলবদররা ধরতে পারত তবে তাকে হাত-পা বেঁধে পুরা শরীর ব্লেড বা ছুরি দিয়ে চিরে মাখানো হত লবণ,মরীচের গুঁড়া বা সোডা। তারপর বাঁধা হত জীপের পিছনে,সমস্ত প্রধান সড়কে টানা হত সেই হতভাগ্য মুক্তিযোদ্ধাকে। হানাদাররা যখন সেই লাশ নদীতে ফেলে দিত তখন আর সেই শহীদের লাশটি চেনার আর কোন উপায় থাকত না। যদি কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করত পুড়িয়ে দেওয়া হত তার বাড়িঘর,ধরে নিয়ে যেত নারীদের।
সবথেকে যে বিষয়টি জেনে রাগে ক্ষোভে মনটা বিষিয়ে গেল তা হল,পাইকগাছার কপিলমুনি হানাদারদের যে ঘাটি ছিল সেটা দখল করতে মুক্তিযোদ্ধাদের ১৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ঘাটি দখল করে সেখানে পাওয়া যায় প্রায় শতাধিক নারী,যার অধিকাংশই শহীদ,সবথেকে বর্বর বিষয় ছিল অসংখ্য নারীদের পাওয়া যায় বিবস্ত্র অবস্থায় দেয়ালে হাত পা পেরেক বিদ্ধ অবস্থায়। মানে আমাদের মা-বোনদের বিবস্ত্র করে হাতেপায়ে পেরেক বিদ্ধ করে অত্যাচার করত। আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা যখন এই ঘটনা বলছিল,সবার চোখ ভিজে যায় অশ্রুতে।
সবশেষে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সাথে নতুন প্রজন্মের আমরা শপথ নিলাম,ঐ সব জল্লাদ্দের বিচার না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলতে থাকবে আর মনের সবটুকু ঘৃণা উগড়ে দিব জামায়াত,রাজাকার আর আল বদরদের পাশে যারা থাকবে বা এই বিচার যারা হতে দিতে চায়না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।