সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল ব্যাক্তিগত ব্যাস্ততার কারণে খুব একটা আশা হয় না। তাছাড়া সাভার ট্রাজেডির কারণেও মন খারাপ ছিল। খুব হতাশার মধ্যে ছিলাম।
এই ঘটনায় দোষ আমি সবাইকেই দেবো। মালিক-প্রকৌশলি-সরকার-রাজনৈতিক দল - রাজউক - ইউ এন ও - বিজিএমই সবার দোষ আছে।
দোষটা হলো এরা সবাই টাকার জন্য নিজের বিবেককে বিক্রি করে ফেলেছেন। একারণেই সামান্য ভাত কাপড়ের আশায় দিন রাত পরিশ্রম করা শ্রমিকরা বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুকি নিয়ে কাজ করে চলেছিলেন।
যদিও কথাটা শুনতে খারাপ শোনাবে, তাও বলতে হয় যে আমাদের মধ্যে চলমান অনৈক্য কেবলমাত্র ঐক্যে বদল হয় প্রাণ ঝরে যাবার পরেই। আগে নয়।
স্বাধীন বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মনুষ্য সৃস্ট দুর্যোগে যখন অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে তখনই দেখা যায় দল মত নির্বিশেষ সবাই কাধে কাধ মিলিয়ে আর্ত মানবতার সেবায় নিয়োজিত।
আমাদের ঐক্যেবদ্ধ হবার জন্য প্রাণহানি ঘটার উপলক্ষ্যের শর্তখানি ভীষন দুর্ভাগ্যজনক।
তবে সশ্রদ্ধ সালাম জানাই সেই সব দেশে বা প্রবাসি মানুষদের, যারা সাভার ট্রাজেডির পেছনে শ্রম অর্থ সময়, সব কিছু নির্স্বার্থভাবে দান করেছেন। যারা ব্লগে বা ফেইসবুকে নিয়মিত সাহায্য চেয়ে আপডেট দিয়েছেন, তারাই আসল মানুষ, আসল ব্লগার। তাদের রাজনৈতিক আদর্শ যাই হোক, আমি তাদের বাংলা মায়ের সর্বোত্তম সন্তান হিসাবেই সালাম করছি।
তবে দেশের শোকের আবহ না কাটতেই আবার নোংরামি শুরু হয়ে গিয়েছে।
দেশের মানুষদের ধর্মানুভুতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সরকার থেকে ইসলাম বা ধর্মবিদ্বেষি ব্লগারদের তালিকা চেয়ে আহবান করা হয়েছিল। তাতে কতটা আন্তরিকতা ছিল বা আছে, সেই তর্কে যাবো না। তবে অন্তত একটা চিহ্নিত (মগাচিপ বলে কুখ্যাত) এখন গারদে। এটা সুস্থ পরিবেশের জন্য খুবই দরকার ছিল।
যদিও প্রাথমিকভাবে তাকে সরকারিভাবেই পাহারা দিয়ে রাখা হয়েছিল।
পরে আমার দেশ পত্রিকা থলের বিড়াল বের করে দেওয়াতে সরকার আন্তরিকভাবে হোক কিংবা লোক দেখানো, তাকে সহ বেশ কিছুকে গারদে পুরেছে।
অবশ্য জানা গিয়েছে যে, ইসলাম বিরুদ্ধে কোন কথা না লিখেই দুই একজন একই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের বড় দোষ ছিল যে তারা সরকার বিরোধী কিছু লেখা লিখেছিলেন। বিশেষ করে শাহাবাগ আন্দোলনকে হাইজ্যাক করার বিরুদ্ধে এরা সরব ছিলেন। ।
যাদের স্বভাব নোংরা, তারা এই অজুহাতটা লুফে নিয়ে সুযোগের সদব্যাবহারের অপচেস্টা করেছে। ইসলাম বিদ্বেষি এই রকম অভিযোগ বানিয়ে ডিবির কাছে ব্লগারদের একটা তালিকা দিয়েছে, যে তালিকার মধ্যে প্রধান বেশিরভাগ নিকই জাতিয়তাবাদি বলে বহুল প্রচলিত।
যেমন দাসত্ব, জুলভার্ণ, চাপাডাঙ্গার চান্দু, বিডি আইডল, জাতির নানা, ঘুমকাতুর।
সামুর সাধারণ ব্লগাররা খুব ভালো করেই এদের লেখা এবং আদর্শের সাথে পরিচিত। আরো যারা আছেন, তারা নবীন হলেও ইতিমধ্যেই তাদের ক্ষুরধার লেখনির মাধ্যমে ব্লগে নিজেদের মেধার পরিচয় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে।
যেমন ভুল উচ্ছাস, নস্ট শয়তান, কবি ও কাব্য, বাংলার হাসান, আবু শিথি, কায়সার সামিল, সীমানা পেরিয়ে, ধ্রুব মহাকাল ইত্যাদি।
(নিজের নিকটা ইচ্ছা করেই উহ্য রাখলাম। কারণ আমি খুবই সাধারণ মানের একজন সাধারণ ব্লগার। তবে লিস্টে নাম আছে। )
ইসলাম বিদ্বেষ তো অনেক দুরের কথা, কেবলমাত্র সরকারের কর্মকান্ডের যৌক্তিক বিরোধীতা ছাড়া এদের অন্য কোন দোষ ধরা বাতুলতা মাত্র।
মিডিয়া গ্রাস করে এখন অন্তর্জালে মিথ্যা প্রচারণা চালানোতে নিয়োজিত পেইড আওয়ামি ব্লগারদের পথের কাটা হওয়াতেই জাতিয়তাবাদি আদর্শের ব্লগারদের বিরুদ্ধে এমন ঘৃণ্য পথ বেছে নিয়েছে নোংরা কিছু লোকজন।
কারণ এই জাতিয়তাবাদি ব্লগাররাই একের পর এক মিথ্যার বেসাতি করা, স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে ব্যাবসা করে আওয়ামি লিগ আর তার পোষ্য ব্লগারদের মিথ্যা প্রতিষ্ঠার পথে দেয়াল হয়ে দাড়িয়েছিল।
শুধু বিরোধীতার খাতিরে নয়, বরং তথ্য প্রমান আর ইতিহাস ঘেটেই এই সব আওয়ামি মিথ্যাচারের উপযুক্ত জবাব দেওয়াতেই, আওয়ামি পন্থিদের চক্ষুশুল হতে হয়েছে।
এর আগে ব্লগে ছাগু ফাইটিং এর নামে আওয়ামি বিরোধী বিশেষ করে জাতিয়তাবাদি ব্লগারদের ট্যাগিং করে কোনঠাসা করার হীন পন্থাটি মাঠে মারা যাবার কারণে, এরা এই নোংরা পথ ধরেছে।
বাংলাদেশ একটা ছোট দেশ।
তাই এখানে কে কোথায় কি করছে, সেই খবর বের করে আনা খুব দুরুহ ব্যাপার তো নয়। শ্রেফ আদর্শিক বিরোধী বলেই লিস্টি বানিয়ে একাধিক ব্লগারদের জীবন দুর্বিসহ করার ষড়যন্ত্রকারিদের পরিচয়ও উন্মুক্ত হচ্ছে।
এই হীন ষড়যন্ত্রের কারণে উপরে উল্লেখিত অন্তত একজন ব্লগারকে আত্মগোপন করতে হয়েছে।
এই ষড়যন্ত্রকারিদের মধ্যে অন্তত দুইজন সামুতেই দিন নেই রাত নেই পড়ে থাকে। আত্মসম্মানবোধহীন , নিম্ন রুচির স্থুল মগজের দলিয় প্রচারণা চালানো এই দুইজন সারা দিন ভবঘুরের মত বিভিন্ন পোস্টে ঘুরে বেড়ায়।
দলিয় স্তুতিবাজ লেখা সে যত নিম্ন মানেরই হোক, সেখানে গিয়ে এরা হাততালি দেয়। আর আওয়ামি বিরোধি হলে যত যৌক্তিক হোক, সেখানে গিয়ে তার তাদের গোবর ভরা মস্তিকের আবর্জনা উস্কে দেয়। বলাই বাহুল্য, এদের মুল্য কানাকড়িও নয়।
তাই যুক্তি তর্কে বার বার চপেটাঘাত খেয়ে এখন বিরোধী মতানুলম্বি ব্লগারদের অন্য ভাবে শায়েস্তা করার ষড়যন্ত্রে এরা লিপ্ত হয়েছে।
এদের বাইরে অন্তত আরো ৩ জনের কথা শোনা গিয়েছে, যাদের পরিচয় হচ্ছে বাইরে থেকে গুটি চেলে সামুর পরিবেশ নোংরা করে আওয়ামি বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা।
এদের অন্তত একজনকে শাহাবাগের আন্দোলনের সময় প্রায়ই টক শোতে চাপাবাজি করতে দেখা যেতো।
আর শেকর হচ্ছে সামুর ঘোর বিরোধি বলে পরিচিত গালাগালি আর খিস্তি খেউরের আখড়া বলে পরিচিত আরেকটা ব্লগের কর্ণধার দুইজন। কথিত আছে, এরা হাসিনার উপদেস্টা এইচ টি ইমামের "আশির্বাদপুস্ট" বলে ধরা কে সরা জ্ঞান করে থাকে।
সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে সামুর মডারেশনে থাকা একজনের এই ষড়যন্ত্রে সাথী হওয়া।
এরা ভুলে গিয়েছে যে সরকার ক্ষমতায় আছে আর মাত্র কয়েকমাস।
ইতিমধ্যেই সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষ বিতশৃদ্ধ। এবং নেহায়াত পৃথিবি উলটে না গেলে এই আওয়ামি লিগ সরকার আর ক্ষমতায় থাকছে না।
এমতাবস্থতায় শ্রেফ বিরোধী মতের বলেই হয়রানি করার হীন মানসিকতা থেকে সরকারের এই শেষ সময়ে যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, সেটির মেয়াদও বেশিদিনের নয়।
এর পর? আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় আছে বলেই অন্যায় করেও এখন বুক ফুলে চলছেন। আওয়ামি লিগ ক্ষমতা থেকে যাবার পর, সেই শক্তি কি আপনাদের আর থাকবে?
তখন কি অন্তত একজন ইটের বদলে পাটকেল মারবে না বলে মনে করেছেন? এধরণের ভাবনা যে খুবই ভুল, সেটা সময়েই প্রমানিত হবে।
আপনার নিজ দ্বায়িত্বেই যখন সীমা অতিক্রমের ঝুকি নিয়েছেন, তাহলে সেটা সামলানোর ভারটাও আপনাদেরই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।