আমি বই পড়তে ভালোবাসি। ভালো লাগে সরলতা, নির্মলতা, বন্ধুত্ততা, মিষ্টি হাসি, কোমলতা, গাছগাছালী লতাপাতা, এই তো। হাইকোর্টের নির্দেশের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও বিশ্বজিৎ কুমার দাস হত্যায় জড়িত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে চিহ্নিত করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এঁদের তিনজনকে বহিষ্কার ও দুজনের সনদ বাতিল করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর আবারও বলেছেন, পথচারী বিশ্বজিৎ দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগ কোনোভাবেই জড়িত নয়। জাতীয় জাদুঘরের এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি বলছি, এর সঙ্গে আমাদের ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই এবং কোনোভাবেই ছাত্রলীগ জড়িত নয়। এ দুঃখজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ’
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে আটজনের গ্রেপ্তারের কথা বলছেন তাঁরা কোথায়, তাঁদের নাম-পরিচয় কী, ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এঁদের আদালতে হাজির করা হয়নি কেন? এসব প্রশ্নের জবাব দেননি দায়িত্বশীল কেউ-ই।
একই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের আদালতে হাজির করতে হবে, এটা সাংবিধানিক বিধান। এর মধ্যে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হলে আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করতে না পারলে তা-ও আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় গতকাল বুধবার আটজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আবারও দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেছেন। তাঁদের আদালতে হাজির করা বা না করার বিষয়টি পুলিশ ও আদালত বুঝবে।
’
পাঁচজন চিহ্নিত: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পাঁচজনকে চিহ্নিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র বাংলা বিভাগের (স্নাতকোত্তর-২০০৮-০৯) মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ ও দর্শন বিভাগের (স্নাতকোত্তর-২০০৮-০৯) ইমদাদুল হকের সনদ বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্র ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের (স্নাতক-২০০৮-০৯) রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের (স্নাতকোত্তর-২০০৯-১০) নূরে আলম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের (স্নাতক-২০০৬-০৭) ওবাইদুল কাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। এঁরা ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সক্রিয় কর্মী। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন ও ছবি দেখে এবং নিজস্ব প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় আইনশৃঙ্খলা কমিটি ও প্রক্টরিয়াল বডির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৯ ডিসেম্বর সকালে অবরোধের সময় পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে পথচারী বিশ্বজিৎকে চাপাতি দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং পত্রপত্রিকা হামলাকারীদের পরিচয় ও ছবি প্রকাশ করলেও পুলিশ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করে।
এরপর গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও নাম দেখে হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কিন্তু গতকাল ২৪ ঘণ্টা পার হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেনি। গতকাল ভোরে সাভারের আশুলিয়া থেকে রফিকুল ইসলাম ও ওবাইদুল কাদের নামের দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা শোনা গেলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
বিক্ষোভ মিছিল: বিশ্বজিতের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল বেলা দুইটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। মিছিলটি শাঁখারীবাজার থেকে বের হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক, লক্ষ্মীবাজার, পাতলা খান লেনসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে কয়েক মিনিট অবস্থান করে।
বিশ্বজিতের ভাই উত্তম কুমার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে, তা স্পষ্ট। এখনো তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন? আসলে আমরা বুঝতে পারছি না, সরকার কী চায়?’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।