আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জরিনা

একটি মেয়ের.........। আমার নানী বিধবা। খুব সহজ সরল মানুষ। অসহায় মানুষ গুলোকে সাহায্য করতে তার জুড়ি নেই। এবার আসি মূল কথায়....... নানীর বাসায় নিয়মিত এক ভিক্ষুক আসত।

বয়স ৬০ এর কাছাকাছি। নানী ভিক্ষুক এর সাথে বেশ আন্তরিক ভাবে কথা বলতেন। আমি নানী বাড়িতে হঠাৎ ভিক্ষুক এর আগমন... ভিক্ষা দেওয়া শেষ তবু ও ভিক্ষুক যায় না ... নানী: কি বাবা কিছু বলবা নাকী ? ভিক্ষুক: না মা কি কব লজ্জার কথা আমার বউ মইরে গেছে ৬ মাস হতি চইল্লো। নানী: তাতে সমস্যা কি? ভিক্ষুক: আমার তো কোন ছেলে মেয়ে নেই এ বুইড়ো বয়সে আর একা থাকতি পারি নে মা। নানী: তা কি করবা ? ভিক্ষুক: একটা বিয়ে করতাম মা... নানী: এসব কি কও? এত বয়স তার উপর তুমি বেড়িয়ে খাও (ভিক্ষা করে খায়) তুমার মেয়ে দেবে কিডা ? ভিক্ষুক: আপনাগের বয়স ই হলি ই উ কোন সমস্যা নেই।

নানী: তুমি কি কইলে...... ভিক্ষুক: (কাচু মাচু ভাবে) আপনি ভুল বুইঝেন না মা আপনার কথা কইনি। নানী: আচ্ছা দেখপানে। তুমি আগামী সপ্তায় আইসেনে। দেখি কি করতি পারি। এর মধ্যে একদিন জরিনা খালার আগমন....... পরিচয় টা একটু দেয়া দরকার আমরা সেই ছোট বেলা থেকে দেখেছি জরিনা খালা আমার নানী বাড়িতে কাজ করতে।

পাশের গ্রামেই তাদের বাড়ি। জরিনা খালার চেহারা কোনভাবেই ভাল বলা যাবেনা। ছোট বেলায় একবার বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর বয়স বেশি ছিল বিয়ের কিছুদিন পরেই স্বামী মারা যায়। তারপর অনেক বিয়ের কথা এসেছে কিন্তু সে অবিবাহিত অল্প বয়স্ক ছেলে ছাড়া বিয়ে করবে না।

জরিনা খালার বয়স এখন ৪২ এর কাছাকাছি কিন্তু সে এখনো....... বিয়ে করেনি। অনেক চেষ্টা করে ও তাকে বিপত্নীক পুরুষের সাথে বিয়েতে রাজি করানো যায়নি। নানীর সাথে জরিনা খালার কথোপকথন: নানী: কিরে জরিনা অনেক দিন পর আসলি। জরিনা: হয় খালা মেলাদিন হয়ে গেল এদিকি আসা হয়না। মানষির বাড়িতি তো মেলাদিন কাজ করলাম এখন আর মন চায়না।

নানী: তো কি করবি? জরিনা: কাদছে নানী: কিরে কানছিস কি যন্যি? জরিনা: আল্লা কার উ কি বউ উ মরেনা.............. নানী: হায় হায় ও জরিনা তুইকি পাগল হয়ে গেলি। জরিনা: না খালা পাগল হইনি আর সহ্য হয়না...... নানী: .............জরিনা কিছু না মনে করলি একটা কথা বলতাম। জরিনা: বলো (নানী জরিনা খালাকে ভিক্ষুক সর্ম্পকে সব বর্ণনা দিল) জরিনা খালা সব শুনে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল আইচ্ছা আসতি কইয়েনে আমিও আসপানে। পরের সপ্তায় জরিনা খালা ও ভিক্ষুক এর কথোপকথন: ভিক্ষুক: আপনি অনেক সুন্দর। জরিনা: আপনি এসব কি কন? কাজের কতা শোনেন বিয়ের পর ভিক্ষে করা চলবে না।

ভিক্ষুক: তালি কি করব ? জরিনা: ব্যবসা করবেন। ভিক্ষুক: আমি এত টাকা পাব কোনে? জরিনা: আমার কিছু টাকা আছে আমি আপনার একটা চায়ের দুকান কইরে দিবানে। ভিক্ষুক: আমার উ কিছু টাকা আছে.... জরিনা: তালি তো ভালই হইলো। আর শোনেন দাড়ি রাখা যাবেনা সেভ কইরে প্যান্ট শাট পরবেন। ভিক্ষুক: আমতা আমতা কইরে আইচ্ছা ঠিক আছে।

নানীর ব্যবস্থাপনায় বিয়ে পাকা বিয়ের দিন ও ঠিক এর মধ্যে একদিন ভিক্ষুক মিষ্টি নিয়ে নানী বাড়িতে হাজির আমরা দেখে তো অবাক সেই ছেড়া জামা পরা লোকটি দিব্যি প্যান্ট শার্ট পরে ক্লিন সেভ করে হাজির। গায়ে থেকে আতর এর গন্ধ। নানী তো অবাক কি বাপু তুমার একি অবস্থা ? কি করবো কন জরিনা কইছে। আপনি তো আমার উকিল মা তাই মিষ্টি নিয়ে দেকতি আসলাম। বিয়ের দুইদিন আগের কাহিনী আরেক ভিক্ষুক নানীর কাছে হাজির।

২য় ভিক্ষুক: আসসালাসু আলাইকুম নানী: ও আলাইকুম আসসালাম ২য় ভিক্ষুক: কতা হইলো গিয়ে জব্বার কাইল রাইতে এক্সিডেন্ট কইরে মইরে গেছে। নানী: জব্বার কিডা? ২য় ভিক্ষুক: ঐ যে ভিক্ষে কইত্তো না। মরার আগে ৮০০০/- (আট হাজার টাকা) দিয়ে গেছে জরিনা রে দিয়ার যন্যি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।