আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

***বিশ্বের বিখ্যাত অস্বীকৃত সব সাড়া জাগানো বই***

আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেই সব বিখ্যাত বই যাদের লেখকেরা প্রথমে অনেকবার তাদের সৃষ্টির মূল্যায়ন না পেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। কিন্তু সেই সব বই ই পরে সৃষ্টি করে একেরপর এক ইতিহাস। চলুন তাদের সাথে পরিচিত হওয়া যাক। ১)“অ্যান্ড টু থিংক দ্যাট আই স ইট অন মালবেরি স্ট্রিট”: ২৩ তম প্রকাশকের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর হতাশ মনে বইটির পান্ডুলিপি নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন সস। এ সময়ই মেডিসিন এভিনউতে পুরোনো কলেজের এক দোস্তের সাথে দেখা।

তার এই বন্ধুই আবার ভেনগার্ড প্রেসের ছোটদের বইয়ের সম্পাদক। পান্ডুলিপিটা দেখতে আগ্রহী হয়ে উঠলেন তিনি। ২০ মিনিট বাদে বই প্রকাশের চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেন সস। এখন পর্য্ন্ত বইটির বিশটির বেশি সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছে। ----ড. সস (নিউইয়র্ক,ভেনগার্ড ১৯৩৭) ২)“হ্যাভেন নোজ মি. এলিসন”: দক্ষিন প্রশান্ত মহাসাগরে এক মার্কিন নাবিকের কাহিনী নিয়ে শ’র এই অসাধারণ বইটি ছাপাতে অস্বীকৃতি জানায় প্রায় সব অস্ট্রেলীয় প্রকাশক এবং প্রায় ২০ টি ব্রিটিশ প্রকাশনা।

তারপরই এক মার্কিন এজেন্টের দেখা পেয়ে যান এই অস্ট্রেলীয় লেখক, যিনি দ্রুততম সময়ে বইটি বেচে দেন প্রকাশনা সংস্থা ক্রাউনের কাছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে পেপারব্যাক সংস্করণের পাশাপাশি অন্য ভাষাতেও ছাপা হয় এই বইটি। ----চার্লস’ শ (নিউইয়র্ক,ক্রাউন ১৯৫২) ৩)“কনটিকি”: মেকনেলি বইটি প্রকাশ করতে সম্মত হওয়ার আগে ২০ জন প্রকাশকের দুয়ারে ধরনা দিয়েছিলেন হেয়ারডেল। কিন্তু কেউই ভেলায় চেপে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার দুর্দান্ত এই কাহিনী ছাপার যোগ্য বলে মনে করেন নি। প্রকাশের পরপর দুই বছর শীর্ষ দশ মননশীল বইয়ের তালিকায় ঠাই পায় এই বইটি।

এ পর্য্ন্ত বিভিন্ন ভাষায় এর মুদ্রণ সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ----থর হেয়ারডেল (শিকাগো,রেনাড ম্যাকনেলি ১৯৫০) ৪)“লর্ণা ডুন”: সতের শতকের ইংল্যান্ডের চিত্র তুলে ধরা এই উপন্যাশ পর পর ১৭ জন প্রকাশক ফিরিয়ে দেওয়ার পর ছাপতে রাজি হয় স্যাম্পসন ল। ১৮৬৯ সালে তিনখন্ডে প্রকাশিত হওয়ার পর বইটি পাঠক মহলে কোনো ধরনের সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হলে এটা প্রকাশ না করে দারুণ দূরদৃষ্টির পরিচয় দিয়েছেন মনে করে উল্লসিত হয়ে ওঠেন অন্য প্রকাশকেরা। কিন্তু বছর দুয়েক পর বইটি এক মলাটের মধ্যে প্রকাশ করলে সফলতার মুখ দেখেন স্যাম্পসন। ১৮৭৪ সালে আমেরিকায় এটি ছিল সর্বাধিক বিক্রিত বই।

----রিচার্ড ব্ল্যাকমোর (লন্ডন,স্যাম্পসন ল ১৮৬৯) ৫)“লাস্ট ফর লাইফ”: ভিনসেন্ট ভ্যান গগলকে নিয়ে লেখা উপন্যাসটির লেখা প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান ১৭ জন প্রকাশক। কিন্তু যখন প্রকাশিত হলো,এর বিস্ময়কর কাটতি চমকে দিল সবাইকে। এ পর্য্ন্ত ৭০ টি ভাষায় ২ কোটি ৪০ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়েছে লাস্ট ফর লাইফ। ----আর্ভিং স্টোন (লন্ডন ও নিউইয়র্ক,লংম্যানস গ্রিন ১৯৩৪) ৬)“দ্য পিটার প্রিন্সিপাল”: জনপ্রিয় এ বইয়ের পান্ডুলিপি একে একে ফিরিয়ে দেন ১৬ জন প্রকাশক। তারপরই এর বিষয়বস্তু নিয়ে সংবাদপত্রে পিটারের একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।

রাতারাতি পাল্টে যায় পরিস্থিতি। ওই প্রকাশকেরাই আবার তার দরজায় কড়া নাড়তে থাকেন। বইটি প্রকাশের দায়িত্ব শেষে পেল মরো। এ পর্য্ন্ত ৬০ লাখ কপির বেশি বিক্রি হয়েছে এই বই। ----লরেন্স পিটার (নিউইয়র্ক,মরো ১৯৬৯) ৭)“জোনাথন লিভিংস্টোন সিগাল”: দ্রুতগতিতে উড়ে চলা একটি গাঙচিলকে নিয়ে লেখা বাখের ১০ হাজার শব্দের এই কাহিনী প্রকাশকের কাছে এতটাই অলাভজনক মনে হয়েছে যে ১৮ জন প্রকাশক এটি ছাপার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

তারপরেই ম্যাকমিলান বইটি ছাপতে রাজি হয়। ক্রমেই বাড়তে থাকা বিক্রি ১৯৭২ সালে মাসের সবচেয়ে বিক্রীত বইয়ের সম্মান এনে দেয় তাকে। এভন বইটির পেপারব্যাক সয়স্করণ বিক্রি করে ১০ লাখ। ১৯৭৫ সাল পর্য্ন্ত এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হয় ৭০ লাখ কপির বেশি। ----রিচার্ড বাখ (নিউইয়র্ক,ম্যাকমিলান ১৯৭০) ৮)“ডাবলিনার্স”: ১৫ টি ছোট গল্পের এই সংকলনে যেকোন রদবদলের ঘোর আপত্তি ছিল জয়েসের।

ফলে আইরিস রাজধানী ডাবলিনের কদাকার চেহারা সবচেয়ে বাস্তবসম্মতভাবে তুলে ধরা বইটি প্রত্যাখ্যাত হয় ২২ জন প্রকাশকের কাছ থেকে। কিন্তু ১৯১৪ সালে গ্রান্ট রিচার্ডস বইটি প্রকাশের পর নিমিষেই শেষ হয়ে যায় এর প্রথম সংস্করণ। আজও জয়েসের এই গল্পগুলো পাঠক-সমালোচক মহলে অসাধারণ সাহিত্যকর্মে সম্মান পেয়ে আসছে। ----জেমস্ জয়েস (লন্ডন,রিচার্ড ১৯১৪) ৯)“ম্যাশ”: মরো বইটির সত্ত্ব কিনে নেওয়ার আগ পর্য্ন্ত এটি প্রকাশের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ২১ জন প্রকাশক। পরে এর কাহিনী নিয়ে নির্মিত অসাধারণ ব্যবসাসফল একটি চলচ্চিত্র হু হু করে বাড়িয়ে দেয় বইয়ের কাটতি।

একে পরিণত করে বেস্ট সেলারে। বইটির কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি টিভি সিরিয়ালের প্রচার শুরু হয় ১৯৭২ সালে। ----রিচার্ড হুকার (নিউইয়র্ক,উইলিয়াম মরো ১৯৬৮) ১০)“ডিউন”: হারবার্টে এই দুর্দান্ত বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ছাপতে অস্বীকৃতি জানান ১৩ জন প্রকাশক। শুধু তাই নয় অত্যধিক ধীর,বিভ্রান্তিময় এবং বিরক্তিকর। অনেক দীর্ঘ এসব বলে বইটির প্রচন্ড সমালোচনাও করেন তারা।

তবে নাছোড়বান্দা হারবার্ট ও তার এজেন্টের কাছে নতি স্বীকার করে শেষ পর্য্ন্ত এটা ছাপেন লুর্টন ব্লাসিংগেম। বইটি শুধু এককোটির বেশি বিকোয় শুধু তাই নয়,এর জন্য বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর শ্রেষ্ঠ দুটো পুরস্কার পান ফ্রাঙ্ক হার্বার্ট। ----ফ্রাঙ্ক হার্বার্ট (রেডনর,লুর্টন ব্লাসিংগেম) পরবর্তী আকর্ষণ “বিবির প্রতিভা(যাদের জীবন স্ত্রীময়)”----ভাল লাগলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আপনাদের সাড়াই আমার নতুন পোস্টের অনুপ্রেরণা। ধন্যবাদ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.