এতকিছু ... ওই সিনেমার জন্যই... আর্মি স্টেডিয়ামে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসব এ যাই নাই। ভারতীয় দাদাগিরির 'চেস্টা কর, তোমাদের হবে, আমরা তোমাদের শিখায়ে দিব' -এইসব শুনতে ভাল লাগে না। আর আমগ দেশি-ইন্ডিয়ানদের ছোটলোকি শো- অফ অসহ্য লাগে। তবু তামশা দেখতে যাইতে চাইসিলাম এক বেলার জন্যে । ব্যস্ততায় সেইটাও হয়া উঠে নাই ।
এখন, এই অবসরে , অহে প্রিয়তমে , না জাহিতে পারিলেও, এত্তুকু খুঁজ খবর তো নেওয়া ঝেতে পারে?
বেঙ্গল এর সহ আয়োজক আইটিসি - এস আর এ সম্পর্কে এতটুকু জানা গেলঃ
আই টি সি হইলেন ভারতীয় 'ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ( বি এ টি )। প্রকাশ্যে বিএটি কোন ব্রান্ডিইং করে না আজকাল। অন্য রাস্তা নিছে।
বেনসন , ৫৫৫, গোল্ড ফ্লেক, গোল্ড লিফ এনাদেগের। সঙ্গে আর কিছু নিয়া আই টি সি বিশাল কঙ্গলমারেট ।
সঙ্গীত রিসার্চ একাডেমি হইল তাদের সি এস আর প্রজেক্ট। তারা কি ব্রিটিশ- ভারতীয় দাদাগিরি করবে না- তো বঙ্গের ছোটলোকদের তোলা তোলা করবে? বল প্রিওতমে!?
শুনলাম বঙ্গে বেশ হিন্দি চর্চা করছেন অনেক উস্টাদ সাহেব- বেগম এবং তাদের চামুন্ডারা। আমি কুমার গান্ধর্ব , মল্লিকারজুন মান্সুর , গাঙ্গুবাই হাঙ্গাল সহ আরও অনেকের মুগ্ধ শ্রোতা । বাংলাদেশের জন্যে রবিশঙ্কর , আলি আকবর খান , উদয়শংকর প্রমুখের দরদের কথা ভোলার নয় কোনোদিন । কার প্রতি ব্যক্তিগত বিদ্বেষ আমার নাই।
আমাদের শ্রোতাদের কারোরই থাকার কথা না । কিন্তু তারপরও কথা থাকে। কথা থাকে দাদাগিরি নিয়া। হিন্দি এলিটত্ব ফলান নিয়া।
আমাদের এই নাই সেই নাই , আমাদের আলাউদ্দিন খাঁ ছিল , উদয়শঙ্করের আদি বাড়ি নড়াইল- এইসব হা হুতাশ পন্থা কন কাজের জিনিশ না।
আমার যা আছে, উনার তা নাই। উনার যা আছে, আমার তা নাই। আজ এর তার এটা সেট আছে, কাল থাকবে না। প্রাচ্যের যা আছে, পশ্চিমের নাই; পশ্চিমের যা আছে, প্রাচ্যের তা নাই। সংস্কৃতি নিশ্চল ব্যাপার না।
প্রতিনিয়ত নির্মাণ করার ব্যাপার। আর , সমাজ-ইতিহাস এর বাইরে আর্ট থাকে না। কাদের কি আছে, নাই- তার চেয়ে বড় কথা কারা কি করতে চায়। দেশ-জনগণ-পৃথিবী -নিজের ভবিষ্যতের জন্যে কার কি প্রস্তাব আছে।
আমাদের আগে হিশাব করা দরকার দেশভাগ কারা করছিল ।
বাংলা , কাশ্মির, পাঞ্জাব কারা , কেন , কি ভাবে ভাগ করল। আমাদের হিশাব করা দরকার কোন সংস্কৃতি তে জনগনের হিস্যা কতখানি। আমাদের হিশাব করা দরকার উচ্চাঙ্গ-নিম্নাঙ্গ আর্ট -কালচার এর সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতি।
আমাদের হিসাব করা দরকার কোন ধরনের বড়লোক কোন ধরনের সংস্কৃতির সমঝদার হয়, পৃষ্ঠপোষক হয় । উগ্র জাতীয়তাবাদ দিয়া জনগনের তেশ মারার রাজনীতি ফন্দিবাজ বড়লোকদের রাজনীতি ।
‘শাইনিং ইন্ডিয়া’ আর লুটেরা শাসনের কবলে থাকা বাংলাদেশ – উভয়েই সমান্তালে ‘ছোটলোক’ নিধনে ব্যস্ত আছে। আমাদের হিশাব করার দরকার কি ভাবে ‘সংস্কৃতি’ নতুন শাসকের নতুন ধরনের শাসনের হাতিয়ার হয়া ওঠে।
হে ফেস্টিভালও দেখতে যাওয়া হয় নাই। সেইটা নিয়া বিশদ পরে বলা যাবে । তবু, একথা কহা যায় প্রিয়তমে , ‘পোস্ট কলনিয়াল’ যুগে ‘হে ফেস্টিভাল’ এর জুনিয়র পার্টনার হওয়া কিংবা ‘উচ্চতর আর্ট’ এর ছোট তরফের সেবক হওয়ায় গৌরবের কিছু নাই।
বাংলাদেশ-ভারত-বিশ্বের নিপীড়িত জনগণের মৈত্রীর সংস্কৃতি জিন্দাবাদ! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।