Never Stop Believing ঘটনা ১
ক্লাস শেষে মৌচাকের দিকে যাচ্ছিলাম। খন্দকার গলির মাথায় দেখলাম ভিকারুননিসার এক মেয়ে তার মা কে নিয়ে রিকশায় উঠছে... রিকশায় উঠে মেয়েটি পেছনে ঘুরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বাচ্চা মেয়েটিকে বললো, "তুই পেছন পেছন আয়..."
মা ও মেয়ে কে নিয়ে রিকশাটা কালী মন্দিরের গলি দিয়ে ছুটে গেল। পেছন পেছন দৌড়াতে লাগলো বাচ্চা মেয়েটি...
এই মেয়েটির কাছে আমি মনুষ্যত্বের যা উদাহরণ দেখলাম তাতে এটুকু নিশ্চিত, ওর মনে এ ধরনের মানসিকতার জন্ম ওর পরিবার থেকেই। ওর পরিবার ওকে শিখিয়েছে কাজের মেয়ের সাথে ওরকম আচরণ করতে। অর্থবিত্তের আড়ালে গিয়ে এরকম বড় এবং প্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী হয়েও সে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে পারে নাই।
এরাই নাকি নতুন প্রজন্ম! এদের কাছে আমরা কিভাবে একটি সুন্দর বাংলাদেশ আশা করতে পারি!
[কমেন্টে কেউ ভিএনসি/ভিএনএস কে হেয় করবেন না। তাদের শিক্ষা পদ্ধতি যথেষ্ট ভালো। আমার পরিচিত অনেক ছোটবোন তার প্রমান। মন্তব্য করলে মেয়েটির আচরণ নিয়ে করবেন।
ঘটনা ২
আমি যে বাসায় থাকি , তাঁর দারোয়ান এক বয়স্ক লোক , ৪৫+ বয়স হবে ।
গত ৮ বছর ধরে চাকরি করছে । বেতন ৪০০০ টাকা । নিজের খরচে খাওয়া দাওয়া । গত ৮ বছরে তাঁর বেতন ৩৫০০ থেকে ৪০০০ এসে থেমে আছে কিন্তু আমাদের বাসা ভাড়া প্রতি বছর ৫০০ - ১০০০ টাকা করে বাড়ছে, কোন রকম সুযোগ সুবিধা বাড়ানো ছাড়াই ।
মুল কথায় আসি, আমি যখন ভার্সিটি -তে যাই তখন মাঝে মাঝেই দেখি বাড়িওয়ালার নাতি স্কুলে যাচ্ছে ।
বাচ্চা'র সাথে তাঁর মা থাকে সব সময় । কিন্তু বাচ্চা'র স্কুল ব্যাগ এই বুড়ো দারোয়ান চাচা বহন করে বাসা থেকে মেইন রাস্তায় রিক্সা পর্যন্ত ব্যাগটি দিয়ে আসে ।
স্কুল থেকে ফেরার সময় রাস্তায় এসে ফোন দেয়, চাচা গিয়ে নিয়ে আসে । বাচ্চার মা পিছনে পিছনে হেটে আসে ।
আমি প্রশ্ন করেছিলাম, আমার মা'কে " মা, এই বাচ্চা টা কি শিখছে ? শিখছে টাকা থাকলে মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করা যাবে না ।
তাকে ইচ্ছে মত অপব্যবহার করতে হবে ?" মা বলল, বাবা অদের অনেক টাকা, যা খুশি তাই বলতে পারে, করতে পারে । আমি মায়ের সাথে তরকে যাইনি ।
এটা সত্য, এই বাচ্চা বড় হয়ে কোন দিন মানুষ হবে না । শিক্ষিত জানোয়ার হবে , এটা নিশ্চিত । কারন, এই বাচ্চা বুঝতে পারছে না, ভালবাসা কি ? এই বাচ্চা বুঝতে পারছে না, সম্মান কি ।
সে একটি অতি ক্ষুদ্র গণ্ডির ভিতরে বড় হচ্ছে ।
এই মা কি পারত না, ব্যাগ টা নিজে বহন করতে । যেহেতু বাচ্চাটি ক্লাস টু ' তে পড়ে , ইচ্ছে করলে বাচ্চাটি নিজেই ব্যাগটি বহন করতে পারত । এতে করে সে নিজের কাজ নিজেই করা শিখতো । দেশ একটি সত্তিকারের মানুষ পেত ।
আর এখন কি পাবে ? বিকলঙ্গ শিশু যে কি না, আম্মু ছাড়া কিছু চিন্তা করতে পারবে ।
আচ্ছা, যেই দিন আম্মু থাকবে না ??
আমার গত কালের স্ট্যাটাস
শিক্ষিত মানুষের ( কথাটা হবে উচ্চ শিক্ষিত / উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ) অহংকার আসলেই বেশী , লক্ষ্য করুন ভালো করে - আপনার ভিতরেও থাকতে পারে । বিগত বছর গুলো আর বিগত মাস গুলোর পর্যবেক্ষণে এটাই আবিস্কার করলাম । অনেক গুলো উদাহরণ দিতে পারি, এই মুহূর্তে । কিন্তু দিব না ।
দুঃখ, এরাই শিক্ষা জীবন শেষে বড় বড় কথা শুনাবে - কিভাবে দেশকে পরিবর্তন করা যাবে, কি করলে দেশ পাল্টে যাবে ( কাজের কাজ কিছু হবে না , কারন এসি রুম আর বাস্তবতা আকাশ পাতাল ফারাক ) . আসবে এসি গাড়িতে , টকশো করবে এসি রুমে বসে - আবার থাকবে গিয়ে এসি রুমে ।
কিন্তু কথা বলবে, তাদের হয়ে যারা জিবনে এসি নামক যন্ত্রটা দেখবেই না । শুনতে খারাপ লাগবে + মানতে না চাইলেও, আমি এখনি এই শিক্ষিত লোক গুলোকে চিহ্ন দিয়ে দিতে পারি । এটলিস্ট আমার ফ্রেন্ডলিস্ট এর শিক্ষিত বন্ধুদের , যারা অনেকেই শিক্ষা জীবন শেষে ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার বা অন্য অন্য বড় সার্টিফিকেট গুলো বগল দাবা করে, বাসায় যাবে ।
আগামী ৪০ কেন, ৪০০ বছরেও এই দেশের পরিবর্তন হবে না, যদি না আমরা প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারি ।
নিজের শিক্ষা জীবন যদি মানুষের বৃহৎ কল্যাণে না ব্যয় হয়, সেই শিক্ষা ব্যর্থ ।
সত্যি ব্যর্থ ।
***** কাউকে বা কোন গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে স্ট্যাটাস দেইনি, কেউ জোর করে নিজের কাদে তুলে নিলে, আমি কোন ভাবে দায়ী না
আমার আজকের কথা
উপরের দুইটি ঘটনাই বেদনার । মানুষ হিসেবে নিজেদের আরেক ধাপ নিচে নিয়ে যাওয়ার প্রাথমিক ধাপ অতিক্রম মাত্র ।
আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই প্রজন্ম ই আপনাকে " বৃদ্ধাআশ্রম" নামক একটি নরকে রেখে আসবে, যেখানে পাঠানোর জন্য আপনি, হ্যাঁ- আপনি নিজেই দায়ী ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।