আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহীনের ঘোড়াগুলির প্রথম অ্যালবামঃ "সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক"

নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ মহীনের ঘোড়াগুলির প্রথম অ্যালবাম হল "সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক"। এটি ১৯৭৭ সালে মুক্তি পায়। এই অ্যালবামটি উৎসর্গ করা হয় প্রয়াত ধূর্জটি চট্টোপাধ্যায়কে। এই অ্যালবামের কাভার এবং লিরিক্স পেইজে ছিল কিছু চিত্রকর্ম, যা ঐ সময়ের জন্য একটি বিপ্লবই বৈকি। কভারের শুরুতেই ছিল প্রয়াত ধূর্জটি চট্টোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করে কিছু কথা যা তাঁদের দ্বিতীয় অ্যালবামের মূল কভার ছিল।

সবার জন্য হুবুহু তুলে দিচ্ছিঃ প্রয়াত ধূর্জটি চট্টোপাধ্যায়কে যে আমাদের গান শুনতে চেয়েছিলো। 'মহীনের ঘোড়াগুলি ঘাস খায় কার্তিকের জ্যোৎস্নার প্রান্তরে' গান গায়। ডানা নেই তবু তার উড্ডীন ডানার শব্দে প্রছন্ন ভোর হয় গগনচারী পাখিদের আর বহতা নদীর, যেখানে নিকটস্থ গার্হস্থ্য সুখ অসুখ আর মানুষের জ্যোৎস্নাহীন প্রাণপাত দিনযাত্রা। একদিন মানুষের ঘরবাড়ি ছিল যেই সবুজ চরভূমিতে, বারবার ভেসেভুসে গেছে ভীমবানে, অনন্ত জলক্লিন্ন সেই অজনবিজন চরে মহীনের ঘোড়াগুলি নিষ্পন্দ দাঁড়িয়ে রয়েছে, ওই দেখুন, চোখে জল, কে তুলনা? মহীনের ঘোড়াগুলি হ্রেষা তোলে, সে কি গান? তার ওই স্পন্দমান ছুটে চলা, কুয়াশাম্বিত জ্যোৎস্নায় তার বিলীয়মান দোলাচল, খুরশব্দহীন; কেননা উল্লেখ্য, মহীনের ঘোড়াগুলির খুরে কোনো নাল নেই। নিঃস্বপ্ন বেদনার কাছে বলুন আর কে পারে 'হে প্রিয় অসুখ' বলে নিকটস্থ হতে? আর, মহীনের ঘোড়াগুলি মাঝে মাঝে হাই তোলে, হাঁটুমুড়ে ঘুমোয়ও বটে।

অনাদরে পাশে পরে থাকে গীটার, বাঁশি, ভায়োলিন, চিড়েগুড়। সেইসব ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন, স্বপ্নের ভেতরে ঘুম, আর তার মধ্যে থেকে স্পন্দিত হতে থাকে সিম্ফনিক ইমোশন্স্‌, যাকে বলি সংবেগ; সংবিগ্ন পাখিকুল উড়ে যায়। উড়ে যায় কিন্তু কোথাও যায় না। নীচে ঘুমন্ত পৃথিবী নক্‌শী শতরঞ্জের ছকের মতো পড়ে আছে; নয়াঞ্জুলিতে শাদাশাদা ভয়ঙ্কর হাড়গোড়, বাতাসে ষড়জন্ত্রময় শ্বাসশব্দ আর ক্ষুধার্ত মানুষের শ্বাপদপ্রতিম চোখ, চোখগুলি, ঘুমহীন, যৌথভাবে জেগে আছে। (আহা, পদ্ম ফুটে ভরে আছে জলা) তবু, যাঁরা বলেন, মহীনের ঘোড়াগুলি, তোমাদের সামুদ্রিক জলকেলি আর কদ্দিন? যন্ত্রনাময় পৃথিবীর সমস্যাসঙ্কুলতা থেকে নিরাপদ দূরত্বে আর কতদিন তোমাদের বসবাস? তাঁদের বলি - অ্যাঁট্টকুনি ডাঁড়ান স্যার, এই এলুম বলে।

এতে চারটি গান অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে এবং এটি গাথানি রেকর্ডস থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। অ্যালবাম কভারে রাখা ডিজাইনসহ গানগুলোর লিরিক্স দিচ্ছি । ১। শিরোনামঃ কলকাতা কলকাতা কথাঃ রঞ্জন ঘোষাল, তাপস দাস (বাপি) সুরঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায় ও তাপস দাস (বাপি) কন্ঠঃ তাপস দাস (বাপি) ও তপেশ বন্দোপাধ্যায় (ভানু) গীটারঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায় ও প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ব্যান্ডঃ মহীনের ঘোড়াগুলো অ্যালবামঃ সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক ভেসে আসে কলকাতা কুয়াশা-তুলিতে আঁকা শহরতলির ভোর মনেপড়ে কাঠচাঁপা আর কৃষ্ণ-চূড়ার শৈশব শুধু খেলা করে স্মৃতির ভেতর ট্রামের ধ্বনি বিবাগী সুর গড়ে এই প্রবাসে ক্যালেন্ডারের পাতাই শুধু ঝরে কলকাতা - ও - কলকাতা গুলতি ছোঁড়া ঘুড়ি ওড়ার অগস্ট দুপুর কে দেবে ফিরে পরবাসের হৃদয় জুড়ে এই অভিমান শুধু ভ'রে স্টীমার ঘাটের ভোঁ কেন আজ আবার উদাস করে ভেসে আসে কলকাতা শুধু কুয়াশার ভোরে কলকাতা - ও - কলকাতা ২। শিরোনামঃ মেরুন সন্ধ্যালোক কথাঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায় ও রঞ্জন ঘোষাল সুরঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায় কন্ঠঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায় সহকারী কন্ঠঃ তাপস, তপেশ, প্রদীপ ও রঞ্জন লীড গীটারঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায় ব্যান্ডঃ মহীনের ঘোড়াগুলো অ্যালবামঃ সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক দিন চলে যায় সন্ধ্যা বেলায় বসে একা উদাস হাওয়ায় যতো ভাবি সুর বন পথ দূর সুবাসী বায়ে, মহুয়া মুকুল বেঁকে গেছে পথ গভীর বনে মাতাল করে বিহন জনে ভেসে আসে গান সাঁঝুলি আলোয় মহুয়া-মেদুর শিমুলিয়া সুর ৩।

শিরোনামঃ সংবিগ্ন পাখিকূল কথাঃ রঞ্জন ঘোষাল সুরঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায় কন্ঠঃ তপেশ বন্দোপাধ্যায় (ভানু) ঐকতানঃ তাপস দাস (বাপি) গীটারঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায় ও প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ব্যান্ডঃ মহীনের ঘোড়াগুলো অ্যালবামঃ সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক রানওয়ে জুড়ে পড়ে আছে শুধু কেউ নেই শূন্যতা আকাশে তখন থমকিয়ে আছে মেঘ বেদনাবিধুর রাডারের অলসতা- কিঞ্চিৎ সুখী পাখীদের সংবেগ এমন বিশাল বন্দরে বহুকাল থামেনি আকাশবিহারী বিমান যান এখানে ওখানে আগাছার জঞ্জাল শূন্য ডাঙায় বায়ু বীতগতিবেগ এমন ছবিতে কিশোরী মানায় ভালো ফ্রকে মুখগুঁজে কাঁদে চুল এলোমেলো চারণ দেখেছে এই ছবিখানি তাই হৃদয়ে জমেছে শূন্যতা উড়ু মেঘ চারণ ভোলেনা এই ছবিখানি তাই বড় মায়া লাগে বড় তার উদ্বেগ আকাশে তখন ঝড় এসে যাবে বলে থমকিয়ে আছে মেঘ ৪। শিরোনামঃ হায় ভালোবাসি কথাঃ রঞ্জন ঘোষাল, তাপস দাস (বাপি) ও তপেশ বন্দোপাধ্যায় (ভানু) সুরঃ তাপস দাস (বাপি) ও তপেশ বন্দোপাধ্যায় (ভানু) কন্ঠঃ তাপস দাস (বাপি) ও তপেশ বন্দোপাধ্যায় (ভানু) কোরাসঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায়, রঞ্জন ঘোষাল, প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বিশু চট্টোপাধ্যায় ব্যান্ডঃ মহীনের ঘোড়াগুলো অ্যালবামঃ সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক ভালোবাসি জ্যোৎস্নায় কাশবনে ছুটতে ছায়া ঘেরা মেঠোপথে ভালোবাসি হাঁটতে দূর পাহাড়ের গায়ে গোধূলীর আলো মেখে কাছে ডাকে ধান খেত সবুজ দিগন্তে তবুও কিছুই যেন ভালো যে লাগেনা কেন উদাসী পথের মাঝে মন পড়ে থাকে যেন কোথায় রয়েছে ভাবি লুকিয়ে বিষাদ তবুও ভালো লাগে ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে ভাসতে প্রজাপতি বুনোহাঁস ভালো লাগে দেখতে জানলার কোণে বসে উদাসী বিকেল দেখে ভালোবাসি একমনে কবিতা পড়তে যখন দেখি ওরা কাজ করে গ্রামে বন্দরে শুধুই ফসল ফলায় ঘাম ঝরায় মাঠে প্রান্তরে তখন ভালোলাগেনা লাগে না কোন কিছু সুদিন কাছে এসো ভালোবাসি একসাথে আজ সব কিছু ভালোবাসি পিকাসো বুনুয়েল দান্তে বিট্‌ল্‌স্‌ ডিলান আর বেথোফেন শুনতে রবিশঙ্কর আর আলি আকবর শুনে ভালোলাগে ভোরে কুয়াশায় ঘরে ফিরতে --------------------------- পরবর্তীতে "মায়া" অ্যালবামে এই গানটি নতুন করে প্রকাশিত হয়। এতে কন্ঠ দেনঃ রাজা/বনি/ঋতুপর্না/গৌতম চট্টোপাধ্যায়। -------------------------------------------------- এ ধরনের আরো তথ্য পেতে আমাদের সাথে যুক্ত হনঃ Bangla Song Lyics FB Page আরো লিরিক্স পেতে ঘুরে আসুনঃ Bangla Song Lyics  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.