ছোটবেলা গোপাল ভাঁড় কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে বুড়োরা তাকে ক্ষেপাত আর হাসত, ‘গোপাল, এর পর তোমার পালা। ’
শুনে গোপালের খুব রাগ হত। বুড়োদের কিভাবে জব্দ করা যায়, সেই পথ খুঁজতে লাগল এবং এক সময় পেয়ে গেল।
শবদাহ আর শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে গিয়ে ঐসব বুড়োদের বলতে লাগল, ‘এর পর তোমার পালা!’
এক বিদেশী পথিক রাত্রে অজানা জায়গায় এসে পড়েছে। তার উপর বৃষ্টি ও ঝড় নামল খুব জোরে।
এই ঘন অন্ধকারে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। এ সময় কোথায় আশ্রয় না নিলে নয়। সে পথের ধারে এক বাড়ির দরজায় বার বার আঘাত করতে লাগল। এ গৃহ-স্বামীটি হচ্ছেন গোপাল। তিনি উপর থেকে জানালা খুলে জিজ্ঞেস করলেন, কে হে বাপু তুমি? এত রাতে কড়া নাড়ানাড়ি করছ কেন?
পথিক।
আজ্ঞে আমি বহুদূর থেকে আসিয়াছি, বিদেশি পথিক।
গোপাল। এখানে আপনার কি চাই?
পথিক। রাত্রিটা এখানে থাকতে চাই মহাশয়।
গোপাল।
তা থাকতে পারো এখানে। তার জন্য আমাকে ডাকবার কোন দরকার ছিল না তো। ওটা সরকারী রাস্তা, যে কেউ ওখানে থাকতে পারে। বাড়ির বাইরের এই আশ্রয়টুকুর জন্য প্রার্থনার কোন প্রয়োজনই বা কী? না না, আমার কোন আপত্তিই নাই। তুমি নিশ্চিন্ত মনে থাকতে পার।
কিন্তু পরে সেই পথিককে আদর করে ঘরে ডেকে নিয়ে খেতে ও আশ্রয় দিয়ে এবং শুকনো কাপর চোপড় দিয়ে তার সেদিন বহু উপকার করে ছিল।
গোপাল একবার গ্রামের মোড়ল হয়েছিল। তো একদিন ভোরবেলায় এক লোক এসে ডাকতে লাগল, ‘গোপাল? গোপাল?’ গোপাল ভাঁড় কোনো উত্তর না দিয়ে শুয়েই রইল। এবার লোকটা চিৎকার করে ডাকতে লাগল, ‘মোড়ল সাহেব, মোড়ল সাহেব। ’ এবারও গোপাল কোনো কথা না বলে মটকা মেরে শুয়ে রইল।
গোপালের বউ ছুটে এসে বলল, ‘কী ব্যাপার, লোকটা মোড়ল সাহেব মোড়ল সাহেব বলে চেঁচিয়ে পড়া মাত করছে, তুমি কিছুই বলছ না!’ গোপাল কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর বলল, ‘আহা, ডাকুক না কিছুক্ষণ, পাড়ার লোকজন জানুক আমি মোড়ল হয়েছি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।